ছাত্রদলে সম্পাদকের পদ পেলেন অপহরণ মামলার আসামি

সদ্যঘোষিত জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাইফ মোহাম্মদ জুয়েলের বিরুদ্ধে অপহরণ মামলাসহ একাধিক অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে। এরপরও তাকে সাধারণ সম্পাদকের পদ দেওয়ায় বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
জুয়েল একইসঙ্গে দুটি অপহরণ মামলার আসামি বলে জানা গেছে। নিউমার্কেট থানায় দায়ের করা একটি মামলার নথিপত্র অনুযায়ী, ছাত্রদলের ঢাবির শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক কবিরকে অপহরণ করেন তিনি। এ মামলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জুয়েলকে গ্রেপ্তার করেছিল। পরে চার মাস কারাভোগ করেন জুয়েল। মামলাটি এখনও বিচারাধীন।
২০১১ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মোশাররফ হোসেন হলে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মারামারিতে ছাত্রলীগের পলাশ-জিহান গ্রুপের হয়ে জুয়েল ভাড়াটে হিসেবে অংশ নেন এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদের ল্যাপটপ-মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে আসেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তৎকালীন জাবি ছাত্রদলের সভাপতি এ ঘটনার সত্যতা দাবি করেছেন।
অভিযোগ রয়েছে, এক/এগারোর সময়ে ছাত্রদলের তৎকালীন সংস্কারপন্থী নেতা সাঈদ ইকবাল টিটুর অনুসারী হয়ে মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের গেস্টরুম থেকে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ছবি নামিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় জুয়েল সরাসরি অংশ নেন। এ ঘটনা সম্পর্কে তৎকালীন ছাত্রদলের দ্বায়িত্বশীল সব নেতাই অবগত রয়েছেন বলে জানা গেছে।
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর প্রায় ছয় মাস হলে থেকে ছাত্রলীগের তৎকালীন জুয়েল-মিঠু গ্রুপের হয়ে ছাত্রলীগের কর্মকাণ্ডে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন জুয়েল। পরে মোবাইল ছিনতাইয়ের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়া সাপেক্ষে হল থেকে বের করে দেওয়া হয়। পরে ধীরে ধীরে ছাত্রদলের রাজনীতিতে যুক্ত হতে থাকেন। সবশেষ ২০১৫ সালের ৯৪ দিনের আন্দোলনে জুয়েল পুরোপুরি নিষ্ক্রিয় ছিলেন বলেও জানা যায়।
এদিকে বিতর্কিত একজনকে ছাত্রদলের গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়ায় ক্ষোভ জানিয়েছেন দলটির নেতাকর্মীরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলটির একাধিক নেতাকর্মী জানান, দলের জন্য ত্যাগী ও জাতীয়তাবাদের আদর্শের পরীক্ষিত নেতাকর্মীকে শীর্ষ পদে পদায়ন না করে বিতর্কিত একজনকে সম্পাদক বানানো হয়েছে। এতে শুধু দলের নয় বরং জাতীয়তাবাদী আদর্শের ওপর সুক্ষ্ম আঘাত হানা হয়েছে।
ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা অবিলম্বে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদ থেকে এই নেতার পদ বাতিলের দাবি জানিয়েছেন। অভিযোগের বিষয়ে জানতে সাইফ মোহাম্মদ জুয়েলের ফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হয়। তবে তার ফোন বন্ধ থাকায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এইচআর/আরএইচ