দুর্ঘটনা নয়, মায়ের দাবি হত্যা

গত বছরের ১৪ আগস্ট বিকেল রাজধানীর হাতিরঝিল এলাকায় ধলপুর কিন্ডার গার্ডেন হাইস্কুলে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী মাহমুদা আক্তার বিথি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আহত হন। পরে ১৬ আগস্ট চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে মারা যায়। ঘটনার পর থেকেই বিথির মা রওশন আরা অভিযোগ করে আসছেন তার মেয়েকে মোটরসাইকেল থেকে ইচ্ছাকৃতভাবে ধাক্কা দিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) সকালে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশন মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আমার মেয়ে দুর্ঘটনায় মারা যায়নি, তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের বিচার চাই।’
রওশন আরা বলেন, আমার মেয়ে ধলপুর কিন্ডার গার্ডেন হাইস্কুলে দশম শ্রেণিতে পড়ত। গতবছর ১৪ আগস্ট বিকেলে বিথি বাসা থেকে বের হয়ে তার বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করতে যায়। পরে তাকে অনেকবার ফোন করলেও ধরেনি। এক পর্যায়ে রাসেল নামের এক ছেলে ফোন রিসিভ করে জানায়, বিথি এক্সিডেন্ট করেছে। আমরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে গিয়ে দেখি অচেতন অবস্থায় পড়ে আছে আমার মেয়ে। তখন তার বন্ধুরা উপস্থিত ছিল। দুর্ঘটনার কারণ জানতে চাইলে রাসেল জানায় মুগদা থেকে রিকশায় আসার পথে সিএনজির ধাক্কায় এ ঘটনা ঘটেছে।
তিনি বলেন, পরে ঢামেকের চিকিৎসকরা আমার মেয়েকে নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে রেফার্ড করে। সর্বশেষ ১৬ আগস্ট রাত ১টায় চিকিৎসারত অবস্থায় বিথির মৃত্যু হয়। দুর্ঘটনার বিষয়টি সন্দেহ হলে বিথির বন্ধু চৈতিকে জিজ্ঞাসা করলে সে আমাদের জানায়, তারা মোটরসাইকেলে হাতিরঝিলে ঘুরতে গিয়েছিল। নাইম নামের এক ছেলের মোটরসাইকেলে উঠেছিল বিথি। এক পর্যায়ে মোটরসাইকেল থেকে তাকে ফেলে দেয় নাইম। এতে গুরুতর আহত হয় বিথি। ঘটনাস্থল থেকে বিথিকে চৈতি ও রাসেল ঢাকা মেডিকেলে নিলেও নাইম সেখান থেকে পালিয়ে যায়।
তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করতে গেলে পুলিশ এজাহারে দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে বলে উল্লেখ করে। কিন্তু এটা হত্যাকাণ্ড। বারবার পুলিশকে বলা হলেও তারা নিজেদের ইচ্ছায় মামলার এজাহার তৈরি করে। ওই তিনজনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করলেও বর্তমানে তারা জামিনে বেরিয়ে গেছে। এমনকি মামলা তুলে নিতে আমাকে নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে। পরে ১০ জনকে আসামি করে আদালতে মামলা দায়ের করেছি।
এ সময় বিথির হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হস্তক্ষেপ কামনা করেন বিথির মা। সংবাদ সম্মেলনে নিহতের খালা ঝর্না আক্তার উপস্থিত ছিলেন।
এমএসি/এমএইচএস