মানসিক স্বাস্থ্য ও নীতিনির্ধারণে বাজেট জরুরি

বর্তমান বিশ্বের দ্রুত পরিবর্তনশীল সমাজব্যবস্থা, প্রযুক্তির উৎকর্ষতা এবং সামাজিক চাপে মানুষ দিনদিন আরও বেশি মানসিক চাপে ভুগছে। মানসিক স্বাস্থ্য এখন আর কেবল ব্যক্তিগত সমস্যা নয়, বরং এটি একটি জাতীয় এবং বৈশ্বিক সমস্যা।
স্বাস্থ্য খাতের বাজেট প্রণয়নের সময় শারীরিক স্বাস্থ্য যতটা গুরুত্ব পায়, মানসিক স্বাস্থ্য তার তুলনায় অনেকটাই অবহেলিত থাকে। অথচ মানসিক স্বাস্থ্য উপেক্ষিত থাকলে একটি সমাজের সামগ্রিক উৎপাদনশীলতা, কর্মক্ষমতা এবং অর্থনৈতিক অগ্রগতি ব্যাহত হয়।
বাংলাদেশসহ বিশ্বের অনেক উন্নয়নশীল দেশে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। বিশ্বব্যাপী কর্মজীবী মানুষের মধ্যে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। পরিসংখ্যান বলছে, প্রতি পাঁচজন মানুষের মধ্যে একজন মানসিক স্বাস্থ্য চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হন, এবং যাদের অবস্থা গুরুতর, তাদের প্রায় ৮০ শতাংশ কর্ম হারান। এই তথ্য আমাদের কর্মক্ষেত্রে মানসিক স্বাস্থ্যের গুরুত্ব ও ঝুঁকির মাত্রা সম্পর্কে গভীর সংকেত দেয়।
জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট (NIMH) পরিচালিত এক জরিপ অনুযায়ী, বাংলাদেশের ১৭ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ হালকা থেকে গুরুতর মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছেন, যার মধ্যে ১৯ শতাংশ নারী এবং ১৫ শতাংশ পুরুষ।
শিশু-কিশোরদের মধ্যেও মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা ক্রমেই বাড়ছে, ১৮ বছরের নিচে ১৩.৬ শতাংশ শিশু-কিশোর মানসিক সমস্যায় ভুগলেও তাদের মধ্যে ৯০ শতাংশের বেশি কোনো ধরনের চিকিৎসা বা মানসিক স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছে না। এই ভয়াবহ চিত্র দেখায় যে, মানসিক স্বাস্থ্য এখনো সমাজে একধরনের ‘অদৃশ্য সংকট’ রূপে রয়ে গেছে।
বাংলাদেশে উদ্বেগ, অস্থিরতা, রাগ, বিষণ্নতা, আত্মহত্যা, শিশু নির্যাতন এবং ধর্ষণের মতো বিষয়গুলো দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে, কিন্তু মানসিক স্বাস্থ্য সেবার অপ্রতুলতা ও সামাজিক অবহেলার কারণে এসব সমস্যার সমাধান হচ্ছে না।
মানসিক স্বাস্থ্যকে ঘিরে বিদ্যমান দৃষ্টিভঙ্গি ও গুরুত্ব দেওয়ার পদ্ধতিতে ইতিবাচক পরিবর্তন আনা এখন অত্যন্ত জরুরি হয়ে উঠেছে। এটি কেবল ব্যক্তি বা পরিবার নয়, বরং নীতিনির্ধারক পর্যায়ে বাজেট পরিকল্পনা, কর্মক্ষেত্রের আচরণবিধি ও মানবিক দৃষ্টিভঙ্গিতেও প্রতিফলিত হওয়া প্রয়োজন।
বর্তমানে বিশ্বব্যাপী ও বাংলাদেশে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কযুক্ত কিছু সামাজিক সমস্যা ভয়াবহভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই সমস্যাগুলোর ক্রমবর্ধমান হার আমাদের সমাজে মানসিক স্বাস্থ্য সেবার ঘাটতির প্রতিফলন। এটি এখন আর কেবল ব্যক্তিগত সমস্যায় সীমাবদ্ধ নয়; এটি সমাজের বৃহত্তর অংশকে প্রভাবিত করছে।
