জনগণের চাওয়া সরকার দমিয়ে রাখতে পারবে না : নজরুল ইসলাম

জনগণ বর্তমান সরকারের পরিবর্তন চায় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, কেউ জনগণের চাওয়াকে দমিয়ে রাখতে পারেনি, এই সরকারও পারবে না।
সোমবার (২ জানুয়ারি) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশে মুসলিম লীগের দ্বি-বার্ষিকী সম্মেলন উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, আমাদের এতো নেতাকর্মী গ্রেপ্তার। মাত্র তিন মাসের মধ্যে ১২-১৩ জন নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। তারপরও প্রত্যেকটি প্রোগ্রাম সফল হচ্ছে। প্রত্যেকটি আন্দোলনে অসংখ্য লোকের সমাগম হচ্ছে। সবাই কি দলের লোক? না। আন্দোলনে সাধারণ মানুষ যুক্ত হচ্ছে। আর সাধারণ মানুষ তখনি যুক্ত হয়, যখন তারা পরিবর্তন চায়। আর জনগণের এই চাওয়া যুগে-যুগে কেউ দমিয়ে রাখতে পারেনি। এই সরকারও পারবে না।
আরও পড়ুন>>রক্তের বদলা হিসেবে আমরা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করব : নজরুল ইসলাম খান
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের উদ্দেশে আমি বলতে চাই, ১৯৬৯ সালের আন্দোলনে তাদের কোন নেতা বাইরে (জেলখানার) ছিল? তখন তো শুধু আমেনা বেগম নামে একজন অপরিচিত নেতা দল পরিচালনা করেছে। সেই আন্দোলনের পরে নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জয়লাভ করেনি? করছে তো নাকি। তাহলে বিরোধী পক্ষকে গ্রেপ্তার করে রাখলে আন্দোলনে জয়ী হওয়া যায় না, ক্ষমতায় যাওয়া যায় না, এমন ধারণা তো ঠিক নয়।
জোর করে ক্ষমতায় টিকে থেকে সরকার ভুল করছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, এটা তারা জানে। জানার পরও তারা কেন একই ভুল করছে, ক্ষমতা কি মানুষকে এতোই অন্ধ করে দেয়? সব রাজনৈতিক দলের কখনও ভালো অবস্থা গেছে, কখনও খারাপ অবস্থায় গেছে। সুসময়-দুঃসময় যেমন মানুষের জীবনে থাকে, রাজনৈতিক জীবনেও থাকে। আশা করি, যে দলটি ক্ষমতায় আছে তারা বিষয়টি বুঝতে পারবে।
আরও পড়ুন>>সরকারের নিপীড়নে দেশ আজ মৃতপ্রায় : নজরুল ইসলাম খান
সাবেক এই শ্রমিক নেতা বলেন, নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠাতা হয়। আজকে সেই নির্বাচনী ব্যবস্থা ধ্বংস করে বলবেন গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করছি, এটা তো গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। হয় কাউকে নির্বাচনে আসতে দেবেন না, কিংবা আগের রাতেই ভোট করে ফেলবেন! আপনারা বলবেন—আমরা জনগণের ভোটে নির্বাচিত, জনগণেরে সমর্থনে কাজ করছি, এই রসিকতার কোনো মানে হয় না।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, এই দেশটা শুরু থেকে লড়াই-সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। এতো বেশি দল (রাজনৈতিক), এতো বেশি পদ। আমরা সবাই মানুষের কল্যাণ করতে চাই। কিন্তু জনগণ কার সেবা গ্রহণ করবে সেই চিন্তায় অতিষ্ঠ ও অস্থির হয়ে যাচ্ছে। সেজন্য আমরা বলেছি, সব মত-পার্থক্যের সমন্বয়ে শান্তি ও সৌহার্দের সমাজ গঠন করা দরকার।
আরও পড়ুন>>কারাগারে প্রাপ্য সুবিধা পাচ্ছেন না বিএনপি নেতারা : নজরুল ইসলাম
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন মুসলিম লীগের সভাপতি জুলফিকার আলী বুলবুল। এতে আরও বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ ইব্রাহিম, বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা ও বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিমসহ আরও অনেকে।
এএইচআর/কেএ