মিয়ানমারে শান্তি চায় বাংলাদেশ

রাজনৈতিক ক্ষমতাকে কেন্দ্র করে মিয়ানমারে সৃষ্ট সেনা অভ্যুত্থানের পরিস্থিতিতে প্রতিবেশী দেশটিতে সহসাই শান্তি ও স্থিতিশীলতা দেখতে চায় বাংলাদেশ। সোমবার (১ ফেব্রুয়ারি) মিয়ানমারের পরিস্থিতি নিয়ে এক বিবৃতিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বাংলাদেশ সরকারের এ অবস্থানের কথা জানায়।
বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশ দৃঢ়ভাবে গণতান্ত্রিক নীতি মেনে চলায় বিশ্বাস করে। বাংলাদেশ চায়, মিয়ানমার গণতান্ত্রিক উপায়ে সাংবিধানিক নিয়ম সমুন্নত রাখুক।
মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) নেত্রী অং সান সু চিসহ দলটির অন্যান্য জ্যেষ্ঠ নেতাদের গ্রেপ্তার করেছে দেশটির সেনাবাহিনী। এ ঘটনায় দেশটিতে সেনা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থা জারির ঘোষণাও এসেছে।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ইস্যুতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, মিয়ানমারের সঙ্গে সম্পর্ক বিকাশে অবিচল বাংলাদেশ কক্সবাজারে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায়, নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবাসনে দেশটির সঙ্গে কাজ করতে চায়। বাংলাদেশ আশা করছে, এই প্রক্রিয়ায় দেশটির সঙ্গে যে আন্তরিকতা তা চলমান থাকুক।
গত কয়েক দিন ধরেই মিয়ানমারে বেসামরিক সরকার ও ক্ষমতাধর সেনাবাহিনীর মধ্যে টান টান উত্তেজনা চলছিল। সেনাবাহিনী আগে থেকেই অভিযোগ করছিল, গত নির্বাচনে জালিয়াতি করে ক্ষমতায় এসেছে এনএলডি।
অবশেষে এই টান টান উত্তেজনার মধ্যে আজ সোমবার ভোরে মিয়ানমার সেনাবাহিনী অং সান সু চি ও জ্যেষ্ঠ রাজনীতিবিদদের গ্রেপ্তার করে। এ ঘটনায় দেশটিতে সেনা অভ্যুত্থানের আশঙ্কা ছড়িয়ে পড়ে। পরে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সু চি সরকারকে হটানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে সেনাবাহিনী। তারা দেশটিতে এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থা জারির ঘোষণা দেয়।
গত ৮ নভেম্বর জাতীয় নির্বাচনে সু চির দল এনএলডি বড় জয় পায়। পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য যেখানে ৩২২টি আসনই যথেষ্ট, সেখানে এনএলডি পেয়েছে ৩৪৬টি আসন। কিন্তু সেনাবাহিনী সমর্থিত দল ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (ইউএসডিপি) ভোটে প্রতারণার অভিযোগ তুলে ফলাফল মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানায়। দলটি নতুন করে নির্বাচন আয়োজনের দাবি তোলে।
এদিকে সু চিসহ দলটির অন্য জ্যেষ্ঠ নেতাদের ছেড়ে দিতে আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্র সতর্ক করে বলেছে, সু চিসহ অন্যদের ছেড়ে না দিলে মিয়ানমারের দায়ী কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সু চির আটকের ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।
এনআই/এইচকে