আতশবাজি-ফানুসে বর্ণিল ঢাকার আকাশ

২০২১ সালের বিদায়, ২০২২ সালের আগমন। এই বিদায় আর আগমনকে স্বাগত ও উদযাপন করতে মধ্যরাতে পুরো এক ঘণ্টা সময় যেন রাজধানীর আকাশ আলোয় আলোকিত হয়ে উঠেছিল। আতশবাজির বর্ণিল আলোকছটার সঙ্গে রঙ-বেরঙের ফানুস উৎসবে যেন নতুন মাত্রা যোগ করেছিল। সবমিলিয়ে করোনা মহামারির কারণে দীর্ঘদিন থমকে থাকা জীবনে যেন প্রাণের ছোঁয়া দিয়ে গেলো ২০২২ সালের প্রথম ক্ষণটি।
শুক্রবার (৩১ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত বারোটা বাজার পূর্ব মুহূর্ত থেকেই রাজধানীর প্রায় প্রতিটি বাড়ির ছাদ থেকে ওড়ানো শুরু হয় ফানুস। একইসঙ্গে ছড়িয়ে দেওয়া হয় আতশবাজির রঙ। আর ঘড়ির কাটা ১২টার ঘর ছুঁতেই তাতে লেগে যায় আনন্দের ঢেউ।
রাত বারোটা থেকে একটা পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, লাল-সবুজ-হলুদ-কমলা রঙের আতশবাজিতে মাতোয়ারা হয়ে ওঠে নগরের উৎসব প্রিয় মানুষগুলো। আকাশ ছেয়ে যায় বর্ণিল আলোর আলোকছটায়।
হাতিরঝিল এলাকায় দেখা যায়, রাত সাড়ে ১১টা থেকেই আলোয় আলোকিত হতে থাকে হাতিরঝিল এলাকার আকাশ। একের পর এক প্রায় সহস্রাধিক আতশবাজি ফোটানো হয়। একইসঙ্গে উড়িয়ে দেওয়া হয় নানা রঙের ১০০ থেকে ১৫০টি দৃষ্টিনন্দন ফানুস। এ সময় রঙিন আলোয় আলোকিত হয় পুরো এলাকা।
কিশোরগঞ্জ থেকে এসে রাজধানী ঢাকায় বর্ষবরণ উৎসবে যোগ দেওয়া তানজিয়া শারমিন ইভা অনুভূতি জানতে গিয়ে ঢাকা পোস্টকে বলেন, জেলা শহরগুলোতে বর্ষবরণের আয়োজনটা অনেকটা স্বল্প পরিসরেই হয়ে থাকে। তবে ঢাকার আয়োজনটা একটু ভিন্ন। যদিও বাসার ছাদ থেকেই উদযাপন করতে হয়েছে, তবুও বেশ ভালো লেগেছে। অনেকদিন পর এমন আতশবাজি আর ফানুস দেখে খুব ভাল লাগছে। আশা করছি, নতুন বছরটাও অনেক ভাল কাটবে।
শুধু তানজিয়া ইভাই নয়, নতুন বছরের এমন উৎসবে আনন্দের ঢেউ লেগেছে সকলের মনেই। রাজধানীর হাতিরঝিল এলাকার বাসিন্দা মারুফুর রহমান নামের আরেক জনের সঙ্গে কথা বললে তিনি বলেন, করোনার জন্য তো দীর্ঘদিন থমকে আছে আমাদের জীবন। কোনো উৎসবও সেভাবে নেই। তাই ছোট পরিসরেই বন্ধুরা মিলে বাড়ির ছাদ থেকে ফানুস ওড়ানো আর কিছু আতশবাজির ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এদিকে বৃহস্পতিবার (৩০ ডিসেম্বর) ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বর্ষবরণকে ঘিরে থার্টি ফার্স্ট নাইটে আতশবাজি, পটকাবাজি, অশোভন আচরণ, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটায় এমন কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। এছাড়া উন্মুক্ত স্থানে কোনো অনুষ্ঠানের আয়োজন না করতে অনুরোধ জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে বিভিন্ন দেশে সব অনুষ্ঠান সীমিত আকারে পালন করা হচ্ছে। ইংরেজি নববর্ষ বরণ উপলক্ষে থার্টি ফার্স্ট নাইটে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত আকারে নির্ধারিত অনুষ্ঠান উদযাপন করতে নগরবাসীর প্রতি অনুরোধ করা হচ্ছে।
টিআই/আইএসএইচ