অত্যাবশ্যকীয় সেবায় ধর্মঘট নিষিদ্ধের বিল প্রত্যাহার দাবি

অত্যাবশ্যকীয় সেবায় ধর্মঘট নিষিদ্ধের বিল প্রত্যাহার ও অত্যাবশ্যকীয় সেবার নামে শ্রমিকদের ধর্মঘট আহ্বানের অধিকার কেড়ে নেওয়ার অপচেষ্টা বন্ধ করার দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট।
শনিবার (১৫ এপ্রিল) বিকেল ৪টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট ঢাকা নগরের উদ্যোগে এটি অনুষ্ঠিত হয়।
ঢাকা নগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান লিপনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব বুলবুল, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবু নাঈম খান বিপ্লব, সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক সেলিম মাহমুদ, নির্বাহী সদস্য রাহাত আহমেদ, এসএম কাদির, অ্যাডভোকেট ফারুক হোসেন, বাবু হাসান, ফজলুল হক শাহিন প্রমুখ।

মানববন্ধনে নেতৃবৃন্দ বলেন, আজকের শ্রম প্রতিমন্ত্রী একসময় শ্রমিক নেত্রী ছিলেন। আজ তিনিই সংসদে শ্রমিকদের দীর্ঘদিনের লড়াইয়ের ফলে অর্জিত ধর্মঘট আহ্বানের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নেওয়ার বিল উত্থাপনের মাধ্যমে তার পরিচয়কে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন। নেতৃবৃন্দ প্রশ্ন রাখেন, অত্যাবশ্যকীয় সেবা বলে যেসব খাতের কথা উল্লেখ্য করা হয়েছে সেখানে এই সরকারের গত ১৫ বছরে কতবার ধর্মঘট পালিত হয়েছে? যদি না হয়ে থাকে তাহলে কেন এখন ধর্মঘট নিষিদ্ধ করার উদ্যোগ নিতে হলো?
তারা আরো বলেন, এই আইনে যেকোনো খাতকে অত্যাবশ্যকীয় খাত হিসেবে ঘোষণা করার ক্ষমতা সরকারকে দেওয়া হয়েছে। একদিকে ধর্মঘট নিষিদ্ধ করার বিল উত্থাপন করা হচ্ছে, সেই সময়েই এমন লোক নিয়ে গার্মেন্টস শ্রমিকদের জন্য মজুরি বোর্ড গঠন করা হচ্ছে যিনি পূর্বেও মজুরি বোর্ডে শ্রমিক পক্ষের সদস্য হয়ে শ্রমিকের স্বার্থ রক্ষায় দৃঢ় ভূমিকা পালন করেননি। যার ফলে গার্মেন্টস শ্রমিকদের মধ্যে নির্ধারিত মজুরিতে তাদের দাবির প্রতিফলন হবে কি না সেই বিষয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। গত এক-দুই বছরে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের বাজারমূল্য প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। নিত্যপণ্যের বর্ধিতমূল্যের চাপে সরকারি কর্মচারীসহ সব ক্ষেত্রে নতুন পে-কমিশন, মজুরি-কমিশন, মজুরি বোর্ড গঠনের মাধ্যমে বাজার দরের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে মজুরি নির্ধারণের দাবি উঠেছে।
মজুরি বৃদ্ধির দাবিকে পাশ কাটাতে সরকার নতুন পে-কমিশন গঠনের পরিবর্তে ২০ শতাংশ মহার্ঘ্য ভাতার ঘোষণা দেবে বলে শোনা যাচ্ছে।
নেতৃবৃন্দ জানতে চান, জাতীয় নির্বাচনের মাত্র এক বছর আগে শিল্প মালিক, ব্যবসায়ী এবং বৈদেশিক বিনিয়োগকারীদের আস্থা অর্জন করতে সরকারের নির্বিচার ও বিনা বাধায় শ্রমশোষণের পরিবেশ বজায় রাখার সক্ষমতা প্রদর্শনের জন্যই কি ধর্মঘট নিষিদ্ধের প্রস্তাব? তাছাড়া শ্রমিকরা কাজ করে এমন কোন খাতটি অত্যাবশ্যকীয় নয়? ফলে ভবিষ্যতে এই আইনের দোহাই দিয়ে শ্রমিকদের ন্যায়সঙ্গত দাবি আদায়ের যেকোনো আন্দোলন এবং সংবিধান ও শ্রম আইন স্বীকৃত অধিকার কেড়ে নেওয়ার সুযোগ তৈরি হবে।
অবিলম্বে এই বিল প্রত্যাহারের দাবি জানান নেতৃবৃন্দ।
এমএ
