আ.লীগ ও জাপাকে নির্বাচনে দেখতে চাই না : নুর

আগামী জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক করার লক্ষ্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) সঙ্গে বৈঠক করেছে গণঅধিকার পরিষদ।
দলটির সভাপতি জানান, যারা বিগত সময়ে ফ্যাসিবাদ ও তার সহযোগী ছিলেন, তাদের যেন আনুষ্ঠানিক বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো না হয়। জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনেও এদের আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। সুতরাং আগামীতে নির্বাচন কমিশনের বৈঠকেও ফ্যাসিবাদী দোসরদের দেখতে চাই না।
বুধবার (২৯ অক্টোবর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) সাথে বৈঠক শেষে এ তথ্য জানান গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূর। বিকেল সাড়ে ৪টায় নূরের নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল এই বৈঠকে অংশ নেয় এবং নির্বাচন কমিশনের কাছে ৯ দফা প্রস্তাবনা হস্তান্তর করে।
গণঅধিকার পরিষদ জানায়, প্রধান উপদেষ্টা ঘোষিত রোডম্যাপ অনুযায়ী আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। নির্বাচন কমিশন তাদের প্রস্তুতি ও অগ্রগতি সম্পর্কে পরিষদকে ধারণা দিয়েছে। ইতোমধ্যে কমিশন গণমাধ্যম ও প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করেছে এবং খুব শীঘ্রই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠকের আয়োজন করবে বলে জানিয়েছে।
আরও পড়ুন
গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূর বলেন, বর্তমান অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কোনোভাবেই অংশগ্রহণ করতে পারবে না। কারণ এটি নৈতিকতার সঙ্গে মানানসই নয় এবং নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ও সংশ্লিষ্টদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিধান ছিল না।
প্রতীক নিয়ে কয়েকটি দলের আচরণে নির্বাচন কমিশনকে বারবার বিব্রত করার চেষ্টা হচ্ছে বলে নূর অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, কমিশনের বিধি-বিধানের বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। কোনো দলের চাপে নতি স্বীকার করে বিধি ভায়োলেট করলে ভবিষ্যতে অন্য দলও একই সুবিধা চাইবে। কমিশনকে তাদের বিদ্যমান রুলস ও রেগুলেশনের মধ্যে থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।
জোটবদ্ধ দলগুলোর যার যার নিজস্ব দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করার বিষয়ে ঐক্যমত্তা কমিশনে আলোচনা হয়েছে বলে পরিষদকে কমিশন জানিয়েছে। গণঅধিকার পরিষদ এটিকে ইতিবাচকভাবে দেখে এবং মনে করে জোট করলেও যার যার প্রতীকে নির্বাচন করা উচিত।
সভাপতি নূর জানান, এই মুহূর্তে একটি রাইজিং দল হিসেবে গণঅধিকার পরিষদ দলকে বিকশিত করতে এবং ৩ শত আসনে প্রার্থী বাছাই নিয়ে কাজ করছে। আপাতত কারো সাথে জোটবদ্ধ হওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়নি, তবে বিএনপি ও জামায়াতসহ বিকল্প জোট গঠনের বিষয়ে আলোচনা চলছে।
নূর বলেন, সরকারকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে জুলাই সনদ কীভাবে বাস্তবায়ন করা হবে। তবে দুটি ভোট (জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট) করার বাস্তবতা এখন নেই। তিনি পরামর্শ দেন, জাতীয় নির্বাচনের সঙ্গেই জুলাই সনদের বিষয়ে গণভোট করা যেতে পারে, কারণ এটিতে সব দলের মোটামুটি ঐক্যমত রয়েছে। তিনি মনে করেন, নির্বাচন যথাসময়ে না হলে দেশে চরম বিপর্যয় নেমে আসতে পারে।
নুরুল হক নূর বলেন, আমরা চাই আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, ক্রেডিবল এবং অংশগ্রহণমূলক হোক। নির্বাচন কমিশনকে মেরুদণ্ড সোজা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। বাংলাদেশের জনগণ ফ্যাসিবাদী শক্তিকে প্রত্যাখ্যান করেছে, আইনগতভাবে তাদের বিচার হচ্ছে। কোনো বিদেশী শক্তি যদি তাদের অংশগ্রহণের বিষয়ে প্রশ্ন তোলে, কমিশন যেন জনগণের অবস্থান স্পষ্টভাবে তুলে ধরে।" তিনি আরো যোগ করেন, কালো টাকা ও পেশী শক্তিমুক্ত একটি উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন নিশ্চিত করতে কমিশনকে রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতা প্রয়োজন।
এসআর/এসএম