নির্দোষ ব্যক্তি যেন গ্রেফতার না হয়, প্রশাসনকে সতর্ক থাকার অনুরোধ

সুনির্দিষ্ট অভিযোগে দেশে তাণ্ডব সৃষ্টিকারীদের গ্রেফতারের বিষয়ে সমর্থন থাকলেও নির্দোষ কোনো ব্যক্তি যেন গ্রেফতার বা হয়রানির শিকার না হয় সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে প্রশাসনকে অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ঐক্যজোট। একইসঙ্গে তারা পাঁচ দফা দাবিও জানিয়েছে।
মঙ্গলবার (৪ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়।
তাদের অন্যান্য দাবিগুলো হচ্ছে— ওইসব তাণ্ডবে কিছু সরলমনা আলেম না বুঝে ষড়যন্ত্রকারীদের ফাঁদে পা দিয়েছিলেন, তারা যেন হয়রানির শিকার না হন সেদিকে বিশেষ ভাবে নজর রাখতে হবে; আবাসিক বন্ধ থাকা হাফিজিয়া মাদরাসাগুলো খুলে দিতে হবে; গরিব কওমি মাদরাসার শিক্ষকদের অনুদান দিতে হবে এবং পরিস্থিতি বিবেচনা করে দেশের সব কওমি মাদরাসা খুলে দিতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সংগঠনটির চেয়ারম্যান মিছবাহুর রহমান চৌধুরী বলেন, সরকারের সঠিক ও সময়োপযোগী পদক্ষেপের কারণে এবং দেশবাসীর সমর্থনে দেশ এক গভীর ষড়যন্ত্রের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে। আল্লামা আহমদ শফির ইন্তেকালের পর হেফাজতে ইসলাম আর্ন্তজাতিক উগ্রবাদীদের অনুসারী, ক্ষমতালোভী একদল আলেম নামধারী কুতুবের হাতে চলে যায়। তারা জামায়াত-শিবির ও তাদের মিত্রদের গোপন শলা-পরামর্শের মাধ্যমে কওমি মাদরাসাগুলোকে কুক্ষিগত করে হেফাজতের ব্যানারে জ্বালাও-পোড়াও, লুটপাট, হত্যা ও বিরোধীদের ঘরবাড়িতে আগুন দিয়েছে।
তিনি বলেন, তারা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী পালনে বাধা দেওয়ার মাধ্যমে দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করে সরকার পতনের লক্ষ্যে বিদেশি ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করতে চাচ্ছিল। আলেম নামধারী জামায়াত ও হেফাজতের একদল লোক হেলিকপ্টার নিয়ে সারা বাংলাদেশে ওয়াজ ও তাফসির মাহফিলের নামে মিথ্যাচার করেছে। কোরআন হাদিসের অপব্যাখ্যা দিয়ে পবিত্র জিহাদের কথা বলে যুব সমাজকে অন্য দিকে ধাবিত করেছে।
ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান আরও বলেন, ষড়যন্ত্র এখনও শেষ হয়নি। ছদ্মবেশীরা রং বদল করে সরকার ও দেশবাসীকে ধোঁকা দেওয়া নতুন পরিকল্পনা করেছে। এ ধরনের অপতৎপরতা শুধু আইনের মাধ্যমে বন্ধ করা যাবে না। এর জন্য উস্কানিমূলক বক্তব্য বন্ধ করতে হবে ও ব্যক্তিপূজা বন্ধ করতে হবে। কওমি মাদরাসার ঐতিহ্য, শিক্ষা, আমল-আখলাক রক্ষা করতে এবং মাদরাসাগুলোর ভাবমূর্তি পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য দেশের শীর্ষস্থানীয় ওলামা-মাশায়েখ ইমাম-খতিব ইসলামী ব্যক্তিত্বদের নিয়ে একটি শক্তিশালী ইসলামী কাউন্সিল গঠন করার জন্য শাইখুল হাদিস আল্লামা রুহুল আমিন খানকে আহ্বায়ক করে ১১ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী জুন মাসে একটি মহা সম্মেলনের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বারিধারা মাদরাসার সাবেক প্রিন্সিপাল শাইখুল হাদিস আল্লামা ওয়াহিদুজ্জামান, মানিকগঞ্জের দারুল উলুম মাদরাসার প্রিন্সিপাল শাইখুল হাদিস মুফতি মনিরুজ্জামান রাব্বানী, বাংলাদেশ ইসলামী ঐক্যজোটের সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি মাওলানা বোরহান উদ্দিন আজিজী, মুফতি মাওলানা তাজুল ইসলাম প্রমুখ।
এমএইচএন/এসএসএইচ