দূষণরোধে ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান শ্রম প্রতিমন্ত্রীর

কেন্দ্রীয় বর্জ্য শোধনাগার পুরোপুরি চালু এবং পরিবেশ দূষণরোধে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণে আরও আন্তরিক হতে চামড়া শিল্পের মালিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান। তিনি বলেন, রপ্তানিমুখী ঐতিহ্যবাহী এ শিল্পের উন্নয়নে সরকার মালিকদের পাশে আছে।
শনিবার (২৩ জানুয়ারি) রাজধানীর বিজয়নগরে পল্টন টাওয়ারে ইআরএফ’র সম্মেলন কক্ষে এক সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ আহ্বান জানান। ‘ট্যানারি শিল্পের শ্রমিকদের ওপর করোনার প্রভাব’ শীর্ষক সংলাপটির আয়োজন করে দ্য এশিয়া ফাউন্ডেশন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, শ্রম আইন অনুযায়ী শ্রমিকদের সুবিধাগুলো নিশ্চিত করে মানসম্পন্ন পণ্য উৎপাদন করে এ শিল্পকে এগিয়ে নিতে হবে। তিনি চামড়া শিল্প নগরীতে শোভন কর্ম-পরিবেশ নিশ্চিতে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মনিটরিং জোরদারের নির্দেশ দেন।
বেগম মন্নুজান সুফিয়ান বলেন, ঐতিহ্যবাহী চামড়া শিল্পের স্থায়ী কাজে শ্রমিকদের স্থায়ীভাবে নিয়োগের ব্যবস্থা করতে হবে। এ শিল্পের উন্নয়নে কারখানাগুলোকে কমপ্লায়েন্স করতে হবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, শুধু ট্যানারি শিল্পই নয়, সব খাতের বিশাল এ শ্রমজীবী মেহনতি মানুষকে বাঁচাতে, অর্থনীতি এবং দেশকে রক্ষায় মহামারির শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী হাসিনা সময়োপযোগী এবং দৃঢ় পদক্ষেপ নিয়েছেন। এর ফলে সরকার শ্রমিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করে গার্মেন্টসসহ সব কল-কারখানায় উৎপাদন স্বাভাবিক রাখতে ও অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে সক্ষম হয়েছে।
করোনা মহামারির শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গার্মেন্টস শ্রমিকসহ ক্ষতিগ্রস্ত জনগণের উপর কোভিড-১৯ এর প্রভাব হ্রাস করার জন্য ৩১ দফা নির্দেশনা জারি এবং পুনরুদ্ধার প্যাকেজ ঘোষণার বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক, চামড়াজাত পণ্য ও পাদুকা শিল্পের অনেক শ্রমিক কর্মহীন হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিক প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ সরকার, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ফেডারেল জার্মান সরকার অর্থায়নে এসব শ্রমিকদের জন্য সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমের আওতায় নগদ সহায়তা প্রদান কার্যক্রম শুরু করেছি।
গতমাসে এ কর্মসূচির আওতায় গার্মেন্টস এবং ট্যানারি শিল্পের মোট ৩ হাজার ২৬৬ জন শ্রমিকের মধ্যে প্রত্যেককে সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসের জন্য ৬ হাজার টাকা করে নগদ আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। প্রতিমন্ত্রী বলেন, এরমধ্যে শুধু ট্যানারি শিল্পের মোট ২২০ জন শ্রমিককে এ সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এ কার্যক্রম চলমান থাকবে।
উন্নত কর্ম-পরিবেশে চামড়া শিল্পের দক্ষ শ্রমিকদের দিয়ে মানসম্পন্ন পণ্য উৎপাদনের ব্যবস্থা করলে চামড়ার আমদানি নির্ভরতা কমবে বলেও এ সময় মত প্রকাশ করেন প্রতিমন্ত্রী।
সংলাপে স্বাগত বক্তব্য রাখেন- দ্যা এশিয়া ফাউন্ডেশনের কান্ট্রি ডিরেক্টর কাজী ফয়সাল বিন সিরাজ। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. এম আবু ইউসুফ।
সংলাপে আরও অংশ নেন- বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএ) এর চেয়ারম্যান মো. শাহীন আহমদ, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রে সাধারণ সম্পাদক ডা. ওয়াজেদুল ইসলাম খান, আইএলও এর দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চল ডেস্কটপ ওয়ার্ক টিম এবং শ্রমিকদের অধিকার, কল্যাণ সুরক্ষা বিষয়ে বিশেষজ্ঞ সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদ, এনসিসিডাব্লুইয়ের সদস্য সচিব নাইমুল আহসান জুয়েল।
এসএইচআর/এমএইচএস