জিয়ার খেতাব বাতিলের চিন্তা করলে সরকারের হাত পুড়ে ছারখার হবে

বিএনপির চেয়ারপারসেনর উপদেষ্ঠা পরিষদের সদস্য আমানউল্লাহ আমান বলেছেন, “সরকার বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা, সেক্টর কমান্ডার, মহান স্বাধীনতার ঘোষক, বীরউত্তম, রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমানের খেতাব বাতিলের অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। আমরা বলে দিচ্ছি সরকার যদি তার ‘বীর উত্তম’ খেতাব বাতিলের চিন্তা করে তবে হাত জ্বলে পুড়ে ছারখার হয়ে যাবে।”
বুধবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক প্রতিবাদ সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ‘বীর উত্তম’ খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সমাবেশের আয়োজন করে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি। সমাবেশ থেকে বিএনপির কয়েকজন নেতাকর্মীকে পুলিশ আটক করেছে বলে দাবি করে দলটির নেতারা।
এদিকে বিএনপির সমাবেশকে ঘিরে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে প্রেসক্লাবের আশপাশের এলাকায় অন্যান্য দিনের তুলনায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের বেশি উপস্থিতি দেখা গেছে। শুধু তাই নয় প্রেসক্লাবসহ আশপাশের এলাকার প্রতিটি মোড়ে বসানো হয় তল্লাশি চৌকি। ফলে, সাধারণ জনসাধারণের চলাচলে ব্যাপক ভোগান্তির সৃষ্টি হয়। পুলিশের আটকের ভয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের সমাবেশ শেষ হওয়ার আগেই স্থান ত্যাগ করতে দেখা যায়। আজকের সমাবেশে অন্যান্য দিনের চেয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের উপস্থিতিও ছিলো কম। বিএনপির নেতাদের দাবি, বিভিন্ন মোড়ে পুলিশি বাধার কারণে দলের নেতাকর্মীরা সমাবেশে আসতে পারেনি।
আমানউল্লাহ আমান বলেছেন, ‘১৯৯০ এর চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে বর্তমান সরকার প্রধান শেখ হাসিনা ও তার সরকারকে উৎখাত করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করা হবে। আমরা এই সরকারকে আর কোনো নির্বাচনের সুযোগ দেব না। আবার আগের রাতে ভোট ডাকাতি করে ক্ষমতায় আসবেন, এটা বাংলাদেশে হতে পারে না।’
বিএনপির নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজপথে নেমে একদফা আন্দোলনের শরিক হওয়ার আহ্বান জানিয়ে আমানউল্লাহ বলেন, ‘এ সরকারের পতন ঘটিয়ে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’
‘সরকার প্রধান থেকে শুরু করে মন্ত্রী-এমপি ও দলের অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা লুটপাট করছে’ অভিযোগ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আজকে আপনারা দেখছেন, বিভিন্ন পৌরসভা, সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে কিভাবে এই সরকার ভোট ডাকাতি করছে। সংসদ উপনির্বাচনগুলোতেও তারা ভোট ডাকাতি করছে। সুতরাং এ সরকারের অধীনে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না। তাই সুষ্ঠু নির্বাচন পেতে হলে সব দল ও জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। সব দলের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনতে হবে এবং সরকারের পতন ঘটাতে হবে।’
ডাকসুর সাবেক এই ভিপি বলেন, ‘আজ বাংলাদেশের সাবেক প্রধান বিচারপতি পালিয়ে বেড়াচ্ছে। যে বিচারক সুষ্ঠু রায় দেয় তাকেই আজকে দেশ ছাড়তে হচ্ছে। সরকার সংসদকে ধ্বংস করে দিয়েছে, গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে দিয়েছে। গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করেছে।’
সমাবেশে থেকে আটক বিএনপির নেতাকর্মীদেরও মুক্তির দাবি জানান আমানউল্লাহ। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি হাবিব-উন-নবী খান সোহেলের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদসহ বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা প্রমুখ।
এএইচআর/ওএফ