জুলাই বিপ্লব ব্যর্থ হলে আহত-শহীদদের ‘রাষ্ট্রদ্রোহী’ বলা হবে

জুলাই বিপ্লব সফল না হলে শহীদদের শহীদ বলা তো দূরের কথা, তাদের রাষ্ট্রদ্রোহী আখ্যা দিয়ে হত্যা করা হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বিন হাদী। তিনি বলেন, ‘সিপাহি বিদ্রোহে যেমন গাদ্দারদের কারণে বিপ্লবীরা ফাঁসিতে ঝুলেছিল, তেমনি এখানেও আমাদের হয় জয়ী হতে হবে, নয়তো শহীদ হতে হবে।’ তিনি এসময় দ্বিতীয় গণবিপ্লবের প্রস্তুতির আহ্বান জানান।
শনিবার (২৪ মে) বিকেলে রাজধানীর বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রে রিদম বাংলাদেশ ট্রাস্ট আয়োজিত সংবর্ধনা ও পুনর্বাসন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
শরীফ ওসমান বিন হাদী বলেন, ‘জুলাই বিপ্লবে কে কতভাবে জানমাল বাজি রেখে লড়াই করেছে, সেগুলোর বেশিরভাগই এখনও অজানা। রিদম যে পুনর্বাসন সহযোগিতা দিল, নাগরিক সমাজের এটা জারি রাখতে হবে। এটা কী তাদের কাজ? তাহলে রাষ্ট্র বলতে জিনিসটা কোথায়? এমন অনেক শহীদ পরিবার আছে যেখানে স্বামী ছিল একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। সন্তান অটিস্টিক, যে নারী কখনও বাজারে যায়নি, তাকেই আজ জীবিকার জন্য, পরিবারের জন্য বের হতে হচ্ছে। তাহলে রাষ্ট্র তাদের জন্য কী করলো?’
তিনি বলেন, ‘আমরা অগণিত মানুষ চিনি যারা জুলাই ফাউন্ডেশন চাইলে দেশ-বিদেশ থেকে সহযোগিতা করতো। আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশন বলেছে প্রত্যেকটা শহীদ পরিবারকে একটা করে সিএনজি কিনে দেব। রাষ্ট্রের কাছে শুধু ভ্যাট মওকুফের দাবি করেছিল। কতটা দারুণ উদ্যোগ ছিল। কিন্তু এটি বলার পর রাষ্ট্রের কোনো পর্যায় থেকে তাদের সঙ্গে কথা বলা হয়নি। সুযোগও দেওয়া হয়নি। শুধু ক্রেডিট (কৃতিত্ব) নিতে গিয়ে এটা হতে দেওয়া হয়নি। শহীদদের রক্তের সঙ্গেও ক্রেডিটবাজী করা হচ্ছে।’
হাদী বলেন, ‘আমাদের দ্বিতীয় বিপ্লবের প্রস্তুতি নিতে নিতে হবে। কারণ, জুলাই শেষ পর্যন্ত বিজয়ী না হলে আমাদের ভাইদের শহীদ বলেও ডাকা হবে না, আমাদেরকে রাষ্ট্রদ্রোহী বলে হত্যা করা হবে। সিপাহী বিদ্রোহে আমাদের অল্পকিছু গাদ্দারের কারণে বিপ্লবীদের দশ দিন পর্যন্ত ঝুলিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তাই হয় আমরা জিতবো, নয়তো শহীদ হবো। আমাদের জুলাইকে কোনো দল কিংবা ব্যক্তির কাছে বর্গা দেবনা। জুলাইয়ের কোনো ইমাম নেই, সবাই খাদেম। আর যদি মাস্টারমাইন্ড থেকে থাকে, সেটা ১৮ কোটি মানুষ। সুতরাং এই বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব টিকে থাকবে কোনো রাজনৈতিক দলের কারণে না, বাংলাদেশের আপামর জনতার জন্য।’
আরও পড়ুন
অনুষ্ঠানে রিদম বাংলাদেশের পক্ষ থেকে শহীদ ও আহত পরিবারকে পুনর্বাসনের অংশ হিসেবে রিকশা, মুদি দোকানের সহায়তা ও চিকিৎসা সহায়তা প্রদান করা হয়। উপস্থিত ছিলেন ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ।
তিনি বলেন, ‘জুলাই বিপ্লব এখনও অসমাপ্ত। এ বিপ্লবকে পূর্ণ রূপ দিতে না পারা পর্যন্ত আমাদের দায়িত্ব শেষ হবে না।’
অনুষ্ঠানে চিকিৎসক, স্বেচ্ছাসেবী ও আহতদের পক্ষে ২৫০ চিকিৎসক ও ৮৫ জন স্বেচ্ছাসেবীকে সম্মাননা প্রদান করা হয়।
টিআই/এসআইআর