নিষিদ্ধ আল্লাহর দলের সেকেন্ড ইন কমান্ডসহ গ্রেপ্তার ৫

নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আল্লাহর দলের সেকেন্ড ইন কমান্ডসহ (সহ অধিনায়ক) পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে অ্যান্টি টেররিজম ইউনিট (এটিইউ)। অভিযান চালিয়ে বুধবার (৩ ফেব্রুয়ারি) রাতে ফার্মগেট তেজতুরী বাজার এলাকার প্যাসিফিক হোমস টাওয়ারের নিচতলা থেকে ও মোহাম্মদপুর কাটাসুর এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
অ্যান্টি টেররিজম ইউনিটের পুলিশ সুপার (মিডিয়া অ্যান্ড অ্যাওয়ারনেস) মোহাম্মদ আসলাম খান জানান, গতকাল রাতে প্রথমে ফার্মগেট তেজতুরী বাজারস্থ প্যাসিফিক হোমস টাওয়ারের নিচতলা থেকে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আল্লাহর দলের সেকেন্ড ইন কমান্ড শেখ কামাল হোসেন ও আল্লাহর দলের নির্বাহী, মামলা ও কারা দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্য মো. সোহেল রানাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পরে তাদের তথ্যের ভিত্তিতে ওই রাতেই মোহাম্মদপুর থানাধীন কাটাসুর এলাকার শেরে বাংলা রোড থেকে আরও তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা হলেন- আল্লাহর দলের বিভাগীয় নায়ক রবি আহমেদ পাপ্পু (২৮), আল্লাহর দলের দাওয়াহ্ দপ্তরের প্রধান খালেকুজ্জামান (৩৭) এবং আল্লাহর দলের নির্বাহী, মামলা ও কারা দপ্তরের সহযোগী মনিরুজ্জামান ওরফে মিলন (৪২)। এ সময় তাদের কাছ থেকে ১২টি মোবাইল, ভিসা কার্ড ও কারাবন্দিদের টাকা প্রদানের স্লিপ ও নগদ ৩৭ হাজার টাকা জব্দ করা হয়।
গ্রেপ্তারদের মধ্যে শেখ কামাল হোসেন ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে আল্লাহর দলের সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। তিনি ২০০৪ সালে আল্লাহর দলের প্রধান মতিন মেহেদীর নিকট শপথ গ্রহণ করেন। ২০০৫ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত খুলনা জেলায়, ২০০৯ সাল থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত গাইবান্ধা জেলায় এবং ২০১৩ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত তিনি কেন্দ্রের বিভিন্ন পদে দায়িত্বে ছিলেন।
গ্রেপ্তার মো. খালেকুজ্জামান ২০০০ সালে মতিন মেহেদীর মাধ্যমে আল্লাহর দলে যোগদান করেন। তিনি ২০০০ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত পাবনা জেলায়, ২০১৭ সাল ঢাকা জেলার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে তিনি কেন্দ্রের দাওয়াহ্ দপ্তরের প্রধান হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন।
অপর গ্রেপ্তার হওয়া মো. মনিরুজ্জামান মিলন আল্লাহর দল প্রধান মতিন মেহেদীর ভাগ্নে। ১৯৯৯ সাল থেকে সে মতিন মেহেদীর একান্ত সহযোগী হিসেবে আল্লাহর দলের বিভিন্ন দায়িত্বে ছিলেন।
গ্রেপ্তার সোহেল রানা ২০১৮ সালে আল্লাহর দলে যোগদান করেন। সে আল্লাহর দলের গ্রেপ্তারদের আদালতে মামলা বিষয়াবলী দেখাশোনা, কারাবন্দি ও তাদের আত্বীয়দের সঙ্গে যোগাযোগপূর্বক সহযোগীতায় নিয়োজিত ছিলেন। গ্রেপ্তার হওয়া রবি আহাম্মেদ পাপ্পু ২০১৮ সালে আল্লাহর দলে যোগদান করেন। তিনি ২০১৯ সাল থেকে গাজীপুর জেলায় বিভাগীয় নায়েক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
উল্লেখ্য, গ্রেপ্তার হওয়া সদস্যরা দেশের বর্তমান নির্বাচনী ও ভোটাধিকার ব্যবস্থা বিশ্বাস করে না এবং সকল রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণের মাধ্যমে নির্বাচিত গণতান্ত্রিক সরকারকে তারা শয়তানের দল বলে অভিহিত করে। তারা দেশের সংবিধান ও জাতীয় সংসদকে স্বীকার করে না। তারা নিজেরা ভোটাধিকার প্রয়োগ করে না এবং অন্যকেও ভোটাধিকার প্রদানে নিরুৎসাহিত করে। তারা নারী নেতৃত্বে বিশ্বাস করে না এবং প্রচলিত যাকাত ব্যবস্থাকে অস্বীকার করে, তাদের মতাদর্শের সদস্যের নিকট থেকে মাসিক ভিত্তিতে চাঁদা উত্তোলন করে দেশ ও রাষ্ট্র বিরোধী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে।
গ্রেপ্তার হওয়ারা মানুষের ধর্মীয় বিশ্বাসকে পুঁজি করে ধর্মের অপব্যাখ্যার মাধ্যমে সদস্য সংগ্রহ ও চাঁদা আদায়ের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। তাদের বিরুদ্ধে তেজগাঁও থানায় সস্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
জেইউ/এমএইচএস