নির্বাচন বিলম্বিত হলে দেশের নিরাপত্তা ঝুঁকি বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে

জাতীয় নির্বাচন বিলম্বিত হলে দেশের বহুমাত্রিক নিরাপত্তা ঝুঁকিও বৃদ্ধি পাওয়ার আশংকা রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক।
বুধবার (৯ জুলাই) সেগুনবাগিচায় বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি অফিসে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- দলের রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য আকবর খান, মীর মোফাজ্জল হোসেন মোশতাক, সাইফুল ইসলাম, ফিরোজ আলী, কেন্দ্রীয় সংগঠক বাবর চৌধুরী, জামিরুল রহমান ডালিম প্রমুখ।
সাইফুল হক বলেন, জাতীয় নির্বাচন যত বিলম্বিত হবে, দেশের বহুমাত্রিক নিরাপত্তা ঝুঁকিও তত বৃদ্ধি পাওয়ার আশংকা রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ক্রমাবনতিতে জনগণের জানমালের নিরাপত্তাহীনতা নতুন উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। দেশজুড়ে মব সন্ত্রাস ছড়িয়ে পড়া নতুন উৎকন্ঠার জন্ম দিয়েছে। সরকারের অকার্যকারিতায় সামাজিক নৈরাজ্য দ্রুত রাজনৈতিক নৈরাজ্যের পথে বাঁক নিচ্ছে। সংস্কার ও নির্বাচনকে ঝুলিয়ে দিতে নানা অপতৎপরতা চলছে। পরিকল্পিতভাবে এসব ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে কিনা তা খতিয়ে দেখা দরকার।
তিনি আরও বলেন, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানে বোঝাপড়ার সংবাদে রাজনৈতিক দলসহ জনগণের মধ্যে এক ধরনের স্বস্তি দেখা গেছে। সরকারের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর মনস্তাত্ত্বিক দূরত্বও খানিকটা কমেছে বলে ধারণা করা যায়। কিন্তু সরকারের প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের বৈঠকের পর প্রধান নির্বাচন কমিশনার নির্বাচনের সম্ভাব্য তফসিল নিয়ে কোনো কথা বলতে পারেননি। এই পরিস্থিতি কাঙ্ক্ষিত নয়। নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট তফসিল মোটামুটি নির্বাচনের ৬০ দিন আগে ঘোষণা করার বিধান থাকলেও নির্বাচন কমিশনের দিক থেকে মধ্য ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে দেশবাসীকে আশ্বস্ত করা দরকার ছিল। আশা করি নির্বাচন কমিশন এই সম্পর্কে নির্দিষ্টভাবে কথা বলবেন।
সাইফুক হক বলেন, গত একমাসে জাতীয় নির্বাচন নিয়ে নতুন করে আবার উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকারের নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবিটাই অবান্তর। এটা অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্বও নয়। গত ১৬ বছর দেশের মানুষ নিশ্চয় স্থানীয় সরকারের নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করেনি।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের সমাজ ও রাজনৈতিক দলসমূহে এখনও পর্যন্ত রাজনৈতিক ও মনস্তাত্ত্বিক দিক থেকে এখনও পিআর কখন পদ্ধতিতে ভোটের জন্য প্রস্তুত হতে পারেনি। এ কারণে এবার কেবল আমরা সংসদের উচ্চকক্ষ পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানিয়ে আসছি। ফ্যাসিবাদী জমানায় সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের বিচার ও সংস্কারের প্রক্রিয়া জোরদার করার ব্যাপারে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য রয়েছে। নির্বাচনের আগে বিচারের উদ্যোগকে দেশবাসী দৃশ্যমান দেখতে চায়।
সংবাদ সম্মেলনে জুলাই-আগস্ট ছাত্র শ্রমিক জনতার গণ অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির ২১ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। সেগুলো হলো-
১-১৬ জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে রংপুরে তিন শহীদের কবরে শ্রদ্ধা জ্ঞাপনসহ সারা দেশে শহীদ মিনারে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও সমাবেশ।
২ থেকে ১৮ জুলাই শহীদ পরিবারসমূহ ও আহতদের নিয়ে ঢাকার আশুলিয়ায় শ্রমিক গণসমাবেশ।
৩ থেকে ২৫ জুলাই নারায়ণগঞ্জে গণ-অভ্যুত্থানের শহীদ ও আহতদের পরিবারসহ গণ সমাবেশ।
৪ থেকে ২ আগস্ট রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি-গণআকাংখ্যা বাস্তবায়নের পথ শীর্ষক আলোচনা সভা।
৫ থেকে ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের আলোকচিত্র প্রদর্শনীসহ অন্যান্য কর্মসূচি।
ওএফএ/এমএন