‘এখন অনেকে মুক্তিযোদ্ধা হওয়ার জন্য পাগল হয়ে গেছেন’

বীর মুক্তিযোদ্ধা, সাবেক মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধ করেননি, এমন অনেক মানুষ এখন মুক্তিযোদ্ধা হওয়ার জন্য পাগল হয়ে গেছেন। তাদের কাগজপত্র কিছু নেই, নাথিং।
বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের এস রহমান হলে সাংবাদিক-গবেষক আহমেদ কুতুবের ‘মুক্তিযুদ্ধে চট্টগ্রাম’ বইয়ের পাঠ উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ বলেন, মিথ্যা তথ্য দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা হওয়ার চেষ্টা ঠিক নয়। আমি তাদের বলি, আমি এক মাস ট্রেনিং নিয়েছি। ভাতার জন্য দরখাস্ত করতে হয়নি। তালিকায় নাম তোলার জন্য দরখাস্ত করতে হয়নি। আপনাদের নাম নেই কেন? ভারতে যারা ট্রেনিং নিয়েছেন ওই ক্যাম্পে তাদের সবার নাম রয়েছে। শত শত লোক এখন মুক্তিযোদ্ধা হতে চাইছেন।
তিনি বলেন, ৯ মাসের মুক্তিযুদ্ধ যেমন আনন্দের ও গৌরবের, তেমনি বেদনারও। অনেক আত্মত্যাগ ও শহীদের মাধ্যমে আমরা দেশটি পেয়েছি। যদি বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হতো, তাহলে কোনো দিনও এ দেশ পাকিস্তানের কবল থেকে মুক্ত হতো না। ৭ মার্চের ভাষণ না দিলে মুক্তিযুদ্ধ হতো না।
তিনি আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় অনেকবার গুলির মুখে পড়েছি। আল্লাহর রহমতে বেঁচে আছি। আমার বাঁচার কথা ছিল না। সাংবাদিক আহমেদ কুতুব মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে যে বই লিখেছেন তাতে অনেক অজানা ইতিহাস উঠে এসেছে। একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে তার এ উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। তার মতো আরও অনেকে বই লিখলে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করা যাবে না। আমিও মুক্তিযুদ্ধের ওপর বই লিখছি। তাতে মুক্তিযুদ্ধের সম্পূর্ণ ইতিহাস আপনারা জানতে পারবেন বলে আশা করি।
সভায় ক্লাব সভাপতি ও প্রধান আলোচক আলী আব্বাস বলেন, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী একটি সংগঠন। দেশের প্রথম কোনো প্রেস ক্লাবে বঙ্গবন্ধুর ম্যুারাল উদ্বোধন করা হয়েছে চট্টগ্রামে। মুক্তিযুদ্ধের বই প্রকাশের ক্ষেত্রে যেকোনো ধরনের আর্থিক সহযোগিতা করা হবে।
দৈনিক পূর্বদেশের সহকারী সম্পাদক দেবদুলাল ভৌমিকের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার এ কে এম সরোয়ার কামাল, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ম. শামসুল ইসলাম, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ, মহানগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডার ডেপুটি কমান্ডার শহীদুল হক চৌধুরী সৈয়দ প্রমুখ।
কেএম/আরএইচ