কর্মসংস্থানের অনিশ্চয়তা, পারিবারিক অশান্তি, সামাজিক বিচ্ছিন্নতা এবং প্রযুক্তির প্রভাব তরুণদের মাঝে হতাশা ও উদ্বেগের মাত্রা বাড়িয়ে দিচ্ছে, যা আত্মহত্যার প্রবণতা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ।
কর্মসংস্থানের অনিশ্চয়তা, পারিবারিক অশান্তি, সামাজিক বিচ্ছিন্নতা এবং প্রযুক্তির প্রভাব তরুণদের মাঝে হতাশা ও উদ্বেগের মাত্রা বাড়িয়ে দিচ্ছে, যা আত্মহত্যার প্রবণতা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। আত্মহত্যা বর্তমানে তরুণদের মৃত্যুর প্রধান কারণগুলোর একটি হয়ে উঠেছে, যা প্রমাণ করে মানসিক স্বাস্থ্যসেবার গুরুত্ব কতখানি।
শিশু নির্যাতন ও ধর্ষণের মতো ঘটনাগুলো শুধু শারীরিক নয়, মানসিকভাবে ভুক্তভোগীকে চিরস্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং এর প্রভাব সারা জীবন বহন করতে হয়। ধর্ষণ বা নির্যাতনের শিকারদের অধিকাংশই দীর্ঘমেয়াদি ট্রমা, পিটিএসডি (Post-Traumatic Stress Disorder), আতঙ্ক, আত্মগ্লানি এবং আত্মহত্যার ঝুঁকিতে থাকেন।
দুর্ভাগ্যজনকভাবে, এসব মানসিক সমস্যার পর্যাপ্ত চিকিৎসা ও কাউন্সিলিংয়ের ব্যবস্থা নেই বললেই চলে। এছাড়াও শিশুদের সার্বিক বিকাশে মানসিক স্বাস্থ্য এক অপরিহার্য উপাদান, বিশেষ করে প্রতিবন্ধী শিশু ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের ক্ষেত্রে এর গুরুত্ব আরও অনেক গুণ বেশি।
অথচ যে পরিমাণ শিশু বিশেষ সেবা ও থেরাপির জন্য শিশু বিকাশ কেন্দ্রে আসছে, তার তুলনায় মনোবিজ্ঞানীর সংখ্যা অনেক কম এবং গ্রামীণ বা উপজেলা পর্যায়ে এই সেবা প্রায় অনুপস্থিত। আরও উদ্বেগের বিষয় বর্তমানে বাংলাদেশে ৩৫টি শিশু বিকাশ কেন্দ্র রয়েছে এবং এই কেন্দ্রগুলোর সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা প্রায় ১০ মাস ধরে কোনো বেতন পাচ্ছেন না, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এর ফলে শিশু বিকাশ কেন্দ্রগুলোর স্বাভাবিক কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে এবং এই সেবাগুলো এখন কার্যত হুমকির মুখে।
আরও পড়ুন
এই কেন্দ্রগুলোয় যে ধরনের বিশেষায়িত সেবা দেওয়া হয়, তা একসাথে দেশের অন্য কোনো হাসপাতালে পাওয়া যায় না। কেন্দ্রগুলো যদি বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলার শিশুরা আর নিজ নিজ জেলাতেই মানসিক স্বাস্থ্য ও বিকাশ সংক্রান্ত সেবা নিতে পারবে না।
এতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে বিশেষ স্বাস্থ্য সমস্যায় থাকা শিশুরা। এই সেবা বন্ধ হয়ে গেলে বিশেষ স্বাস্থ্য সমস্যায় থাকা শিশুদের চিকিৎসার জন্য ঢাকায় আসতে হবে, যা অর্থনৈতিকভাবে ব্যয়বহুল, সময়সাপেক্ষ এবং অনেক ক্ষেত্রেই বাস্তবসম্মত নয়, বিশেষ করে দরিদ্র ও প্রান্তিক পরিবারের জন্য। ফলে একদিকে যেমন প্রয়োজনীয় সেবা পাওয়া থেকে শিশুরা বঞ্চিত হবে, অন্যদিকে জাতীয়ভাবে মানসিক স্বাস্থ্যখাত আরও পিছিয়ে পড়বে। এই বাস্তবতায় সরকারের দ্রুত হস্তক্ষেপ একান্ত প্রয়োজন।
