‘ক্যাডেট কলেজ আদলে বিভাগীয় শহরে হবে ৮ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান’

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম বলেছেন, আমারা যারা পুলিশে চাকরি করি তাদের জন্য একটি জটিল সমস্যা হলো সন্তানদের লেখাপড়া। কারণ, যেকোনো সময় আমাদের বদলি হতে পারে। তাই তাদের লেখাপড়ার যাতে কোনো ক্ষতি না হয় সেজন্য ক্যাডেট কলেজের আদলে বিভাগীয় শহরগুলোতে ৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৈরির উদ্যোগ নিচ্ছেন আইজিপি।
শনিবার (৩০ জানুয়ারি) বেলা ১১টায় রাজারবাগ পুলিশ অডিটোরিয়ামে মেধাবী শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষাবৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। অনুষ্ঠানে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ পরিবারের সন্তানদের উচ্চশিক্ষা লাভে উদ্বুদ্ধ করতে ৯১৫ শিক্ষার্থীর মধ্যে শিক্ষা বৃত্তি-২০২০ প্রদান করা হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ডিএমপি পরিবারের জন্য আজকের দিনটি অনেক আনন্দের। এ বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠান আমাদের সন্তানদের লেখাপড়ার ক্ষেত্রে অনুপ্রাণিত ও উৎসাহিত করবে। আমরা তাদের মাঝে একটি সুস্থ প্রতিযোগিতা তৈরি করতে চাই। যাতে তারা মানুষের মত মানুষ হতে পারে। অবস্থা পরিবর্তনের একমাত্র হাতিয়ার শিক্ষা। শিক্ষাই সবার মধ্যে পার্থক্য তৈরি করে। সফলতার জন্য শর্টকাট কোনো রাস্তা নেই। যারা পড়ালেখায় ফাঁকিবাজি করবে তাদের জীবনও ফাঁকিবাজিতে পড়ে যাবে।
বৃত্তি পাওয়া শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, তোমরা আজকে যারা সাফল্য পেয়েছো তা যথেষ্ট নয়। সামনে তোমাদের জন্য তীব্র প্রতিযোগিতা অপেক্ষা করছে। তার প্রস্তুতি তোমাদের এখন থেকেই নিতে হবে। শুধু পুস্তকের লেখাপড়াতেই কাঙ্ক্ষিত সাফল্য পাওয়া যাবে না। দেশ, দেশের স্বাধীনতা, মূল্যবোধ, সারাবিশ্ব সম্পর্কে তোমাদের ধারণা রাখতে হবে। দেশ ও দেশের মানুষের মঙ্গলের ব্রত তোমাদের মননে থাকতে হবে। দেশ যদি এগিয়ে যায় তাহলে আমরাও এগিয়ে যাবো। কখনও পিতা-মাতার মনের কষ্টের কারণ হইও না। কারণ, তারা নিজেদের সর্বোচ্চ দিয়ে তোমাদের মানুষ করেছে। তাদের ত্যাগ, তাদের পরিশ্রমকে কখনো অবমূল্যায়ন করবে না।
তিনি বলেন, মাদকাসক্ত ও জঙ্গিবাদ থেকে দূরে থাকতে হবে। যারা মাদকাসক্ত হয় তাদের অধিকাংশই বন্ধু-বান্ধব দ্বারা প্রভাবিত হয়। তাই বন্ধু-বান্ধব নির্বাচন করার আগে সতর্ক থাকতে হবে।
পিইসি, জেএসসি, এসএসসি, ও-লেভেল, উচ্চ শিক্ষাবৃত্তি ও শিক্ষা সহায়তা বৃত্তি প্রাপ্ত ৯১৫ জনকে এ পুরস্কার দেওয়া হয়। পুরস্কারপ্রাপ্তদের মাঝে মোট ৮৫ লাখ ৭৭ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়। করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে আয়োজনটি সামাজিক দূরত্ব মেনে অনুষ্ঠিত হয়। যার ফলে সবার উপস্থিতি নিশ্চিত করা যায়নি।
পুরস্কারপ্রাপ্ত ৯১৫ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে পিইসি থেকে ২২ জন, জেএসসি থেকে ২০ জন, এসএসসি থেকে ২০ জন, ও-লেভেল থেকে ১ জন, উচ্চ শিক্ষাবৃত্তি থেকে ২১, শিক্ষা সহায়তা হিসেবে ১৯ জন মেধাবী শিক্ষার্থীকে নিজ হাতে পুরস্কার তুলে দেন ডিএমপি কমিশনার।
এ সময় ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (সিটিটিসি) মো. মনিরুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন) মীর রেজাউল আলম, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস্) কৃষ্ণপদ রায়, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) এ কে এম হাফিজ আক্তার, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মুনিবুর রহমান, ডিএমপির যুগ্ম পুলিশ কমিশনাররাসহ বিভিন্ন পর্যায়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
জেইউ/এমএইচএস