তিস্তা চুক্তি নিয়ে আবারও ভারতকে বাংলাদেশের অনুরোধ

দীর্ঘদিন ঝুলে থাকা তিস্তা চুক্তি সমাধানের বিষয়ে আবারও নয়া দিল্লির দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে ঢাকা। জবাবে নয়া দিল্লি ঢাকাকে আগের মতো চুক্তি সমাধানে আশ্বস্ত করেছে।
শুক্রবার (২৯ জানুয়ারি) ভারতের হায়দ্রারাবাদ হাউজে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন ও ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলার নেতৃত্বে দুই দেশের ফরেন অফিস কনসালটেশন (এফওসি) শীর্ষক বৈঠক হয়। এ সময় ঢাকা তিস্তা চুক্তি সমাধানে নয়াদিল্লিকে অনুরোধ করে ঢাকা।
ভারতের পক্ষ থেকে তিস্তার বিষয়ে জানানো হয়, তিস্তা চুক্তি সমাধানের চিন্তা করা হচ্ছে। তবে ছয়টি অভিন্ন নদীর সমাধানের বিষয়ে প্রথম গুরত্ব দেওয়া হচ্ছে।
বিদায়ী বছরের শেষের দিকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভার্চুয়াল আলোচনায় তিস্তা ইস্যু নিয়ে আগের মতো আশ্বাস দেয় নয়াদিল্লি। তবে তিস্তা সমাধান না করতে পারায় শেখ হাসিনার কাছে লজ্জা প্রকাশ করেন মোদি।

প্রায় এক দশক আগে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের ঢাকা সফরের সময় বহুল প্রতীক্ষিত তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি হওয়ার কথা থাকলেও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরোধিতায় তা আটকে যায়। নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার ভারতের ক্ষমতায় আসার পর তিস্তা চুক্তি নিয়ে আশার কথা কথা শোনা গেলেও মমতার মত বদলায়নি। ফলে বিজেপি সরকারের ইচ্ছা সত্ত্বেও এ চুক্তি হচ্ছে না।
বৈঠক নিয়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, উভয়পক্ষ সীমান্ত হত্যা শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনার বিষয়ে একমত পোষণ করেছে।
এদিকে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বৈঠকের আলোচনায় ২০২১ সালের মার্চে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরের প্রস্তুতি এবং দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের ৫০ বছর পূর্তির কর্মসূচি ঠিক করার বিষয় গুরুত্ব পেয়েছে।
বাংলাদেশ ও ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, দ্বিপক্ষীয় উন্নয়ন সহযোগিতার ক্ষেত্রে ভারতের ঋণ চুক্তির (এলওসি) দ্রুত বাস্তবায়নের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেছে উভয়পক্ষ। একইসঙ্গে উন্নয়ন অংশীদারিত্ব মেকানিজমের কার্যক্রম শুরুর ব্যাপারে সন্তোষ প্রকাশ করে তহবিলের ব্যবহার বাড়ানো এবং অনুমোদন প্রক্রিয়া দ্রুত করার ওপর গুরুত্ব দিয়েছে উভয়পক্ষ।
বৈঠকে উভয়পক্ষরে আলোচনায় কোভিড-১৯ মোকাবিলায় সহযোগিতা, বাণিজ্য, যোগাযোগ, উন্নয়ন অংশীদারিত্ব, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও পানি সম্পদ, আঞ্চলিক ও বহুপাক্ষিক সহযোগিতার পাশাপাশি সীমান্ত ব্যবস্থাপনা এবং নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা সহযোগিতার বিষয় উঠে আসে।
বৈঠকে ঢাকার পক্ষ থেকে কক্সবাজারে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন শুরুর জন্য একটি পরিবেশ তৈরির বিষয়ে নয়াদিল্লিকে অনুরোধ করা হয়।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন টিকায় সহযোগিতার জন্য ভারতকে ধন্যবাদ জানান।
এনআই/এসএম