অবরুদ্ধ নাহিদ-হাসনাত-সারজিসদের দ্রুত উদ্ধারে জরুরি পদক্ষেপ নিন

গোপালগঞ্জে সমাবেশ শেষে ফিরে যাওয়ার সময় পথে হামলার শিকার হয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় নেতাকর্মীরা। একপর্যায়ে সেখানে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন তারা। এ ঘটনার পর জুলাই অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দেওয়া নাহিদ ইসলাম, হাসনাত আব্দুল্লাহ, সারজির আলমসহ জুলাই নেতৃবৃন্দকে দ্রুত উদ্ধারে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম।
তিনি বলেছেন, গোপালগঞ্জে জুলাই অভ্যুত্থানের প্রধান নেতৃত্বের ওপর হামলায় অংশ নেওয়া স্বৈরাচারের দালালদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
বুধবার (১৬ জুলাই) এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, গোপালগঞ্জ বাংলাদেশের সার্বভৌম কর্তৃত্বের অধীনে থাকা একটি জেলা। সারা বাংলাদেশ যখন একযোগে স্বৈরাচারী হাসিনাকে উৎখাত করেছে, তখন গোপালগঞ্জে হাজার-হাজার খুন, গুম ও হাজার কোটি টাকা পাচারকারী শক্তির পক্ষে কেউ প্রকাশ্য অবস্থান নিয়ে দেশপ্রেমিক ছাত্র নেতৃত্বের ওপর হামলা করবে এবং তাদেরকে অবরুদ্ধ করে রাখবে, তা মেনে নেওয়া যায় না। দ্রুততার সঙ্গে অবরুদ্ধ নেতৃবৃন্দের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং তাদের উদ্ধার করতে জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্র নেতৃবৃন্দের রাজনৈতিক সংগঠন এনসিপি জুলাইজুড়ে দেশব্যাপী পদযাত্রা করছে। সর্বত্র তারা জনগণের উষ্ণ অভিনন্দন ও ভালোবাসা পাচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় আজকে তারা গোপালগঞ্জে গিয়েছে। তাদের সঙ্গে আজকে গোপালগঞ্জে যা হয়েছে, তা লজ্জাজনক। একই সঙ্গে প্রশাসনের ব্যর্থতাও বটে।
আরও পড়ুন
তিনি বলেন, অভ্যুত্থানের নেতৃবৃন্দ গোপালগঞ্জে আসলে সেখানে পতিত ফ্যাসিবাদের দোসররা বিশৃঙ্খলা তৈরি করতে পারে, এটা তাদের অনুধাবন করে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল। কিন্তু আজকের ঘটনায় পরিষ্কার যে, প্রশাসন ব্যর্থ হয়েছে। গোপালগঞ্জের পুলিশ সুপারসহ দায়িত্বে নিয়োজিতদের ব্যাপারে তদন্ত করতে হবে। তারা ইচ্ছাকৃতভাবে এমন সহিংসতার সুযোগ করে দিল কিনা, তা খতিয়ে দেখতে হবে।
পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, কোনো-কোনো মিডিয়া হামলাকারী ফ্যাসিবাদের দোসরদের গ্রামবাসী, এলাকাবাসী বলে অভিহিত করেছে। এর পেছনের কারণ সুস্পষ্ট। তারা বিশ্বকে বোঝাতে চায় যে, হাসিনার উৎখাতের আন্দোলন কোনো গণঅভ্যুত্থান ছিল না। গ্রামবাসী এখনো হাসিনার জন্য রাস্তায় নামে। আদতে পুরোটা মিথ্যা বয়ান। যারা এনসিপির ওপর হামলা করেছে, তারা আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী বাহিনী। এদেরকে আওয়ামী লীগের পাণ্ডা হিসেবেই প্রচার করতে হবে এবং যারা যারা এই হামলার সঙ্গে জড়িত ছিল, তাদেরকে অবিলম্বে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। ফ্যাসিবাদের পক্ষ হয়ে এখনো কেউ জুলাই অভ্যুত্থানের নেতৃবৃন্দের ওপর হামলা করবে, তা মেনে নেওয়া যায় না।
পীর সাহেব চরমোনাই সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তির এই সময়েও স্বৈরাচারের দোসররা যে দুঃসাহস দেখিয়েছে, তা সরকারের সামগ্রিক ব্যর্থতার বড় একটি দৃষ্টান্ত। পতিত ফ্যাসিবাদের বিচার এবং এর সঙ্গে জড়িতদের বিচারের ধীরগতির কারণেই এরা আজকে এই সাহস করেছে। তাই বলব— কেবল ঢাকায় গুটিকয়েকজনকে বিচারের আওতায় আনলে হবে না, বরং সারা দেশে স্বৈরতন্ত্রের সঙ্গে জড়িত সবাইকে দ্রুত বিচারের আওতায় আনুন। এই ধরণের দুঃসাহস জাতি আর দেখতে চায় না।
জেইউ/এমজে