কে হবেন চট্টগ্রাম-১১ আসনের কাণ্ডারি

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে জমে উঠেছে চট্টগ্রাম-১১ আসনে নির্বাচনী প্রচারণা। এ আসনে নৌকার বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে মাঠে রয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী জিয়াউল হক সুমন।
আওয়ামী লীগের এই নেতা ভোটের মাঠে চ্যালেঞ্জ ছুড়েছেন নৌকার প্রার্থী আব্দুল লতিফকে। স্থানীয় পর্যায়ের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সমর্থনের পাল্লাও ভারী রয়েছে সুমনের দিকে। কেটলি প্রতীক পাওয়া স্বতন্ত্র প্রার্থী সুমন শেষ পর্যন্ত মাঠে থাকলে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে আভাস পাওয়া যাচ্ছে।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) ২৭, ২৮, ২৯, ৩০, ৩৬, ৩৭, ৩৮, ৩৯, ৪০ ও ৪১ নম্বর ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত চট্টগ্রাম-১১ আসন। দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের নিয়ন্ত্রক চট্টগ্রাম বন্দর, কাস্টমস, একাধিক ইপিজেডসহ নানা ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান এই এলাকায় অবস্থিত। এখানে মোট প্রার্থী হয়েছেন ৭ জন।
তাদের মধ্যে আওয়ামী লীগের লতিফ ও স্বতন্ত্রের সুমন ছাড়া বাকি প্রার্থীরা হলেন— ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের চেয়ার প্রতীকের প্রার্থী আবুল বাশার মুহাম্মদ জয়নুল আবেদীন, গণফোরামের উদীয়মান সূর্য প্রতীকের প্রার্থী উজ্জ্বল ভৌমিক, তৃণমূল বিএনপির সোনালী আঁশের প্রার্থী দীপক কুমার পালিত, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির আম প্রতীকের প্রার্থী নারায়ন রক্ষিত এবং বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির একতারা প্রতীকের প্রার্থী মো. মহি উদ্দিন।
আরও পড়ুন
তবে নির্বাচনী প্রচারণায় সক্রিয় রয়েছেন মাত্র দুই প্রার্থী। পতেঙ্গা, ইপিজেড, বন্দরটিলাসহ বিভিন্ন এলাকা আওয়ামী লীগের প্রার্থী আব্দুল লতিফ এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী সুমনের পোস্টার-ব্যানারে ছেয়ে গেছে। তারা দুজনই ঘুরছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে এবং দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতি।
স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বলছেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনে হঠাৎ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে উড়ে এসে জুড়ে বসেন আব্দুল লতিফ। যদিও ওইবার প্রথমে মহানগর আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজনকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে মনোনয়ন পাল্টে লতিফকে নৌকা প্রতীক তুলে দেওয়া হয়। সেই থেকে পরের প্রতিবারই আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বাগিয়ে নিয়েছেন ব্যবসায়ীদের এই নেতা।
নগর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের অভিযোগ, লতিফ ২০০৮ সালে মনোনয়নের আগে কোনো সময় আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। এরপর দলীয় প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত হলেও স্থানীয় নেতাকর্মীদের যথাযথ মূল্যায়ন তিনি করতে পারেননি। এ কারণে দিনে দিনে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে দূরত্ব শুধুই বেড়েছে।
মহানগর আওয়ামী লীগের লীগের উপদেষ্টা এ কে এম বেলায়েত বলেন, নেত্রী বলেছেন আওয়ামী লীগের হয়ে যারা এবার মনোনয়ন চেয়েছেন সবাই যোগ্য। তাছাড়া সবাইকে আমার নৌকা দেওয়ার সুযোগ নেই। কাজেই যাদের জনপ্রিয়তা আছে, তারা জিতে আসবেন স্বতন্ত্র হিসেবে। সুতরাং আমিও মনে করি সুমন কোনোভাবেই বিদ্রোহী প্রার্থী না। চট্টগ্রাম-১১ আসনের নৌকা পচা কাঠ দিয়ে বানানো। এ কারণে আমরা তার সঙ্গে নেই।

আরও পড়ুন
এ বিষয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী জিয়াউল হক সুমন বলেন, আওয়ামী লীগের নাম বিক্রি করে দেশের বাইরে হাজার কোটি টাকার সম্পদ গড়েছেন। প্রধানমন্ত্রীকে তিনি (লতিফ) একবার খালা ডাকেন আরেকবার ফুফু ডাকেন। দৃঢ়চিত্তে বলতে চাই, এবার আর তাকে সে সুযোগ দেবে না জনগণ। আমাদের লক্ষ্যমাত্রা রাজাকারমুক্ত ১১ আসন।
তিনি আরও বলেন, আমরা ভোটারদের ঘরে ঘরে যাচ্ছি। তাদের দুঃখের কথা শুনে খারাপ লাগছে। নির্বাচিত হলে এই এলাকার চিরায়ত সমস্যা গ্যাস না পাওয়া, পানি না পাওয়াসহ যাবতীয় সমস্যা সমাধান করব। অনেকদিন তো নিষ্পেষিত হয়েছে এই জনপদের মানুষ। এবার আমাকে সুযোগ দিলে এই এলাকার বাসিন্দারা সুখে-দুঃখে সবসময় আমাকে পাবেন।
এমআর/এনএফ