নিজ এলাকায় দায়িত্ব না পাওয়ায় মহানগরের সভায় উত্তেজনা

ঢাকা মহানগর দক্ষিণের অন্তর্গত নির্বাচনী এলাকার থানা ও ওয়ার্ড কমিটি গঠনের দায়িত্ব বণ্টন করেছে নগর আওয়ামী লীগ। তবে কমিটিতে স্থানীয় বাসিন্দা হিসেবে ওই এলাকায় দায়িত্ব না পাওয়ায় সভায় উত্তেজিত বক্তব্য রেখেছেন নেতারা।
বুধবার (৮ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখার সভায় উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের অন্তর্গত আটটি সংসদীয় আসনের থানা ও ওয়ার্ড সম্মেলন ও নেতা নির্বাচনে পৃথক কমিটি গঠন করা হয়। এতে মহানগরের নেতাদের দায়িত্ব বণ্টন করা হয়। এসব নেতারা নিজে যে এলাকার বাসিন্দা সেখানে তাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়নি।
মহানগর নেতারা নিজ নিজ এলাকায় দায়িত্ব পালনে আগ্রহী। বিষয়টি বুধবার মহানগর কমিটির বৈঠকে তারা উপস্থাপন করেন। এ নিয়ে বৈঠকে উত্তেজনা দেখা দেয়। যা একপর্যায়ে হাতাহাতিতে রূপ নেয়। পরে সেখানে উপস্থিত আওয়ামী লীগের ঢাকা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজমের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নেতা বলেন, মহানগরের নেতাদের দায়িত্ব বণ্টন নিয়ে প্রশ্ন তোলেন সহ-সভাপতি শরফুদ্দিন আহমেদ সেন্টু। তিনি বলেন, যে কমিটি করা হয়েছে এটি অসঙ্গতিপূর্ণ। আমাদের সঙ্গে আলোচনা না করে মনগড়া একটি কমিটি করা হয়েছে। তার এই বক্তব্যের বিরোধিতা করে মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির প্রতিবাদ করেন। তিনি সেন্টুকে থামিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। উচ্চবাচ্য করেন। এতে উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
পরে সেন্টুর পক্ষ নিয়ে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজী মোরশেদ হোসেন কামাল বলেন, নিজের এলাকার কমিটির বৈঠকে উপস্থিত থাকতে না পারায় নেতাকর্মীদের কাছে হেয় হবেন। পরে মির্জার আজম পরিস্থিতি শান্ত করেন এবং প্রস্তুতি কমিটিতে না থাকলেও ওই সব কমিটির বৈঠকে তারা উপস্থিত থাকতে পারবেন বলে সিদ্ধান্ত দেন। পরে নগরের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এতে একমত প্রকাশ করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মহানগরের এক নেতা বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় বসবাস করছি৷ সেখানে আমাদের অনেক কর্মী ও সমর্থক তৈরি হয়েছে। আমাদের অনেকের আবার নির্বাচন করারও প্রস্তুতি আছে। কিন্তু সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক উদ্দেশ্যমূলকভাবে আমাদের এলাকা থেকে সরিয়ে দিয়েছেন। সভাপতি সাহেব ঢাকা-৬ আসনে নির্বাচনে আগ্রহী। আবার সাধারণ সম্পাদক ঢাকা-৭ আসনে নির্বাচন করতে চান।
তিনি বলেন, দুই নেতা আমাদের সঙ্গে অবিচার করেছেন। তাদের এ সিদ্ধান্তে কর্মী-সমর্থকরা হতাশ হয়েছেন। তারা পদবঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কা করছেন।
জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির বলেন, বৈঠকে একটু তর্কবিতর্ক হয়েছে। কমিটি গঠন প্রক্রিয়ায় যাতে গ্রুপিং না হয় এজন্য আমরা কেন্দ্রীয় কমিটির আদলে টিম করেছি। যে কারণে নেতারা যে এলাকার বাসিন্দা তাদের সংশ্লিষ্ট টিমে রাখা হয়নি। এতে দুই-তিন জন নেতা আপত্তি জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, এখন আমাদের সিদ্ধান্ত হয়েছে। তারা তাদের এলাকার টিমের বৈঠকে উপস্থিত থাকতে পারবে৷ সেখানে তাদের পরামর্শ জানাতে পারবে। কিন্তু তাদের ভোটিং পাওয়ার থাকবে না।
জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম বলেন, বৈঠকে একটু উচ্চবাচ্য হয়েছে। এসব বৈঠকে এগুলো হওয়াই স্বাভাবিক। অনেকদিন বৈঠক হয় না। তাই নেতারা এক একজন একেক মতে কথা বলেছেন। এটা কোনো বড় ঘটনা নয়।
এইউএ/এসএসএইচ