জেনেশুনেও কেন বলছেন? প্রধানমন্ত্রীকে প্রশ্ন মোশাররফের

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের বীর উত্তর খেতাব প্রসঙ্গে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, জীবিত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তখন তাকে বীর উত্তম উপাধি দেওয়া হয়েছিল। তারা সম্মুখ যুদ্ধ করে এটা অর্জন করেছেন। এটাও কেড়ে নেওয়ার জন্য ষড়যন্ত্র চলছে।
খন্দকার মোশাররফ হোসেন প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেছেন, ‘মানুষের মনে প্রশ্নটা আসবে, সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল এম এ জি ওসমানী.. উনি কি কখনো বন্দুক দিয়ে নিজে যুদ্ধ করেছেন? বিশ্বযুদ্ধ যে হয়েছে, তার যে সেনাপ্রধান ছিলেন, তিনি কি নিজে গিয়ে যুদ্ধ করেছেন? একটা যুদ্ধে সেক্টর কমান্ডার, ফোর্সেস কমান্ডার, ডিভিশনাল কমান্ডার নিজে গিয়ে যুদ্ধ করেন... তা কখনও কোনোদিন হয়নি, কেন জেনেশুনে প্রধানমন্ত্রী একথা বলছেন?’
আজ (মঙ্গলবার) জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) একাংশ আয়োজিত ‘ইতিহাস বিকৃতি, ঘৃণার চাষ ও গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক এক আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন।
খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ৪০ বছর পরে প্রধানমন্ত্রীর মুখে শুনলাম জিয়াউর রহমানের লাশ নাকি সেখানে নাই। হত্যার পর জিয়াউর রহমানকে চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের পাশে একটি পাহাড়ে পুঁতে রাখা হয়েছিল। সেটা খুঁজে বের করে চট্টগ্রামের সিএমএইচে নিয়ে জিয়াউর রহমানের লাশ ময়নাতদন্ত করা হয়। ময়নাতদন্ত করেন লেফটেন্যান্ট কর্নেল তোফায়েল, সেখানে সাক্ষী আছে। এরপর তার মরদেহ সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঢাকায় নিয়ে আসেন। তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি এবং তিন বাহিনীর প্রধান সেই লাশ গ্রহণ করেন। তার লাশের পাশে আত্মীয়-স্বজন, স্ত্রী-সন্তান কেঁদেছেন এমন ছবিও আছে। তার জানাজায় লাখো মানুষ দাঁড়িয়েছিল। সবাইকে কি আপনি (প্রধানমন্ত্রী) মিথ্যা বলতে চান। আপনি তো সেখানে ছিলেনই না, অথচ বলছেন লাশ নেই।
তিনি আরও বলেন, প্রকৃত ইতিহাসকে জানতে হবে আমাদের। কিভাবে এগুলো অস্বীকার করবেন। জিয়াউর রহমানকে নিয়ে এ পর্যন্ত যত কুরুচিপূর্ণ মিথ্যা কথা বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী দায়িত্বশীল ব্যক্তি হয়ে এ ধরনের বক্তব্য রাখতে পারেন না। রাজনীতিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য এ ধরনের বক্তব্য তিনি রাখছেন। জাতিকে আপনি বিভ্রান্ত করতে পারেন না। এটা ঠিক নয়, জাতি এই বিষয়গুলো জানে।
আলোচনায় নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, কোনো সত্য চাপা রাখা যায় না। জিয়াউর রহমানকে নিয়ে যারা এখন বিতর্ক তৈরির চেষ্টা করছেন, তারা ইতিহাস তৈরি নয়, তারা আমার-আপনার দৃষ্টি সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। কারণ, দেশে একটা সরকার আছে, যার কোনো ভিত্তি নেই। গণতন্ত্রের কথা বলে তারা ভোট করেনি। এটা একটা দখলদার সরকার।
আলোচনায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএফইউজে সভাপতি এম আব্দুল্লাহ, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম, ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নূর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দলের আহ্বায়ক ওবায়দুল ইসলাম, সংবাদিক নেতা শওকত মাহমুদ, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি মুরসালিন নোমানী, বিএফইউজে সভাপতি রাশেদুল ইসলাম প্রমুখ।
এমএইচএন/এনএফ