টিকা নেওয়ার পর আরও শক্তিশালী হয়েছি : স্বাস্থ্যমন্ত্রী

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের টিকা নিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। টিকা নেওয়ার পর অনুভূতি জানতে চাইলে তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘টিকা নেওয়ার পর আরও শক্তিশালী হয়ে গেছি। কোনো ধরনের সমস্যা বোধ করছি না।’
রোববার (৭ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টা ২০ মিনিটে রাজধানীর মহাখালী শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে করোনার টিকা নেন জাহিদ মালেক। পরে ঢাকা পোস্টকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘টিকা নিয়ে একধরনের গুজব ছড়ানো হয়েছিল। টিকা নেওয়ার পর আমি কোনো ধরনের অসুস্থতাবোধ করছি না।’
আমি মনে করি সকলকেই টিকা নেওয়া দরকার। এতে আপনি নিজেও সুস্থ থাকবেন, পরিবারকেও সুস্থ রাখবেন
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক
মন্ত্রী বলেন, ‘আমি মনে করি সকলকেই টিকা নেওয়া দরকার। এতে আপনি নিজেও সুস্থ থাকবেন, পরিবারকেও সুস্থ রাখবেন।’
জাহিদ মালেক বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশের মানুষের জন্য এই টিকা এনেছেন। আশা করি, আপনারা সকলেই টিকা নেওয়ার মাধ্যমে ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।'
রোববার সকাল ১০টায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে টিকাদান কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। এর মাধ্যমে দেশব্যাপী এক হাজার পাঁচটি কেন্দ্রে একযোগে গণটিকা শুরু হয়।
টিকাদান কর্মসূচির প্রথম দিনে ঢাকার ৫০টি হাসপাতালে ৫০টি কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। মোট ২০৪টি দল ঢাকার টিকাদান পরিচালনা করছে। এছাড়া দেশের বিভিন্ন জেলার ৯৫৫টি হাসপাতালে টিকাদান কর্মসূচির প্রথম দিনে টিকা দেওয়া হচ্ছে। এতে মোট দুই হাজার ১৯৬টি দল কাজ করছে।
টিকাদান কার্যক্রমের উদ্বোধন করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, আজ সারাদেশে টিকা কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়েছে। করোনার শুরুতে মাত্র একটি ল্যাব ছিল বাংলাদেশে। সেখানে ২০০টি ল্যাব এমনি এমনি তৈরি হয়ে যায়নি। ৩৫টি হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন ছিল, আমরা ৯০টি নতুন সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন এনেছি। অনেকে বলেছিলেন ভেন্টিলেটর লাগবে। কিন্তু এখন সব ভেন্টিলেটর খালি পড়ে রয়েছে। দরকার ছিল সেন্ট্রাল হাই ফ্লো নেজাল ক্যানোলা। আমরা যখন এটি জানলাম তখন লকডাউন থাকা অবস্থায় নিয়ে আসছি কয়েক হাজার হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা অক্সিজেন কনসেনট্রেটর। ফলে আমাদের মৃত্যুহার কম রাখতে সক্ষম হয়েছি।
দেশব্যাপী এক হাজার পাঁচটি কেন্দ্রে একযোগে গণটিকা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ঢাকার ৫০টি হাসপাতালে ২০৪টি দল টিকাদান কার্যক্রম পরিচালনা করছে। দেশের বিভিন্ন জেলার ৯৫৫টি হাসপাতালে মোট দুই হাজার ১৯৬টি দল কাজ করছে
জাহিদ মালেক আরও বলেন, আমাদের দেশে যে পরিমাণ লোক মারা গেছে, তার তুলনায় ভারতে, যুক্তরাষ্ট্রে অনেক বেশি লোক মারা গেছে। তারা এত উন্নত দেশ, আল্লাহর রহমতে আমরা ভালো আছি।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডেন্স অনুযায়ী আমরা করোনা ফেইজ আউট পর্যায়ে চলে আসছি। আমাদের এখন ৩ শতাংশ সংক্রমণের হার। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডেন্সে বলে ৩ শতাংশের নিচে যখন আসতে থাকে তখন করোনা আস্তে আস্তে দেশ থেকে ফেইজ আউট হয়ে যায়। কাজেই সেই পর্যায়ে চলে আসছি।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, করোনা মোকাবেলার ক্ষেত্রে ব্লুমবার্গ বাংলাদেশকে ২০তম দেশ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশ প্রথম হয়েছে করোনা নিয়ন্ত্রণে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা দুবার প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করে চিঠি পাঠিয়েছে।
টিআই/এমএআর/