বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা-গবেষণার বদলে টেন্ডার ও দখলবাজি চলছে

সংবিধান বিশেষজ্ঞ ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেছেন, সরকারের নির্লজ্জ দলীয়করণের ব্যাপক প্রভাব পড়েছে শিক্ষাঙ্গনে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বর্তমানে বিশ্বমানের শিক্ষা ও গবেষণার বদলে চলছে টেন্ডার ও দখলবাজি। দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার পেছনে করোনা মহামারির চেয়ে রাজনৈতিক কারণই ছিল মুখ্য।
শনিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) নাগরিক সমাজ আয়োজিত বর্তমান জাতীয় সংকট এবং সমাধানের নাগরিক ভাবনা শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
গণফোরাম সভাপতি বলেন, ‘দেশ আজ সর্বগ্রাসী সংকটে নিমজ্জিত। রাষ্ট্রের ক্ষেত্রে আজ ভগ্নদশা। জনগণের দাবি যখন নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য একটি শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় আইন করা, ঠিক তখন সরকার দেশ ও জাতির বিবেককে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে তড়িঘড়ি করে আইন প্রণয়ন করেছে সার্চ কমিটি গঠনের জন্য। যা নির্বাচন কমিশন গঠনের আইন বলে প্রচার করা জাতির সঙ্গে তামাশা ও এক মহা প্রহসনমাত্র।’
কামাল হোসেন বলেন, ‘স্বাধীনভাবে মতপ্রকাশের অধিকার, জানমালের নিরাপত্তা অধিকারসহ মানুষের মৌলিক মানবাধিকারগুলো প্রতিনিয়ত লঙ্ঘিত হচ্ছে। শাসকগোষ্ঠীর দুর্নীতি, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি, গুম, খুন, ধর্ষণ-নির্যাতন ও বিচারবর্হিভূত হত্যাকাণ্ডে সাধারণ নাগরিক দিশেহারা।’
তিনি বলেন, ‘দেশের বর্তমান পরিস্থিতির কারণে এবং সঠিক বৈদেশিক নীতির অভাব ও দুর্নীতির জন্য আমাদের শ্রমবাজার ক্রমান্বয় সংকুচিত হয়ে আসছে।’
ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু হয় না, অস্তিত্ব থাকে না। জনগণের ক্ষমতার রোহিত হয়ে যায়, যা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা পরিপন্থী। বর্তমানে দেশ পরিচালনার ক্ষেত্রে মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গীকারের ভিত্তিতে ৭২ সালে সংবিধান রচিত হয়েছিল। দুঃখজনক হলেও সত্য যে দেশের রাজনীতি ও রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে সে সংবিধান বহুলাংশে উপেক্ষিত। আজ দেশের সেই মালিকরা তাদের মালিকানা হারিয়েছেন। দেশের জনগণ একটি অবাধ নিরপেক্ষ সুষ্ঠু নির্বাচন চায় তারা তাদের সঠিক প্রতিনিধি নির্বাচিত করতে চায়।’
তিনি বলেন, ‘জনগণ কর্তৃত্ববাদী এবং অগণতান্ত্রিক শাসনের অবসান চায়। একটি অবাধ সুষ্ঠু অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘রাষ্ট্রের মালিক জনগণ। দেশ ও জাতিকে বাঁচাতে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। জনগণ ঐক্যবদ্ধ না হলে এই অব্যবস্থাপনার নির্বাচন ঠেকানো যাবে না। জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত হবে না।’
এসআর/এমএইচএস