মূলত নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা এবং এর পেশাজীবীদের গুরুত্ব এখনো আশানুরূপভাবে প্রতিফলিত হয়নি। জাতীয় স্বাস্থ্যনীতি বা বাজেট বরাদ্দের দিকে তাকালে দেখা যায়, মানসিক স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ অন্যান্য খাতের তুলনায় অনেক কম। ২০২০ সালের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, বাংলাদেশের স্বাস্থ্য বাজেটের মাত্র ০.৫ শতাংশ মানসিক স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ করা হয়, যা জনসংখ্যার তুলনায় অত্যন্ত অপ্রতুল।
এর ফলে সরকারি পর্যায়ে মানসিক হাসপাতাল, প্রশিক্ষণকেন্দ্র, পুনর্বাসনকেন্দ্র এবং কমিউনিটি বেসড সেবা কাঠামো গড়ে উঠতে পারেনি। এতে করে শুধু রোগী নয়, পেশাজীবীরাও বঞ্চিত হন প্রয়োজনীয় সহায়তা, প্রশিক্ষণ এবং কর্মপরিসরের সুযোগ থেকে। মানসিক স্বাস্থ্যকে ঘিরে বিদ্যমান আইন ও নীতিগুলো বাস্তব কার্যকর করার জন্য শুধুমাত্র কৌশলগত নির্দেশনা যথেষ্ট নয়, প্রয়োজন পর্যাপ্ত আর্থিক সহায়তা ও প্রশাসনিক দায়বদ্ধতা।
নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে যেসব পরিকল্পনা গৃহীত হয়, সেগুলোর বড় একটি অংশই পেশাদার মনোবিজ্ঞানী বা ক্লিনিক্যাল এক্সপার্টদের পরামর্শ ছাড়া তৈরি হয়। ফলে বাস্তবমুখী হলেও প্রাসঙ্গিকতা হারানো নীতিমালা তৈরি হয়, যার প্রয়োগও ব্যর্থ হয়। যেমন ২০১৮ সালের মানসিক স্বাস্থ্য আইন পাস হলেও তার বাস্তবায়নে কোনো নির্দিষ্ট কাঠামো গড়ে ওঠেনি। পেশাজীবীদের দক্ষতা কাজে লাগিয়ে নীতিনির্ধারণে তাদের সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হলে, একটি বাস্তবসম্মত ও কার্যকর পরিকল্পনা গড়ে তোলা সম্ভব হতো।
শিক্ষা ব্যবস্থায় মানসিক স্বাস্থ্য পেশার উন্নয়ন ও মানোন্নয়নের প্রয়োজনীয় উদ্যোগও তেমনভাবে গৃহীত হয়নি। প্রতি বছরই বাংলাদেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হতে মনোবিজ্ঞান বিভাগ থেকে বিপুল সংখ্যক গ্র্যাজুয়েট (প্রায় ২৫০-৩০০ জন) পাস করে বের হচ্ছেন। কিন্তু স্থায়ী পদ, পর্যাপ্ত বেতন-ভাতা, সরকারি অবকাঠামো ও জাতীয় বেতন স্কেল না থাকায় বেশিরভাগই মানসিক স্বাস্থ্যসেবায় নিয়োজিত হতে আগ্রহ হারাচ্ছে এবং জীবন জীবিকার জন্য অন্য পেশায় যুক্ত হচ্ছে। ফলে একদিকে যেমন প্রশিক্ষিত জনবল থাকা সত্ত্বেও মানসিক স্বাস্থ্যসেবার ঘাটতি রয়ে যাচ্ছে, অন্যদিকে সম্ভাবনাময় একটি পেশাগত ক্ষেত্রও ধীরে ধীরে উপেক্ষিত হয়ে পড়ছে।
ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট, কাউন্সিলর, সাইকোথেরাপিস্ট ও অন্যান্য পেশাজীবীদের জন্য নির্দিষ্ট রেজিস্ট্রেশন ব্যবস্থা, প্রশিক্ষণ কাঠামো এবং পেশাগত উন্নয়নের সুযোগ তৈরি করতে হবে।
এছাড়াও মনোবিজ্ঞনের প্রয়োগভিত্তিক দিকগুলো, যেমন ক্লিনিক্যাল ট্রেনিং, সাইকোথেরাপি, কাউন্সিলিং স্কিলস, পর্যাপ্ত ল্যাব সাপোর্ট বা ইন্টার্নশিপের সুযোগ অনেক ক্ষেত্রেই সীমিত। এ ধরনের সীমাবদ্ধতা মানসিক স্বাস্থ্য পেশাজীবীদের দক্ষতা অর্জনে বাধা সৃষ্টি করে এবং আন্তর্জাতিক মানের সেবাদানেও ঘাটতি দেখা দেয়।
তাছাড়া, পেশাগতভাবে আত্মপ্রকাশের সুযোগ যেমন রেজিস্ট্রেশন, লাইসেন্সিং বা পেশাজীবী সংগঠনের সক্রিয়তা এখনো অনেকটাই দুর্বল, যা এই পেশাকে কাঠামোগত স্বীকৃতি দিতে ব্যর্থ। সমস্যার এই বহুমাত্রিকতা থেকে উত্তরণের জন্য প্রয়োজন একটি সমন্বিত, বাস্তবধর্মী ও ন্যায্য নীতিমালা যেখানে মানসিক স্বাস্থ্য পেশাজীবীদের স্বীকৃতি, সুরক্ষা ও পেশাগত উন্নয়নকে গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা হবে।
ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট, কাউন্সিলর, সাইকোথেরাপিস্ট ও অন্যান্য পেশাজীবীদের জন্য নির্দিষ্ট রেজিস্ট্রেশন ব্যবস্থা, প্রশিক্ষণ কাঠামো এবং পেশাগত উন্নয়নের সুযোগ তৈরি করতে হবে। নীতিনির্ধারণী ফোরামে মানসিক স্বাস্থ্য পেশাজীবীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে যাতে মাঠপর্যায়ের অভিজ্ঞতা নীতিনির্ধারণে প্রতিফলিত হয়। তাই, বর্তমান বাজেটে বাংলাদেশের মানসিক স্বাস্থ্যকে কেন্দ্র করে একটি সমন্বিত ও বাস্তবভিত্তিক বাজেট নীতিমালা প্রণয়ন করা জরুরি, যা শুধুমাত্র চিকিৎসা নয় বরং- নতুন পদ সৃষ্টি, স্থানীয় পর্যায়ে মানসিক স্বাস্থ্য সেবা সম্প্রসারণ, স্কুল ও কলেজ পর্যায়ে মনোবিজ্ঞানী নিয়োগ, প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ, সচেতনতা, সুরক্ষা ও পুনর্বাসনের দিকগুলোকে একত্রিত করবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) মানসিক স্বাস্থ্য খাতে বিনিয়োগ ঘাটতির বিষয়ে বারবার সতর্ক করেছে। এদিকে, ইউনাইটেড ফর গ্লোবাল মেন্টাল হেলথ-এর মতো সংস্থাগুলো সুপারিশ করছে, নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলো যেন অন্তত ৫ শতাংশ এবং উচ্চ আয়ের দেশগুলো ১০ শতাংশ পর্যন্ত স্বাস্থ্য বাজেট মানসিক স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ করে। এজন্য স্বাস্থ্য বাজেটের কমপক্ষে ৫ শতাংশ মানসিক স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ নিশ্চিত করতে হবে এবং জেলা-উপজেলা পর্যায়ে মানসিক স্বাস্থ্য ইউনিট ও প্রশিক্ষিত জনবল নিয়োগে জোর দিতে হবে। এই পরিমাণ বিনিয়োগ না হলে মানসিক স্বাস্থ্য সেবা ও ব্যবস্থাপনায় কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি সম্ভব নয়।
বর্তমান সময়ের বাস্তবতা আমাদের শেখায় যে, টেকসই উন্নয়ন কেবল অবকাঠামো বা অর্থনীতি নির্ভর নয়, বরং একটি মানসিকভাবে সুস্থ, সচেতন এবং মানবিক জনগোষ্ঠীর ওপরই তার ভিত্তি গড়ে ওঠে। এজন্য একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সহানুভূতিশীল সমাজ গঠনের লক্ষ্যে মানসিক স্বাস্থ্যের গুরুত্বকে সামনে রেখে এখন সময় এসেছে বৈশ্বিক এবং জাতীয় পর্যায়ে বাজেট পরিকল্পনায় মানসিক স্বাস্থ্যকে অগ্রাধিকার দেওয়ার।
কারণ, একটি মানসিকভাবে সুস্থ, সচেতন এবং বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিসহ সকলের অংশগ্রহণে গঠিত জনগোষ্ঠীই দীর্ঘ মেয়াদে স্থায়ী ও সমন্বিত উন্নয়নের শক্ত ভিত্তি তৈরি করতে পারে। তাই, মানসিক স্বাস্থ্য যেন শুধুমাত্র একটি স্বাস্থ্য ইস্যু হিসেবে না থেকে, বরং জাতীয় উন্নয়ন, কর্মসংস্থান, শিক্ষা, সামাজিক সুরক্ষা ও মানবাধিকার এসব বৃহৎ কাঠামোর সঙ্গে জড়িত বিষয় হিসেবে বিবেচিত হয়।
ড. জেসান আরা ।। সহযোগী অধ্যাপক ও চিকিৎসা মনোবিজ্ঞানী, মনোবিজ্ঞান বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
jesan@ru.ac.bd