যানজটে আটকা নেতাকর্মী হেঁটে যাচ্ছেন সমাবেশে

রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে চলছে জামায়াতে ইসলামীর জাতীয় সমাবেশ। এতে অংশ নিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লাখো নেতাকর্মী এসে ঢাকায় জড়ো হয়েছেন। ফলে আজ (শনিবার) সকাল থেকেই রাজধানীর প্রবেশপথসহ প্রধান সড়কগুলোতে সৃষ্টি হয়েছে ভয়াবহ যানজট।
বিশেষ করে যাত্রাবাড়ী এলাকায় প্রচণ্ড যানজটে নাকাল হয়ে পড়েছেন রাজধানীবাসী। অনেক জায়গায় যান চলাচল প্রায় থমকে গেছে। হাজারো নেতাকর্মী দীর্ঘ সময় ধরে বাসে আটকে থেকে পরে হেঁটেই সমাবেশস্থলের দিকে রওনা দিয়েছেন। এতে সাধারণ মানুষকেও চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
জামায়াতের একজন কর্মী ঢাকা পোস্টকে বলেন, এত যানজটের মধ্যে সমাবেশে পৌঁছাতে পারব কি না জানি না। মনে হচ্ছে রাস্তাতেই সমাবেশ করতে হবে।
সাত দফা দাবিতে আয়োজিত জামায়াতের জাতীয় সমাবেশে ইতোমধ্যে মানুষের ঢল নেমেছে। সমাবেশ শুরুর অনেক আগেই দলটির নেতাকর্মী ও সমর্থকদের উপস্থিতিতে প্রায় কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে যায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। উদ্যানের বাইরেও অবস্থান করছেন হাজার হাজার নেতাকর্মী।

নেতাকর্মীদের অনেকের হাতে তাদের দলীয় প্রতীক দাাঁড়িপাল্লা শোভা পাচ্ছে। দাঁড়িপাল্লা ও দলীয় মনোগ্রাম সম্বলিত টি-শার্ট ও পাঞ্জাবি পরে এসেছেন হাজারো নেতাকর্মী।
এদিকে জাতীয় সমাবেশ সফল করতে দায়িত্ব পালন করছেন ২০ হাজারের মতো স্বেচ্ছাসেবক। ভোর থেকে সমাবেশের আশপাশের কয়েক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিভিন্ন স্পটে স্বেচ্ছাসেবকরা দায়িত্ব বুঝে নিয়েছেন।
শনিবার ভোর থেকে হাইকোর্ট এলাকা, মৎস্য ভবন, শাহবাগ এলাকার বিভিন্ন স্পট ঘুরে দেখা গেছে, স্বেচ্ছাসেবকরা সবাই একই ধরনের ড্রেস পরে বিভিন্ন স্পটে অবস্থান নিয়েছেন। তারা দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত নেতাকর্মীদের সহযোগিতা করছেন। কোন অঞ্চলের মানুষ কোন গেট দিয়ে প্রবেশ করবেন তা বুঝিয়ে দিচ্ছেন।
মৎস্য ভবন স্পটের স্বেচ্ছাসেবক টিমের প্রধান মাসুদুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, সমাবেশে আগত নেতাকর্মীদের সহযোগিতা করাই আমাদের উদ্দেশ্য। পুরো রাজধানী জুড়ে আমাদের ২০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক দায়িত্ব পালন করছে। শুধু সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের আশপাশে ৬ হাজার স্বেচ্ছাসেবক দায়িত্ব পালন করছেন। এদিকে ভোর থেকে বিভিন্ন জায়গা থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে সোহরাওয়ার্দী প্রবেশ করতে দেখা গেছে জামায়াত নেতাকর্মীদের।
সাত দফা দাবিতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে জামায়াতের জাতীয় সমাবেশ। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে—অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিতকরণ, সব গণহত্যার বিচার, প্রয়োজনীয় মৌলিক সংস্কার, ‘জুলাই সনদ’ ও ঘোষণাপত্র বাস্তবায়ন, জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের পরিবারের পুনর্বাসন, সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন ও এক কোটির বেশি প্রবাসী ভোটারদের ভোটাধিকার নিশ্চিতকরণ।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর প্রথমবারের মতো এককভাবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় সমাবেশ করছে দলটি।
এসএইচআর/এমএ