‘চলচ্চিত্রে পুলিশের কার্যক্রমকে শৈল্পিকভাবে চিত্রায়িত করুন’

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেছেন, ‘সংস্কৃতি একটা জাতির বা সমাজের চলার পথে দর্পণ হিসেবে কাজ করে। চলচ্চিত্রে পুলিশের কার্যক্রমকে শৈল্পিকভাবে চিত্রায়িত করুন। যেন চলচ্চিত্র দেখে মানুষের মনে পুলিশ সম্পর্কে বিরূপ কোনো ধারণা সৃষ্টি না হয়।’
বুধবার (৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ডিএমপি সদরদপ্তরে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক, পরিচালক ও শিল্পীগোষ্ঠীর নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
প্রযোজক, পরিচালক ও শিল্পীগোষ্ঠী নেতাদের শুভেচ্ছা জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘আপনারা সবসময় পুলিশের বাস্তবসম্মত কাজের চিত্র দর্শকদের কাছে সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলবেন। সমাজ পরিবর্তনে পুলিশ যে ভূমিকা রাখছে, তা চলচ্চিত্রে চিত্রায়নের মাধ্যমে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে আপনাদের।’
তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতা যুদ্ধে পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রথম প্রতিরোধ যুদ্ধ শুরু করেছিল বাংলাদেশ পুলিশ। এ যুদ্ধে পুলিশের অনেক সদস্য দেশপ্রেমের টানে শাহাদাৎবরণ করেন। পুলিশের এই আত্মত্যাগের চিত্র চলচ্চিত্রে উপস্থাপন করা হয় না, যার ফলে বিষয়টি জনগণের কাছে সঠিকভাবে পৌঁছায়নি।’ এই বিষয়গুলো চলচ্চিত্রের মাধ্যমে জনগণের কাছে তুলে ধরার অনুরোধ জানান তিনি।
‘নবাব এলএলবি’ সিনেমার ভিডিও ভাইরাল হওয়ার বিষয়ে কমিশনার বলেন, ‘ভিডিওতে পুলিশের কার্যক্রমকে যেভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে, যা বাস্তবসম্মত নয়। উক্ত ভিডিওচিত্রে পুলিশের কার্যক্রম দেখলে থানায় পুলিশের কাছে সহায়তার জন্য যেতে নিরুৎসাহিত হবেন নারীরা। আপনারা জানেন, প্রতিটি থানায় নির্যাতনের শিকারদের জন্য নারী সহায়তা ডেস্ক রয়েছে। যেখানে ২৪ ঘণ্টা পুলিশের নারী সদস্যরা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। চলচ্চিত্রের মাধ্যমে সমাজকে যে সংবাদটি দিচ্ছেন তা সমাজের কাছে গ্রহণযোগ্য হতে হবে। আমাদের কাজগুলো নীতিগতভাবে বা শৈল্পিক দৃষ্টিতে উপস্থাপন করুন। হিংস্র বা অবাস্তব কোনো বিষয় উপস্থাপন করা থেকে বিরত থাকুন। এ ধরনের বিষয় সমাজকে কলুষিত করে।’
তিনি বলেন, ‘আপনি যখন রাতে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে নিরাপদে ঘুমাচ্ছেন তখন আমরা সংসার পরিজন ছেড়ে আপনাদের নিরাপত্তা দিতে নিরলসভাবে পরিশ্রম করে যাচ্ছি। রমজানে আপনারা যখন পরিবারের সঙ্গে ইফতার করার জন্য বাসার উদ্দেশে রওনা হন, তখন আমরা রাস্তায় আপনাদের চলাচল নির্বিঘ্ন করতে কাজ করি। আর এ কাজ করতে গিয়ে আমাদেরকে রাস্তায় দাঁড়িয়ে ইফতার করতে হয়। মনে রাখবেন, যেকোনো দুর্দিনে আমরা সর্বদা আপনাদের পাশে আছি। আমরা কখনও চাই না আপনারা ভয়ভীতি নিয়ে কাজ করেন। সবসময় সত্য প্রচারে নির্ভয় থাকবেন।’
সভায় ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (সিটিটিসি) মো. মনিরুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন) মীর রেজাউল আলম, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) কৃষ্ণপদ রায়, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) এ কে এম হাফিজ আক্তার, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো. মুনিবুর রহমান, ডিএমপির যুগ্ম পুলিশ কমিশনাররাসহ বিভিন্ন পর্যায়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার, সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম খোকনসহ সালাউদ্দিন লাভলু, ইরেশ জাকের, তানভীন সুইটি, তানিয়া আহমেদ, মুনিরা ইউসুফ মেমী ও অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
জেইউ/এফআর