শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা
শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে সর্বসাধারণ শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন। সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে উৎখাত করার প্রত্যয়ে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণ করছে জাতি।
মঙ্গলবার (১৪ ডিসেম্বর) শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মৃতির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাতে সর্বস্তরের মানুষের ঢল নামে মিরপুরের বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে। ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে আসতে শুরু করে। এর আগে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
সকাল থেকেই ক্ষমতাসীন দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা স্লোগানে স্লোগানে মিছিল নিয়ে হেঁটে শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাতে উপস্থিত হন। আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগের নেতাকর্মীরা শহীদ বুদ্ধিজীবীদের বেদিতে ফুলেল শ্রদ্ধা জানান।
সরেজমিনে দেখা যায়, শ্রদ্ধা জানাতে আসা বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীদের স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠেছে বুদ্ধিজীবী কবরস্থান এলাকা। উচ্চারিত হচ্ছে - শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে ভয় করি না মরণে/পাকিস্তানের প্রেতাত্মা, পাকিস্তানে চলে যা/বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য বাংলাদেশের ঐতিহ্য/মৌলবাদী শক্তি হুঁশিয়ার, সাবধান/বঙ্গবন্ধুর বাংলায় মৌলবাদের ঠাঁই নাই।
১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। এদিন বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার বুদ্ধিজীবীদের পাক হানাদার বাহিনীর নেতৃত্বে এ দেশীয় রাজাকার, আল-বদর, আল-শামস বাহিনী নির্মম পৈশাচিকতা চালিয়ে হত্যা করে। প্রতি বছর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়।
অন্যদিকে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে আওয়ামী লীগ। প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস স্বাস্থ্যবিধি মেনে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করছে দলটি।
ইতিহাস থেকে এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ানে জানা যায়, স্বাধীন বাংলাদেশের সম্ভাবনা ও নতুন রাষ্ট্রকে মেধাশূন্য করার ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বাংলাদেশের মেধাবী বুদ্ধিজীবীদের চোখ বেঁধে ধরে নিয়ে পৈশাচিকভাবে হত্যাযজ্ঞ চালায়। বাঙালি জাতি যাতে একটি স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে সেই ষড়যন্ত্রের ধারাবাহিকতায় বাঙালির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের তালিকা করে হত্যা করা হয়। কিন্তু বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক জাগরণের মাধ্যমে স্বাধীনতার মন্ত্রে উজ্জীবিত হয় বাঙালি জাতি। অনেক ত্যাগ-তিতিক্ষা আত্মদান ও দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের পথ পরিক্রমায় ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত হয় বাংলাদেশের স্বাধীনতা। স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রতিটি ক্ষেত্রে এ দেশের কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, শিক্ষক, প্রকৌশলী, চিকিৎসক, চিত্রশিল্পী, সংগীত শিল্পী, চলচ্চিত্রকার বুদ্ধিজীবীদের অপরিসীম অবদান রয়েছে।
এসআর/এসএসএইচ