রাজনৈতিক অগ্রগতির জন্য অর্থনৈতিকভাবে নারীর ক্ষমতায়ন গুরুত্বপূর্ণ

বাংলাদেশের রাজনৈতিক অগ্রগতির জন্য অর্থনৈতিকভাবে নারীর ক্ষমতায়ন গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন রাজনীতিবিদরা। তারা বলেন, নারীর ক্ষমতায়নের জায়গা দেখতে হচ্ছে নারীর অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে কতটা এগিয়ে তার ওপর। নির্বাচনে দলের প্রার্থী মনোনয়নে ৩৩ শতাংশ নারীদের দিতে হবে এমন বাধ্যবাধকতা নির্বাচন কমিশনকে নিশ্চিত করতে হবে। নারীর ক্ষমতায়নের জায়গা দেখতে হচ্ছে নারীর অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে কতটা এগিয়ে।
রোববার (১০ মার্চ) আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষ্যে ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল আয়োজিত ‘বাংলাদেশে নারীর রাজনৈতিক নেতৃত্বের অগ্রগতির জন্য অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন’ শীর্ষক জাতীয় সম্মেলনে এসব কথা বলেন বক্তারা। ঢাকার একটি হোটেলে এ সম্মেলনে বড় তিন রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির শতাধিক নারী নেত্রী অংশ নেন।
নারী দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত এ সম্মেলনের অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের সঙ্গে বাংলাদেশে রাজনৈতিক নেতৃত্ব উন্নয়নেরে ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ অন্বেষণ করা।
বাংলাদেশে নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন ও তাদের রাজনৈতিক অংশগ্রহণের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ যোগসূত্র বিষয়ে সম্মেলনের শুরুতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের প্রিন্সিপাল ডিরেক্টর ড. মো. আব্দুল আলীম। বৈশ্বিক নানা বিশ্লেষণ তুলে ধরে তিনি দেখান কীভাবে আর্থিক স্বাধীনতা নারীদের রাজনৈতিক সম্পৃক্ততাকে উৎসাহিত করে এবং রাজনৈতিক দলগুলোকে শক্তিশালী করে।
বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে নারীদের হলফনামায় দেওয়া সম্পদের হিসাব বিশ্লেষণ করে করে তিনি বলেন, অপেক্ষাকৃত উচ্চ আয় এবং সম্পদের অধিকারী প্রার্থীরা রাজনৈতিক অংশগ্রহণের বাধা অতিক্রম করতে পেরেছে এবং দলীয় সুযোগ বেশি লাভ করেছেন। নারীদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধিতে রাজনৈতিক দল, নির্বাচন কমিশন ও রাষ্ট্রীয় কী উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে সে বিষয়ে প্রবন্ধে সুপারিশ করা হয়। পাশাপাশি বেসরকারি ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর ভূমিকাও তুলে ধরা হয়।
আরও পড়ুন

সম্মেলনে আওয়ামী লীগের গবেষণা ও তথ্য বিষয়ক সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ বলেন, নারীর জন্য বিনিয়োগ একটি সার্বিক বিষয়। শুধু অর্থ দিলেই হবে না, সেই অর্থ খরচ করার ব্যবস্থাপনাও থাকতে হবে।
সম্মেলনে উঠে আসা নির্বাচনে নারী প্রার্থীদের জামানত বাজেয়াপ্তের বিধান বাতিলের প্রস্তাব সমর্থন করে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, গণমাধ্যমকে এক্ষেত্রে যুক্ত করতে হবে। নির্বাচনের সময় নারী প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণায় দলীয়ভাবে ফান্ড গঠন করা যেতে পারে।
জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান আহসান আদেলুর রহমান বলেন, দলের প্রার্থী মনোনয়নে ৩৩ শতাংশ নারীদের দিতে হবে– এমন বাধ্যবাধকতা নির্বাচন কমিশনকে নিশ্চিত করতে হবে।
প্রিপট্রাস্ট্রের নির্বাহী পরিচালক অ্যারোমা দত্ত বলেন, নারীর ক্ষমতায়নের জায়গা দেখতে হলে নারী অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে কতটা এগিয়ে তা দেখতে হবে।
নারী-পুরুষের ঐতিহাসিক বৈষম্য তুলে ধরে ব্রতী সমাজ কল্যাণ সংস্থার নির্বাহী পরিচালক শারমীন মুরশিদ বলেন, নারীদের এগিয়ে যেতে আরও সংগ্রাম করতে হবে।
জাতীয় সম্মেলনের সূচনা বক্তব্য দেন ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের ডেপুটি চিফ অব পার্টি (প্রোগ্রাম) আমিনুল এহসান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সিনিয়র ডিরেক্টর লিপিকা বিশ্বাস ও ডেপুটি ডিরেক্টর অনিন্দ্য রহমান। সমাপনী বক্তব্য দেন ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের চিফ অব পার্টি ডানা এল ওল্ডস।
এএইচআর/এসএসএইচ