শেষ সময়েও প্রচারণায় ব্যস্ত চিত্রনায়ক ফেরদৌস
দরজায় কড়া নাড়ছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) সকাল ৮টা থেকে বন্ধ হবে প্রচার-প্রচারণা। শেষ সময়েও ব্যস্ত সময় পার করছেন ঢাকা-১০ আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী চিত্রনায়ক ফেরদৌস আহমেদ।
বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) দিনব্যাপী গণসংযোগ আর ভোটারদের নানান প্রতিশ্রুতি দিয়ে নৌকায় ভোট চেয়েছেন তিনি। আর বিকেল থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে ঢাকা-১০ আসনের আওতাধীন বিভিন্ন এলাকার ও ওয়ার্ডে মিছিল এবং র্যালিও করেছেন নৌকার এই মাঝি।
সার্বিকভাবে শেষ সময়ের প্রচার-প্রচারণায় সন্তোষ প্রকাশ করে নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে আশা প্রকাশ করেন চিত্র নায়ক ফেরদৌস আহমেদ। তিনি বলেন, ঢাকা-১০ আসন বাংলাদেশের ৩০০টি আসনের মধ্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এখানে অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্থান ও স্থাপনা রয়েছে। আমি ইতোমধ্যেই বলেছি নির্বাচিত হলে এই আসনকে সারা দেশের জন্য একটি মডেল আসন হিসেবে গড়ে তুলব। ঢাকা-১০ হবে দশে ১০। শুধু কথায় নয় বরং কাজেও এটি বাস্তবায়ন করা হবে।
এছাড়া জয়ের ব্যাপারে আশা প্রকাশ করলেন ঢাকা-১০ আসনের আওয়ামী লীগের নির্বাচনী সমন্বয়ক টিমের সদস্যসচিবের ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট কাজী মোরশেদ হোসেন কামাল। তিনি বলেন, সব মিলিয়ে আমরা ব্যস্ত সময় কাটিয়েছি। পুরো সময় জুড়েই নির্বাচনে প্রচারণায় মানুষের কাছাকাছি পৌঁছেছি। নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টার পর আর প্রচারণা চালাব না। এই কয়েক দিনে আমরা ভোটারদের দরজায় গিয়েছি। সাধারণ ভোটারদের প্রচুর সাড়া পেয়েছি। মানুষ ভোট দেওয়ার জন্য অপেক্ষায় রয়েছে।
ভোটের দিন বিএনপির হরতাল কর্মসূচির বিষয়ে তিনি বলেন, মানুষ বিএনপির এসব কর্মসূচি গ্রহণ করছে না। তারা সুন্দর পরিবেশ চায়। উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে ৭ জানুয়ারি সবাই ভোট কেন্দ্রে এসে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবে।
আরও পড়ুন
অপরদিকে ঢাকা-১০ আসনের ভোটারদের জন্য ২৪টি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ফেরদৌস আহমেদ। সেগুলো হলো—
১. স্মার্ট সুবিধা প্রাপ্তিতে এই আসন হবে দশে ১০।
২. সেবার জন্য আমার কাছে আসতে হবে না। সেবাই আপনাদের দুয়ারে পৌঁছে যাবে।
৩. এই আসনের প্রতিটি ভোটারের কাছে ৭×২৪ নীতির আলোকে নাগরিক সেবা পৌঁছানো সুনিশ্চিত করা হবে।
৪. প্রতিটি সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান যাতে সুষ্ঠু সমন্বয়ে পরিসেবা দিয়ে যেতে পারে তা নিশ্চিত করা হবে।
৫. ধানমন্ডি লেক ও কলাবাগান পান্থকুঞ্জ উদ্যানকে আরও আধুনিকায়ন ও সৌন্দর্যমণ্ডিত করা হবে।
৬. শিশু-কিশোরদের জন্য সুষ্ঠু ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশে খেলাধুলার জন্য প্রতিটি পার্ক ও উন্মুক্ত স্থানকে উন্নত ও আধুনিকায়ন করা হবে।
৭. চারটি নতুন সামাজিক অনুষ্ঠান কেন্দ্র (ধানমন্ডি, কলাবাগান, নিউ মার্কেট, হাজারীবাগ) স্থাপন করা হবে।
৮. হাজারীবাগ কাঁচাবাজারকে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন মার্কেটে রূপান্তর করা হবে।
৯. প্রতিটি এলাকার সকল রাস্তার মান আরও উন্নত করা হবে। রাস্তাগুলো যেন উন্নত বিশ্বের রাস্তার মতো ময়লা-আবর্জনা ও ধুলামুক্ত হয় সে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
১০. নিয়মিতভাবে নিত্য দিনের ক্লিনিং কর্মসূচিগুলোকে আরও গতিশীল করা হবে।
১১. প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আধুনিকায়ন ও শিক্ষার মান উন্নয়নে সহযোগিতা প্রদান করা হবে।
১২. ভূগর্ভস্থ ক্যাবলের মাধ্যমে বিদ্যুৎ, ইন্টারনেটসহ অন্যান্য পরিসেবার তার লাইনগুলোর জঞ্জাল নিরসন করা হবে।
১৩. প্রতিটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানকে উন্নত করার পাশাপাশি নতুন-নতুন সুবিধাদির আওতায় আনা হবে।
১৪. সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ডে-কেয়ার সেন্টার ও ব্রেস্ট ফিডিং সেন্টার চালু করা হবে।
১৫. নির্বাচনী এলাকায় সার্কুলার বাস সার্ভিস চালু করা হবে।
১৬. মেট্রোরেল ও আদি বুড়িগঙ্গা ঘেঁষে এক্সপ্রেসওয়ের ব্যবস্থা করা হবে।
১৭. আন্ডারগ্রাউন্ড পার্কিং সুবিধাসহ আধুনিক মাল্টিপারপাস কমিউনিটি সেন্টারের নির্মাণ দ্রুত সম্পন্ন করা হবে।
১৮. ট্র্যাফিক জ্যাম নিরসনে যত্রতত্র স্ট্যান্ড বা স্টপেজ বন্ধ করে যাত্রী ছাউনি আধুনিকায়ন করা হবে।
১৯. মাদক, সন্ত্রাস ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করা হবে।
২০. ঢাকা-১০ এর প্রতিটি এলাকা একই আদলে আধুনিকায়নের সব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
২১. নিম্নআয়ের মানুষের আবাসনের জন্য উন্মুক্ত স্থানে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ফ্ল্যাট নির্মাণের ব্যবস্থা ও টিসিবির পণ্য বিতরণের পরিমাপ বাড়ানো হবে।
২২. সুপেয় ও ব্যবহারযোগ্য পানির সরবরাহ শতভাগ নিশ্চিত করা হবে।
২৩. ড্রেনেজ ব্যবস্থাকে আরও উন্নত করা হবে। জলাবদ্ধতা সমস্যার সমাধান করা হবে।
২৪. প্রতিটি এলাকায় সবুজায়নের ব্যবস্থা করা হবে এবং বিনামূল্যে গাছের চারা সরবরাহ করা হবে।
এছাড়া, জনগণের আপনজন ও সেবক হিসেবে ফেরদৌসের দুয়ার সবসময় জনগণের জন্য খোলা থাকবে বলেও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ফেরদৌস।
আরএইচটি/এমএ