জুলাইয়ের বীর-জনতাকে আরেকটু ধাক্কা দিয়ে ফ্যাসিবাদ নির্মূল করতে হবে

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, ফ্যাসিবাদ নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত গণঅধিকার পরিষদ ঘরে ফিরবে না। ফ্যাসিবাদ নির্মূলে আজ থেকে গণঅধিকার পরিষদের প্রতিরোধ শুরু হয়েছে। গণঅভ্যুত্থানের অংশীদার রাজনৈতিক দলগুলোকে আওয়ামী লীগ প্রশ্নে অবস্থান পরিষ্কার করার আহ্বান জানাই। জুলাইয়ের বীর-জনতাকে আরেকটু ধাক্কা দিয়ে ফ্যাসিবাদ নির্মূল করতে হবে।
শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) রাজধানীর মোহাম্মদপুরে বসিলা বাসস্ট্যান্ডের পাশে গণসমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি। জুলাই-আগস্টের গণহত্যার বিচার ও আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে গণসমাবেশ করেছে গণঅধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগর উত্তর।
গণসমাবেশে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি বলেন, গণঅভ্যুত্থানের ৮ মাসেও গণহত্যার বিচার ও গণহত্যাকারীদের গ্রেপ্তারে দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না। গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত ও আধিপত্য কায়েমে ব্যস্ত হয়ে গেছে। যে কারণে আওয়ামী ফ্যাসিবাদীরা রাজপথে নেমে হুঙ্কার দিচ্ছে। জুলাই বিপ্লবের পর দলগুলো নিজেদের সমীকরণ মেলাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। যে কারণে অভ্যুত্থানের ৮ মাস পার হলেও নিরীহ ছাত্র-জনতার ওপর যারা হামলা চালিয়েছে, গুলি চালিয়েছে তাদের বিচার করা সম্ভব হয়নি।
‘প্রশাসন আগের মতো দলবাজি শুরু করছে। ২/১টি দলের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তাদের কাজ চালাতে চাইছে। প্রশাসনের উদ্দেশ্যে বলতে চাই যারা দলবাজি করবে তাদের পরিণতি হারুন-বেনজীরদের মতো হবে।’
আরও পড়ুন
তিনি বলেন, সড়ক-পরিবহন, কলকারখানা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন এলাকায় এখনো চাঁদাবাজি-দখলবাজি চলছে। কিশোর গ্যাং, মাদক ব্যবসায়ীসহ অপরাধীদের রাজনৈতিক নেতারা শেল্টার দিচ্ছে, জনগণ এগুলো পছন্দ করছে না। এদের বিরুদ্ধে জনগণকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। এ দেশের বিভিন্ন গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রাম, অধিকার আদায়ে সাধারণ শ্রমজীবী মানুষ, কৃষক-শ্রমিক জীবন দেয় আর সুযোগ-সুবিধা ভোগ ভাঁওতাবাজ ও ভণ্ড নেতারা, ওপর তলার কিছু লোকেরা। তাই সাধারণ এখন নেতৃত্ব এগিয়ে আসতে হবে। স্বৈরতান্ত্রিক ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্রের সংস্কার করে গণতান্ত্রিক ও মানবিক রাষ্ট্র গড়ে তুলতে হবে।
নুরুল হক নুর বলেন, ফ্যাসিবাদ নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত গণঅধিকার পরিষদ ঘরে ফিরবে না। ফ্যাসিবাদ নির্মূলে আজ থেকে গণঅধিকার পরিষদের প্রতিরোধ শুরু হয়েছে। গণঅভ্যুত্থানের অংশীদার রাজনৈতিক দলগুলোকে আওয়ামী লীগ প্রশ্নে অবস্থান পরিষ্কার করার আহ্বান জানাই। জুলাইয়ের বীর-জনতাকে আরেকটু ধাক্কা দিয়ে ফ্যাসিবাদ নির্মূল করতে হবে। বাংলাদেশ থেকে ফ্যাসিবাদকে চিরতরে উৎখাত করতে জুলাই আন্দোলনের সব অংশীজনকে একত্রে কাজ করার আহ্বান জানাই।
তিনি আরও বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহতের সুচিকিৎসা ও ক্ষতি পূরণ নিয়েও রাজনীতি চলছে, যা মোটেও কাম্য নয়। বর্তমানে রাজনৈতিক ঐক্য গড়ে তুলে দেশের সংস্কার প্রয়োজন বলেই সরকারের বিরুদ্ধে গণঅধিকার পরিষদ কোনো জোরালো বক্তব্য দেয়নি। তবে আহতদের সুচিকিৎসা ও ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ না দিয়ে নিজেদের ইচ্ছেমতো রাষ্ট্র পরিচালনা করলে তা মেনে নেওয়া হবে না। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে যারা অংশ নিয়েছেন, যারা ফ্যাসিবাদ হটাতে সক্রিয় ছিলেন, আগামী বাংলাদেশে নেতৃত্ব দিতে তাদের প্রস্তুত হওয়ারও আহ্বান জানান তিনি।
এসময় গণঅধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি মিজানুর রহমান ভূঁইয়াকে ঢাকা ১৩ আসনে গণঅধিকার পরিষদের প্রার্থী হিসেবে উপস্থিত নেতা-কর্মী-জনতার মধ্যে পরিচয় করিয়ে দেন নুরুল হক।
গণঅধিকার পরিষদ মহানগর উত্তরের সভাপতি মিজানুর রহমানের সভাপতিত্ব, সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিমের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদের সদস্য অ্যাডভোকেট সরকার নুরে এরশাদ সিদ্দিকী, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি অ্যাডভোকেট নাজিম উদ্দীন, ঢাকা মহানগর উত্তরের সহ সভাপতি রকিবুল হাসান রাকিব, সাংগঠনিক সম্পাদক সবুজ খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফারজানা কিবরিয়া, যুগ্ম সাধারণ মো. ইমরান প্রমুখ।
এসএসএইচ