৫৩ বছরেও কোনো হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত হয়নি : ড. মাসুদ

স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও কোনো হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত পরিলক্ষিত হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ।
বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব সাইকিয়াট্রিস (বিএপি) আয়োজিত বিডিআর হত্যাকাণ্ডে শহীদ ল্যাফটেনেন্ট কর্নেল ডা. লুৎফুর রহমান খান স্মারক বক্তৃতা- ২০২৫ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের পর দেখা গেছে সরকার দায়সারা একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। ওই কমিটিকেও স্বাধীনভাবে নিরপেক্ষ তদন্ত করতে দেওয়া হয় না। আবার সরকারের আজ্ঞাবহ তদন্ত কমিটিকেও দেখা যায় গড়িমসি করে কালক্ষেপণ করতে। দীর্ঘসূত্রিতার ফলে শেষ পর্যন্ত প্রকৃত ঘটনা ধামাচাপায় পড়ে যায়। এই সুযোগে অপরাধীরা পার পেয়ে যায়।
তিনি আরও বলেন, পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় অন্তবর্তীকালীন সরকার তদন্ত কমিশন গঠন করেছে। তদন্ত কমিশন প্রভাবিত হয় এমন কোনো বক্তব্য থেকে দায়িত্বশীলদের বিরত থাকতে হবে। গতকাল পর্যন্ত মিডিয়ায় যে বক্তব্য শুনা গেছে তাতে মনে হয় গঠিত কমিশন স্বাধীনভাবে নিরপেক্ষ তদন্ত কাজ শেষ করতে পারবে না।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের অস্তিত্বে আঘাত করতে ভারত পিলখানা হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করেছে উল্লেখ করে ছাত্র শিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় এ সভাপতি বলেন, কারণ পিলখানা হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে দেশপ্রেমিক সেনা কর্মকর্তাদের হত্যা করে হত্যার দায় বিডিআরের ওপর চাপিয়ে দিয়ে এই বাহিনী বিলুপ্তি করে নিজস্ব লোক দিয়ে নতজানু একটি বাহিনী গঠন করবে। এতে সীমান্তে ভারতীয় আধিপত্যবাদ বিস্তারের পথ সুগম হবে। ভারতের সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেছে শেখ হাসিনা।
ড. মাসুদ আরও বলেন, ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি বিডিআর দরবার হলে শেখ হাসিনা উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও তিনি সেখানে না গিয়ে গণভবনে বসে এই হত্যাকাণ্ড পরিচালনা করেছেন। বিডিআর জোয়ানেরা সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের আটক করে রেখেছে, গুলি চালাচ্ছে সেনাপ্রধানকে সংবাদ দেওয়ার পরও তিনি কোনো পদক্ষেপ নেননি। কারণ এই হত্যাকাণ্ড ভারতের ইচ্ছায় শেখ হাসিনা সরকারের মদদে সংঘটিত হচ্ছে।
মাসুদ বলেন, পিলখানা হত্যাকাণ্ডে ৫৭ জন উচ্চপদস্থ সেনাকর্মকর্তাকে হত্যা করা হয়। যেটি পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকেও হার মানিয়েছে। ১৯৭১ সালে পাক বাহিনীর হাতেও বাংলাদেশের এতো উচ্চপদস্থ সেনাকর্মকর্তা হত্যার শিকার হয়নি। ঐ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের বাঁচাতে তদন্ত কমিশনকে এখন প্রভাবিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে মনে হয়। এমনটি হলে এ দেশের জনগণ মেনে নেবে না। নতুন বাংলাদেশে কাউকে জনগণ, ক্ষমতার অপব্যবহার করতে দেবে না। কারো যদি ক্ষমতার অপব্যবহারের চিন্তা থাকে তবে সেখান থেকে ফিরে আসার আহ্বান জানান ড. মাসুদ।
বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব সাইকিয়াট্রিসের আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. আবদুল মোত্তালিবের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব অধ্যাপক ডা. নিজাম উদ্দিনের পরিচালনায় রাজধানীর জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের কনফারেন্স রুমে অনুষ্ঠিত সভায় বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী, সেনাবাহিনীর তৎকালীন অফিসার, সেনা সদস্য ও বিডিআর পরিবারের সদস্য এবং জেল ফেরত বিডিআর সদস্যবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
জেইউ/এমএন