উচ্চ কক্ষে কারা যাবে তা নির্বাচনের আগে প্রকাশ করবে বিএনপি

বিএনপি রাষ্ট্র ক্ষমতায় গেলে কারা সংসদের উচ্চ কক্ষে যাবেন তার তালিকা নির্বাচনের আগেই জনগণের সামনে প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
রোববার (৮ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ঘোষিত রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ২৭ দফা রূপরেখার ব্যাখা ও বিশ্লেষণ শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করে ঢাকা মহানগর উত্তর ড্যাব।
তিনি বলেন, সুশীল সমাজের মধ্যে আবার কুশীল আছেন। তারা যে উচ্চ কক্ষে চলে যাবে না তার কোনও গ্যারান্টি আছে? এটা নিয়ে একটা প্রশ্ন আসবে না?, এটা জানা দরকার। স্বাভাবিকভাবে আমার মনেও এই প্রশ্নটা আসবে। সেখানে যদি কুশীল, দুর্নীতিবাজ ব্যবসায়ী যেখানে চলে যায়, তাহলেও আর উচ্চ কক্ষের দাম থাকবে না। এজন্য নির্বাচনে আগে প্রত্যেক দলকে তাদের প্যানেল থেকে কারা উচ্চ কক্ষে যাবেন সেটা ঘোষণা করতে হবে যে, আমাদের প্যানেলে এরা আছে। অর্থাৎ বিএনপি জয়ী হলে কারা উচ্চ কক্ষে যাবেন তা জনগণকে জানাতে হবে নির্বাচনের আগে। সেখানে খেলাধুলা করলে চলবে না। নির্বাচনের আগে জানাতে হবে। এটা হচ্ছে স্বচ্ছতা।
বর্তমানে বাংলাদেশে দুর্বৃত্তায়নের রাজনীতি চলছে মন্তব্য করে আমীর খসরু বলেন, চিরস্থায়ী দুর্বৃত্তায়ন ব্যবস্থা চালু করছে তারা (সরকার)। সেটা হচ্ছে রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করার। রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করতে কী, কী দরকার? রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলো দখল করা। রাষ্ট্রের ব্যাংক, শেয়ারবাজার দখল করা। মেঘা প্রজেক্টের নামে টাকা লুট করা। কারণ তারা অর্থ ও পেশীশক্তি দিয়ে ক্ষমতা থাকতে হবে। তার জন্য একটি গোষ্ঠী দরকার। এই গোষ্ঠীর মধ্যে দুর্নীতিবাজ ব্যবসায়ী, সরকারি কর্মকর্তা, কর্মচারী রয়েছে। এরা সবাই মিলে একটি র্যাজিম সৃষ্টি করেছে।
বাংলাদেশ এখন একটি রাষ্ট্র নয়, রাজ্য হয়ে গেছে দাবি করে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, এটাকে রাষ্ট্র বানাতে হলে ২৭ দফার মাধ্যমে দেশকে একটি নিয়মের মধ্যে আনতে হবে। এখানে দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট যে সংসদের কথা বলা আছে। একটি রাষ্ট্রের মধ্যে কিছু সম্ভাব্য মানুষ থাকে, যারা লেখা-পড়া জানা মানুষ। যাদের মেধা আছে, প্রজ্ঞা আছে, অভিজ্ঞতা আছে। যারা জাতির জন্য কিছু দিতে পারে। এই সমস্ত লোক যখন আইনপ্রণয়নকারী হিসেবে সংসদে যেতে পারে। কিন্তু অর্থের জন্য নির্বাচন করে না, পেশীশক্তি নেই, ততবির নেই। এদের আইন প্রণয়নে, নীতি প্রণয়নে সংসদে নিতে পারলে তারা জাতিকে কিছু দিতে পারবে। এ জন্য বিএনপির রূপরেখা উচ্চ কক্ষের বিষয়টি উঠে এসেছে।
তিনি আরও বলেন, তারেক রহমান মনে করেছে এই লোকগুলোকে আমাদের উচ্চ কক্ষে আনতে হবে।
খসরু বলেন, উচ্চ কক্ষে যারা যাবেন তারা যে বিষয়ে আলোচনা করবে, সেটা নিম্ন কক্ষের চেয়ে বেশি অভিজ্ঞতার কারণে বিতর্কটা বা আলোচনা বা নীতিটা উন্নত পর্যায়ে চলে যাবে। তার প্রতিপলন নিম্ন কক্ষে যাবে। যখন নিম্ন কক্ষের সদস্যরা দেখবে উচ্চ কক্ষের আলোচনা জনগণের কাছে প্রাধান্য পাচ্ছে, তখন তারাও চিন্তা করবে আমাদের জানতে হবে, বোঝতে হবে, শিখতে হবে, বলতে হবে। ফলে, রাজনীতিতে সর্বোপরি একটা গুণগত পরিবর্তন আসবে।
এএইচআর/এসএম