চসিক নির্বাচনে ভারসাম্য সৃষ্টিই বড় চ্যালেঞ্জ : মাহবুব তালুকদার

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচনে পক্ষ-বিপক্ষের ভারসাম্য সৃষ্টিই বড় চ্যালেঞ্জ। এ নির্বাচন কমিশনের নিয়ন্ত্রণে থাকা অপরিহার্য, নইলে তা ভণ্ডুল হয়ে যাবে।
সোমবার (২৫ জানুয়ারি) নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে ইসির এ জ্যেষ্ঠ কমিশনার লিখিত বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন বর্তমান কমিশনের কার্যকালের অবশিষ্ট সময়ে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন। এ নির্বাচনকে ঘিরে সহিংসতার শঙ্কা ও উদ্বেগ থাকার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। পরিবেশ সুষ্ঠু না হলে অবাধ নিরপেক্ষ আইনানুগ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয় এবং নির্বাচনের পূর্বশর্ত লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের ধারণাও অবান্তর হয়ে যায়। তাই সুষ্ঠু নির্বাচন দল ও মত নির্বিশেষে সবার জন্য দেশপ্রেমের অগ্নিপরীক্ষা।
মাহবুব তালুকদার বলেন, নির্বাচন গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার একমাত্র অবলম্বন। ভোট হচ্ছে স্বাধীন দেশে জনগণের সার্বভৌমত্বের প্রতীক, একটি পবিত্র আমানত। এর মাধ্যমে জনগণের আশা-আকাঙ্খা প্রতিফলিত হয়। নির্বাচন ভূলুণ্ঠিত হলে গণতন্ত্রও ভুলুণ্ঠিত হয়ে যায়। আমরা যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলি, তার নির্যাস হচ্ছে গণতন্ত্র। ক্ষমতার স্বাভাবিক হস্তান্তর হচ্ছে এর মূল লক্ষ্য। তবে ভোটের মাধ্যমে সত্যিকার জনপ্রতিনিধি যাতে নির্বাচিত হন, সেটি নিশ্চিত করতে হবে।
আমি আশা করি, এ গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনে ভোটার, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, নির্বাচন কাজে নিয়োজিত সব অংশীজন প্রত্যেকেই নিরপেক্ষভাবে দায়িত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে জাতি হিসেবে আমাদের আত্মমর্যাদা সমুন্নত রাখবেন। একই সঙ্গে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট দিতে ব্যাপক অংশগ্রহণ করবেন। এজন্য বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের আইনানুগভাবে অবশ্যই প্রতিহত করতে হবে। আমরা জনগণের মনে নির্বাচনের প্রতি আস্থা সৃষ্টি ও তাদের উদ্বুদ্ধ করে গণতন্ত্রের অভিযাত্রায় সামিল হতে চাই।
নির্বাচনে সহিংসতার আশঙ্কা করছেন কিনা এমন প্রশ্নে মাহবুব তালুকদার বলেন, আপনারা জানেন এ নির্বাচন উপলক্ষে দুটি প্রাণহানি ঘটেছে এজন্যই সহিংসতার আশঙ্কা। আমি আগে বলেছি, এখনও বলি, যেকোন নির্বাচনের চেয়ে জীবনের মূল্য অনেক বেশি। সুতরাং, যেখানে প্রাণহানি ঘটে, পত্রিকায়ও দেখতে পেলাম কিছুতে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছে, যেখান থেকেই সহিংসতার আশঙ্কা থেকেই যায়। তবে আমরা আশা করবো নির্বাচনের দিন অবাধ, সুষ্ঠু এবং সুন্দর পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
নির্বাচন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচন তো নির্বাচন কমিশন সরাসরি করে না। নির্বাচন করেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, রিটার্নিং অফিসার, সহকারী রিটার্নিং অফিসার এবং অন্যান্য অংশীজনরা। ফলে নির্বাচন কাজে যারা অংশগ্রহণ করেছেন, তাদের প্রত্যেকের ওপরই আমদের নির্ভরশীল থাকতে হয়। সেই নির্ভরশীলতায় আমরা চেষ্টা করি, তারা যেন আমাদের নির্ভরশীলতাকে যথাযথভাবে গুরুত্ব দিয়ে একটা শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করেন।
যেকোন ঘটনার দায় কি ইসি এড়াতে পারে? এমন প্রশ্নে এ কমিশনার বলেন, কোন ঘটনার দায় ইসি এড়াতে পারে না। সেজন্যই তো ইসিকে এতো সতর্কতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে হয়। নির্বাচন কমিশন সামগ্রিক নির্বাচন পরিচালনার কেন্দ্রবিন্দু। কিন্তু নির্বাচন কমিশনকে বিভিন্ন অংশীদার যারা নির্বাচন পরিচালনা করেন, তাদের মুখাপেক্ষি হয়ে কাজটা করতে হয়। এজন্য নির্বাচন কেন্দ্রিক যেকোন ঘটনাই ইসির ওপর এসে পড়ে।
এসআর/এসএম