দেশের ইতিবাচক পরিবর্তনের অগ্রনায়ক শেখ হাসিনা

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা সেদিন ফিরে এসেছিলেন বলেই এ করোনা সংকটেও বাংলাদেশে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। বাংলাদেশের ইতিবাচক পরিবর্তনের অগ্রনায়ক শেখ হাসিনা। তাকে ঘিরে সুন্দর আগামীর স্বপ্ন দেখে বাংলাদেশ।
সোমবার (১৭ মে) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, এ দিনটি বাঙালি জাতি তথা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অনুসারী ও স্বাধীনতার স্বপক্ষ শক্তি আপামর জনতার জন্য একটি বিশেষ দিন। কারণ বাংলাদেশের ইতিহাসে দিনটি যদি না আসত, তাহলে বঙ্গবন্ধু মুজিবের নাম এদেশের ইতিহাস থেকে মুছে ফেলা হত। স্বাধীনতাবিরোধী চিহ্নিত রাজাকার আলবদর ও ধর্মীয় উগ্রবাদীরা জাতীয় পতাকা গাড়িতে উড়িয়ে ঘুরে বেড়াত।
তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট দেশীয় সামরিক ও সাম্রাজ্যবাদের বেসামরিক চক্রের ষড়যন্ত্রে সামরিক বাহিনীর কতিপয় উচ্ছৃঙ্খল সদস্য স্বাধীনতা আন্দোলনের একক নেতা আমাদের প্রিয় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করে। এই হত্যাকাণ্ডে বঙ্গববন্ধুর আদর্শের অনুসারী নেতাকর্মীদের সঙ্গে সমগ্র জাতি কিংকর্তব্যবিমূঢ় ও হতবিহ্বল হয়ে পড়ে। ফলে কোনো প্রতিরোধ-প্রতিবাদ বা বিভক্তিহীন পরিবেশের মধ্যে ষড়যন্ত্রকারী চক্রটি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করে নেয়।
তিনি আরও বলেন, জাতির পিতার জ্যেষ্ঠ কন্যা আজকের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাত্র ২৭ বছর ১০মাস ১৭দিন বয়সে পিতা-মাতা ভ্রাতৃবধূ একমাত্র চাচাসহ পরিবারের ১৭জন আপনজনকে হারিয়ে একমাত্র ছোট বোন শেখ রেহানা, স্বামী ও দুই সন্তানকে নিয়ে নানা প্রতিকূলতার মধ্যে প্রবাসে নির্বাসিত জীবন-যাপন করতে থাকেন। তিনি নীরবে মাতৃভূমির রাজনৈতিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে থাকেন। বঙ্গবন্ধুবিহীন বাংলাদেশে জগদ্দল পাথরের মতো রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় চেপে বসা সামরিক স্বৈরশাসকদের মামলা-হামলা, নির্যাতন-নিপীড়নে দিশেহারা আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও স্বাধীনতার স্বপক্ষের মানুষ প্রত্যক্ষ করতে থাকেন নেতৃত্বশূন্য দলে ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব প্রত্যাশীদের দ্বন্দ্ব এবং প্রতিযোগিতার অশুভ কার্যক্রম।
দলের সভাপতিমণ্ডলীর এ সদস্য বলেন, ঠিক এমনি এক পরিবেশে ১৯৮১ সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনে বহুধা বিভক্ত দলকে ঐক্যবদ্ধ করতে সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের প্রত্যাশা পূরণে ৩৩ বছর চার মাস ১৭দিন বয়সে দেশের সর্ববৃহৎ এবং প্রাচীনতম রাজনৈতিক দলটির সভাপতি নির্বাচিত হন জাতির পিতার কন্যা শেখ হাসিনা। মানবতার জননী, নির্ভীক জননী আজকের প্রধানমন্ত্রী সফল রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা। সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার তিন মাস একদিন পর ১৯৮১ সালের ১৭ই মে সম্পূর্ণ প্রতিকূল পরিবেশ জেনেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পিতামাতা ভাইবোন বিহীন দেশের জনগণের টানে স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করেন।
দেশে ফেরার পর চার দশকে শেখ হাসিনার লড়াই-সংগ্রাম, আন্দোলন ও রাষ্ট্র পরিচালনার অগ্রযাত্রার অপ্রতিরোধ্য পথচলার প্রসঙ্গ তুলে ধরে জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, আজকে প্রত্যাবর্তনের চার দশকে ব্যক্তি শেখ হাসিনাকে বরাবরই দেখা গেছে কল্যাণমুখী মানসিকতায় যেকোনো দুর্যোগময় পরিস্থিতিতে সব সামলে নেওয়ার বলিষ্ঠ নেতৃত্বের ভূমিকায়। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দেশের জন্য সুকৌশলে তিনি নেতৃত্ব দিয়ে চলেছেন। প্রাকৃতিক আর মনুষ্যসৃষ্ট সব বাধা-বিপত্তির বিপরীতে পিতৃহারা শেখ হাসিনা যখন ঢাকায় ফিরছিলেন, সেই সময়টাতেও প্রকৃতি ছিল এক রুদ্রমূর্তির বাতাবরণে। কালবৈশাখী ঝড় সামলে চলা শুরু তো সেই থেকেই।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজও এক অদৃশ্য ঝড়ের মুখোমুখি। নানা সূচকে দেশ যখন এগিয়ে যাচ্ছিল, সত্যিকারের সোনার বাংলা হয়ে উঠতে, ঠিক তখনি বৈশ্বিক মহামারির বাধা এসে হাজির। করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এখন পুরো জাতি। এর মধ্যেও থেমে নেই এর করালগ্রাস থেকে উত্তরণের চেষ্টা। যার নেতৃত্ব দিচ্ছেন আমাদের সেই নেত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা সফল রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা। ভয়কে জয় করে সেদিন তিনি ফিরে এসেছিলেন বলেই বাংলাদেশ আজ এই করোনা সংকটেও মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। বাংলাদেশের ইতিবাচক পরিবর্তনের অগ্রনায়ক তিনি।
সভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সাদেক খান। বঙ্গবন্ধু এভিনিউ প্রান্তে বক্তব্য রাখেন দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচি প্রমুখ।
এইউএ/আরএইচ