বিচ্ছিন্ন ও বিক্ষিপ্ত বক্তব্য নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি করা ঠিক হবে না

নির্বাচন নিয়ে কোনো সংশয় নেই, জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, কোনো বিচ্ছিন্ন বিক্ষিপ্ত বক্তব্যকে পুঁজি করে গোটা নির্বাচন নিয়ে চিন্তার সুযোগ নেই। একটা বিষয়ে একেকজন একেক ধরনের দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করতে পারে। নির্বাচন হবে না, বা নির্বাচন নিয়ে তাদের ভিন্ন চিন্তা আছে, এমন তো বলেনি। অতএব, এই বিচ্ছিন্ন বিক্ষিপ্ত বক্তব্য নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি করা ঠিক হবে না।
শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচনের অনুকূল পরিবেশ নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের বক্তব্য নিয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন হবে, সংশয়ের কোনো কারণ নেই। আপনারা সাংবাদিকরা তো বাইরের কেউ না দেশেরই মানুষ, আপনারা দেখবেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা কোনো চাপে নেই, তবে পুরনো দিনের কথা ভুলতে পারি না। ২০১৩, ১৪ সালের অগ্নিসংযোগের কথা ভুলতে পারি না। তারা তো আগুন ছাড়া কথা বলে না। শান্তি তারা আসলে মন থেকে চায় কিনা, এটা দেখতে হবে।
আরও পড়ুন
তিনি বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করে দেখিয়ে দেব, আমরা শান্তির পক্ষে। সতর্ক পাহারায় থাকতে হবে। এদের দুরভিসন্ধি আছে, সাম্প্রদায়িক আরও দুই একটা শক্তি নিয়ে তারা অপকর্ম করতে চাইবে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ফখরুল সাহেবের সব খেলা ধরে ফেলি। কী করবে, টেমস নদীর পাড় থেকে ধমক খায়। মাঝে মাঝে নার্ভাস দেখা যায়।
তিনি বলেন, আমরা মরতে হলেও মরবো তবুও মাঠ ছাড়ব না। এটা বাংলাদেশের আরেক মুক্তিযুদ্ধ। এটাতে জিততে পারব যদি ঐক্যবদ্ধ থাকতে পারি।
তিনি বলেন, বিএনপি কর্মী হত্যা মামলায় খোকন গ্রেপ্তার। অথচ অভিযোগ করছে, রাজনৈতিক কারণে গ্রেপ্তার হয়েছে। তাহলে কি আপনাদের কর্মী হত্যার বিচার হবে না? এ ক্ষেত্রে সরকার তো আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদেরও ছাড় দেয়নি। আপনি তো টেনেটুনে ২২ জনের নাম বলেছেন। আর আপনারা আমাদের ২২ হাজার নেতাকর্মীর ওপর নির্যাতনের স্টিম রোলার চালিয়েছেন। আমরা ভুলিনি।
ক্ষমতাসীন দলের এ নেতা বলেন, দুর্ভাগ্যের বিষয় তাদের সারাদেশের লোক আর আমাদের থানার লোকদের নিয়ে সমাবেশকে তুলনা করা হয়। যোগ-বিয়োগ আর তুলনা করতে মাথায় থাকতে হবে এটি, আমাদের এলাকার সমাবেশ। তাদের পুরো দেশের। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বেঁচে থাকতে উন্নয়নের অগ্রযাত্রা ব্যাহত করতে দেব না, এটা আমাদের প্রতিজ্ঞা। বাংলাদেশ নিয়ে কোনো ষড়যন্ত্র সফল হতে দেব না।
কাদের বলেন, আমরা অশান্তি করতে চাই না। কারণ আমরা ক্ষমতায়। আমাদের দ্বারা অশান্তি হওয়ার কোনো যৌক্তিক কারণ নেই। অশান্তি তারা চায়, যারা পরিবেশ নষ্ট করতে চায়। এদের মতলব সম্পর্কে সতর্ক থাকা প্রয়োজন। আমরা ভয় পাব কেন? আইআরআই একটা সমীক্ষা করেছে, সেই সমীক্ষায় দেখা গেছে, ৭০ ভাগ মানুষ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আস্থা রাখে। তাই নির্বাচন নিয়ে আমাদের ভয় পাওয়ার কিছু নেই।
তিনি বলেন, সার্বিক পরিস্থিতির আলোকে এ সমস্যাগুলোর সমাধান করতে চাই। এই অপশক্তিকে বার বার মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে দেওয়া উচিত নয়। এই অপশক্তির চিরতরে অবসান ঘটাতে হবে। আপনাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে থাকতে হব।
কাদের বলেন, এই অপশক্তির সঙ্গে আপস করতে পারি না। তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করেছে আদালত। এ ব্যবস্থা নিয়ে আমরা ফাইট করেছিলাম। কিন্তু এই ব্যবস্থাকে বিতর্কিত করেছে তারা। বিচারপতি খায়রুল হক সংবিধানকে কচুকাটা করেননি, বরং সঠিক জায়গায় পুনঃস্থাপন করেছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রয়োজন নেই, তিনি রায় দিয়েছেন, এটা কি অন্যায় করেছেন?
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, পৃথিবীর অনেক দেশ থেকে বাংলাদেশের ব্যবস্থা আরও আধুনিক ও পরিশীলিত। এটা আমরা বিদেশী কূটনীতিকদের বুঝাতে সক্ষম হয়েছি।
তিনি বলেন, বিএনপি দীর্ঘদিন ক্ষমতার বাইরে। যার কারণে নিজেদের ক্ষুধার আগুন নেভাতে মরণ কামড় দেবে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির ইতিহাস হলো অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল, ও স্বৈরশাসনের ইতিহাস। ভোট কারচুপির মাধ্যমে ক্ষমতা দখল ও হত্যা ধর্ষণের এবং দুর্নীতির ইতিহাস। বার বার বিশ্বে বাংলাদেশকে কালেমালেপন করেছে। দুর্নীতি করে নিজের আখের গোছায়।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের শান্তি উন্নয়ন অগ্রগতির অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করতে একটি চিহ্নিত মহল সন্ত্রাস করার চেষ্টা করছে। গণতান্ত্রিক ধারা ব্যাহত করার অপচেষ্টা করছে। বিএনপি জামায়াতের নেতৃত্বে দেশি বিদেশি মহল আবারও দেশে নৈরাজ্য করতে চায়।
কাদের বলেন, আপনাদের মনে আছে, এরাই ২০১৩, ২০১৪ ও ১৫ সালে অগ্নিসংযোগ ও মানুষের জানমালের ক্ষয়ক্ষতি করেছে। এই স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রধান অন্তরায়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয়, মহানগর শাখা ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
এমএসআই/এসকেডি