নিবন্ধন আবেদনের সময় বাড়াতে ইসিকে চিঠি দিলো এনসিপি

নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নিবন্ধনের আবেদনের সময়সীমা ৯০ দিন বাড়ানোরে অনুরোধ জানিয়েছে নির্বাচন কমিশনকে (ইসি)। সেই সঙ্গে দলটির প্রতিনিধি দল রোববার সিইসির সঙ্গেও বৈঠকের কথা রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) নির্বাচন কমিশন সচিবের দপ্তরে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে।
সিইসির একান্ত সচিব আশরাফুল আলম ও এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সংস্কার সময়ন্ব কমিটির কো-সারোয়ার তুষার অর্ডিনেটর এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নির্বাচন কমিশন বলছে, ঘোষিত সময় ২০ এপ্রিল পর্যন্ত অপেক্ষা করে সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে কমিশন পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে। ডিসেম্বরে ভোটের লক্ষ্য ধরে ১০ মার্চ গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে নির্বাচন কমিশন-ইসি। ২০ এপ্রিল হচ্ছে আবেদনের শেষ সময়সীমা।
জানতে চাইলে সিইসি একান্ত সচিব বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবের দপ্তরে এনসিপির পক্ষ থেকে সংস্কার ও দল নিবন্ধনের সময় বাড়ানোর বিষয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। দলটির প্রতিনিধি দলের সঙ্গে রোববার (২০ এপ্রিল) দুপুরে সিইসির বৈঠকের সময়সূচি রয়েছে।
আরও পড়ুন
এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার জানান, মৌলিক সংস্কার ও নতুন দল নিবন্ধনের জন্য আবেদনের সময়সীমা ন্যূনতম ৯০ দিন বাড়ানোর অনুরোধ জানানো হয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের একটি টিম ইসির সঙ্গে দেখা করে উদ্বেগগুলো জানাবে। সেখানে নিবন্ধন সময়সীমা বাড়ানোসহ বেশ কিছু বিষয়ে আমাদের আলাপ হবে।
চিঠিতে যা বলছে এনসিপি
ঐতিহাসিক জুলাই- আগস্ট ২৪-গণ-অভ্যুত্থানের ধারাবাহিকতায় গণমানুষের প্রত্যাশার আলোকে প্রতিষ্ঠিত হয় জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। গণ-অভ্যুত্থানের পরে ড. মোহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার বিভিন্ন সংস্কারমূলক কার্যক্রম শুরু করে। তন্মধ্যে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারের জন্য একটি কমিশন গঠন করা হয় এবং উক্ত কমিশন একটি প্রতিবেদনসহ তাদের সুপারিশ কর্তৃপক্ষের নিকট প্রদান করলেও অদ্যাবধি মৌলিক সংস্কার কার্যক্রমের দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি নেই।
নির্বাচন কমিশনের মৌলিক সংস্কার এবং বিদ্যমান আইন যুগোপযোগী না করেই বর্তমান নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের জন্য গত ১০ মার্চ, ২০২৫ ইং তারিখে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। সংস্কারের পূর্বেই তড়িৎ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিমণ্ডলে সমালোচনার জন্ম দেয়।
২০০৮ সালের রাজনৈতিক দল নিবন্ধন বিধিমালা ও প্রাসঙ্গিক আইনের অধীনে রাজনৈতিক দল নিবন্ধন শর্তাবলিসমূহ সম্পূর্ণ অযৌক্তিক ও অসাংবিধানিক। পূর্বের স্বৈরাচারী সরকারের আমলে তৈরি এই বিধিগুলো রাজনৈতিক বহুত্ববাদকে সংকুচিত এবং ক্ষমতা কুক্ষিগত করার জন্য প্রণীত।
নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন নিজেই জেলা পর্যায় ১০% এবং উপজেলা পর্যায়ে ৫% কার্যালয় স্থাপনের শর্ত সহজীকরণের পাশাপাশি প্রতি পাঁচ বছরে নিবন্ধিত দলের নিবন্ধন নবায়নের বাধ্যবাধকতার প্রস্তাবের কথাও তুলে ধরে এনসিপি।
সুতরাং বর্তমানের নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সুপারিশের আলোকে প্রয়োজনীয় আইন ও বিধি প্রণয়ন বা সংশোধনপূর্বক নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু হওয়া দরকার।
একই সঙ্গে মৌলিক সংস্কারের আলোকে নির্বাচন কমিশন পুনগঠন, নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন, বিদ্যমান নিবন্ধিত দলের নিবন্ধন হালনাগাদ করাও আবশ্যক। এমতাবস্থায়, অনতি বিলম্বে নির্বাচন কমিশন সংক্রান্ত মৌলিক সংস্কার সাধন এবং নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের জন্য আবেদনের সময়সীমা অনুন্ন ৯০ দিন বর্ধিত করার অনুরোধ জানায় এনসিপি।
এসআর/এআইএস