কুর্মিটোলা হাসপাতালে টিকা নিচ্ছেন ২০৪ জন

করোনা প্রতিরোধে সারাদেশে একযোগে শুরু হয়েছে টিকাদান কার্যক্রম। এরই ধারাবাহিকতায় রোববার (৭ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালেও টিকাদান শুরু হয়েছে। সকাল ১১টায় এ হাসপাতালে টিকাদান শুরু হয়।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, আজ সারাদিনে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে মোট ২০৪ জন টিকা নিবেন। হাসপাতালে মোট চারটি বুথ স্থাপন করা হয়েছে। যার মধ্যে দুটিতে পুরুষ ও দুইটিতে নারীদের টিকা দেওয়া হচ্ছে।
নিবন্ধন অনুযায়ী শনিবার যারা এসএমএস পেয়েছেন তারা আজ হাসপাতালটিতে এসে তালিকা অনুযায়ী সিরিয়াল নিয়ে অপেক্ষা করছেন। কার্যক্রমে সার্বিক সহযোগিতা করছে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি। তারা আগতদের তালিকা করেছেন। তালিকা ধরে ডাকার পর সে ব্যক্তি গিয়ে ভ্যাকসিন নিচ্ছেন।
কুর্মিটোলা হাসপাতালে টিকা নিতে এসেছেন আক্তার উদ্দিন আহমেদ নামের একজন অবসরপ্রাপ্ত চাকরিজীবী। তিনি বলেন, নিবন্ধনের পর গত রাতে এসএমএস পেয়ে আজ টিকা নিলাম। টিকা নিয়ে একটুও খারাপ লাগছে না। কোনো ধরনের সমস্যা অনুভব করছি না। এখানকার কার্যক্রমও অনেক ভালো। একদম শৃঙ্খলার সঙ্গে পরিচালিত হচ্ছে।
টিকাদান কার্যক্রমে আগতদের সহায়তাকারী রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সদস্য সাকিব আহমেদ বলেন, আজ কুর্মিটোলা হাসপাতালে ২০৪ জনকে টিকা দেওয়া হবে। আমরা সে অনুযায়ী তালিকা টাঙিয়েছি। যারা আসছেন তাদের প্রয়োজনীয় কাগজ দেখে সিরিয়াল করে বসিয়ে রাখছি। এখানে চারটি বুথে টিকাদান কর্মসূচি চলছে। টিকা নেওয়া শেষে কিছুক্ষণ পর্যবেক্ষণের জন্য বসিয়ে রাখা হচ্ছে।
এদিকে ঢাকাসহ দেশের এক হাজার পাঁচটি হাসপাতালে একযোগে টিকা দান কর্মসূচি চলছে। দেশজুড়ে আজ টিকাদান কার্যক্রম চলবে দুপুর ২টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত। রাজধানীর ৫০টি স্থানে দেওয়া হবে টিকা। এছাড়া সারাদেশের ৯৫৯টি হাসপাতাল, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নির্ধারণ করা হয়েছে। গণটিকাদান কাজের জন্য প্রস্তুত আছেন দুই হাজার ৪০২ স্বাস্থ্যকর্মী। টিকা নিতে ইতোমধ্যে প্রায় চার লাখ মানুষ নিবন্ধন করেছেন বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
করোনার টিকা যেসব হাসপাতালে দেওয়া হবে সেগুলোর মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ২৬টি, দক্ষিণ সিটিতে ১৯টিসহ মোট ৪৫টি হাসপাতাল রয়েছে বলে দুই সিটির স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে। এছাড়া আরও পাঁচ স্থানে টিকা দেওয়া হবে।
এদিকে আজ সকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সভাকক্ষে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে টিকাদান কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, আজ সারাদেশে টিকা কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়েছে। সারাদেশের এক হাজার পাঁচটি কেন্দ্রে একযোগে টিকা দেওয়া হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, করোনার শুরুতে দেশে মাত্র একটি ল্যাব ছিল। সেখানে ২০০টি ল্যাব এমনি এমনি তৈরি হয়ে যায়নি। ৩৫টি হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন ছিল। আমরা ৯০টি নতুন সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন স্থাপন করেছি। অনেকে বলেছিলেন ভেন্টিলেটর লাগবে। কিন্তু এখন সব ভেন্টিলেটর খালি পড়ে রয়েছে। দরকার ছিল সেন্ট্রাল হাই ফ্লো নেজাল ক্যানোলা। আমরা যখন এটি জানলাম তখন লকডাউন থাকা অবস্থায় নিয়ে এসেছি কয়েক হাজার হাই ফ্লো নেজাল ক্যানোলা, অক্সিজেন কনসেনট্রেটর। ফলে আমাদের মৃত্যুহার কম রাখতে সক্ষম হয়েছি।
জাহিদ মালেক আরও বলেন, আমাদের দেশে যে পরিমাণ লোক মারা গেছে, তার তুলনায় ভারত-যুক্তরাষ্ট্রে অনেক লোক মারা গেছে। তারা উন্নত দেশ, আল্লাহর রহমতে আমরা ভালো আছি।
এএসএস/ওএফ