সিকিউরিটি কোম্পানির চাকরির আড়ালে জঙ্গি কার্যক্রম

এ যেন শর্ষের ভেতর ভূত। নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্বে থাকা সিকিউরিটি কোম্পানিতেই জঙ্গি। রাজধানীর গুলশানে সিকিউরিটি কোম্পানিতে চাকরির আড়ালে জঙ্গি সংগঠনের কার্যক্রম চালাচ্ছিলেন মো. মোশারফ হোসেন ওরফে আতিক (১৯)। রূপনগরে অভিযান চালিয়ে নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের মোশারফসহ পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
শুক্রবার (২২ জানুয়ারি) তাদেরকে উগ্রবাদী পুস্তক ও লিফলেটসহ গ্রেপ্তার করা হয়।
র্যাব-৪ এর সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার (এএসপি) মোহাম্মদ সাজেদুল ইসলাম সজল জানান, আড়াই বছর আগে জঙ্গিবাদে জড়ান মো. মোশারফ হোসেন ওরফে আতিক (১৯)। আনসার আল ইসলামের সিদ্ধান্তে তিনি শেরপুর থেকে ঢাকায় আসেন। গত তিন মাস আগে নিজের নাম বদলে রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশানে একটি সিকিউরিটি কোম্পানির চাকরি নেন। আর সেখানেই শুরু করেন নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন ‘আনসার আল ইসলাম’ কার্যক্রম।
জঙ্গি সংগঠনটির অন্যান্যদের সঙ্গে গোপন বৈঠকের পাশাপাশি চাঁদা ও নতুন সদস্য সংগ্রহে তৎপর ছিলেন তিনি। সর্বশেষ রাজধানীর রূপনগরে গোপন বৈঠককালে আরও ৪ জনসহ উগ্রবাদী পুস্তিকা ও লিফলেটসহ গ্রেফতার হন তিনি।
শেরপুরের মো. মোশারফ হোসেন ওরফে আতিক (১৯) ছাড়া বাকি গ্রেপ্তাররা হলেন- পাবনার মো. হাসিবুর রহমান ওরফে সোহেল (২৭), মানিকগঞ্জের রামিম হোসেন ওরফে পনির হোসেন ওরফে নাহিদুর রহমান (২২), সজিব মিয়া ওরফে খিজির (২০) ও চঞ্চল হোসেন ওরফে আব্দুল্লাহ (১৯)।
র্যাব-৪ এর সহকারী পরিচালক (অপস) এএসপি জিয়াউর রহমান চৌধুরী জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তাররা নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন আনসার আল ইসলামের সক্রিয় সদস্য বলে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন ধরনের ১২টি উগ্রবাদী বই, ২৩টি লিফলেট, ১৩৫টি স্ক্রীনশর্টসহ ৬ টি মোবাইল জব্দ করা হয়েছে।
গ্রেপ্তার হাসিবুর রহমান প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানান, তিনি একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। আনসার আল ইসলামের সক্রিয় সদস্য হিসেবে সহযোগীদের সঙ্গে গোপনে অন্যদের উদ্ধুদ্ধকরণে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিলেন। তিনি অনলাইনে উগ্রবাদী মতবাদ প্রচার করেন।
রামিম হোসেন স্থানীয় একটি কলেজের ছাত্র এবং বেশ কিছুদিন ধরে আনসার আল ইসলামের সঙ্গে জড়িত থেকে তাদের নিজস্ব ইলেকট্রনিক গ্রুপে বিভিন্ন সময় উগ্রবাদী কার্যক্রম আপলোড করে। এছাড়া তিনি অনলাইনে বিভিন্ন উগ্রবাদী লেখালেখি, ভিডিও এবং লিফলেট প্রচার করে আসছিলেন।
সজিব মিয়া প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, তিনি স্থানীয় একটি কলেজের ছাত্র। তিনিও দীর্ঘদিন ধরে চাঁদা ও নতুন সদস্য সংগ্রহ করে আসছিলেন।
অপর গ্রেপ্তার চঞ্চল হোসেনও স্থানীয় একটি কলেজের ছাত্র। আনসার আল ইসলামের সক্রিয় সদস্য হিসেবে তিনি ও তার সহযোগীরা গোপনে অন্যদের উদ্ধুদ্ধকরণের জন্যে বিভিন্ন কার্যক্রম চালিয়ে আসছিলেন।
গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা এবং অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত আছে বলে জানান র্যাব-৪ এর এএসপি জিয়াউর রহমান।
জেইউ/এসআরএস/এইচকে