মোবাইলে আড়িপাতার সরকারি সিদ্ধান্তে বাম জোটের উদ্বেগ

মোবাইল-ইন্টারনেটে আড়িপাতার সরকারি সিদ্ধান্তে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাম গণতান্ত্রিক জোট। সংগঠনটি বলছে, মোবাইল, ইন্টারনেটে আড়িপেতে, নাগরিক অধিকার হরণ করে জবরদস্তির ফ্যাসিবাদী শাসন দীর্ঘায়িত এবং পুনরায় ক্ষমতা দখলের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করা যাবে না।
সোমবার (১৬ জানুয়ারি) সংবাদ মাধ্যমে বাম গণতান্ত্রিক জোটের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।
এতে বলা হয়, বাম গণতান্ত্রিক জোট কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের এক সভা আজ সিপিবি কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় বলা হয়েছে, এ ধরনের সিদ্ধান্ত ব্যক্তির গোপনীয়তা রক্ষার সাংবিধানিক অধিকারের চরম লঙ্ঘন। সরকার দীর্ঘ দিন ধরেই বেআইনিভাবে বিভিন্ন ব্যক্তির ফোনালাপ ফাঁস করার মাধ্যমে ব্যক্তির গোপনীয়তা লঙ্ঘন করে আসছিল, যা এখন আইনি রূপ দিতে যাচ্ছে। বিরোধী রাজনৈতিক দল ও মতকে দমনের স্বার্থেই সরকার এ অগণতান্ত্রিক অসাংবিধানিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, যে রাষ্ট্রকে বাংলাদেশ এখনো স্বীকৃতি দেয়নি সেই ইসরাইল থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে স্পাইওয়্যার ক্রয় করে সরকার, বিরোধী আন্দোলন দমন, নাগরিক অধিকার হরণ করে অন্যায় জবরদস্তির ফ্যাসিবাদী শাসন বলবৎ রাখতে চাইছে।
সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলা হয়, আড়িপাতার মতো অসাংবিধানিক সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হচ্ছে। একই সঙ্গে সরকারের নাগরিক অধিকার হরণের সকল স্বৈরতান্ত্রিক সিদ্ধান্ত ও পদক্ষেপের বিরুদ্ধে সকল বাম-প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দল, ব্যক্তিকে সোচ্চার হওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হচ্ছে।
বাম জোটের সমন্বয়ক ও বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক কমরেড রুহিন হোসেন প্রিন্স, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য নজরুল ইসলাম, বাসদ (মার্ক্সবাদী)’র সমন্বয়ক মাসুদ রানা, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের নির্বাহী সভাপতি আব্দুল আলী, মানস নন্দী, শহীদুল ইসলাম সবুজ ও রুবেল সিকদার প্রমুখ।
উল্লেখ্য, রাষ্ট্র ও সরকারবিরোধী বিভিন্ন কার্যক্রম বন্ধে ‘আইনসম্মতভাবে’ আড়িপাতার ব্যবস্থা চালু করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে এ তথ্য জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান।
মন্ত্রী বলেন, ‘ইন্টারনেটে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম মনিটরিংয়ের মাধ্যমে দেশ ও সরকারবিরোধী বিভিন্ন কার্যক্রম বন্ধে এনটিএমসিতে (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার) ওপেন সোর্স ইন্টেলিজেন্স টেকনোলজির (ওএসআইএনটি) মতো আধুনিক প্রযুক্তি সংযোজিত হয়েছে। একই সঙ্গে একটি ইন্টিগ্রেটেড ল ফুল ইন্টারসেপশন সিস্টেম, আইএলআইএস (আইনসম্মতভাবে মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেট মাধ্যমে যোগাযোগে আড়িপাতার ব্যবস্থা) চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এমএইচএন/এমএ