কাজের স্বীকৃতি পেলেন রীতা কর্মকার

আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে কানাডার আলবার্টা সরকারের পক্ষ থেকে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের জন্য স্বীকৃতি পেয়েছেন রীতা কর্মকার। ক্যালগেরি শহরের মেয়র জ্যোতি গোন্ডেক ও যোগাযোগমন্ত্রী রাযন সহনির কাছ থেকে তিনি এই পুরস্কার গ্রহণ করেছেন।
রীতা কর্মকার ২২ বছর আগে কানাডায় যান। শুরু থেকেই তিনি নানা সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে যুক্ত ছিলেন। ঢাকার বিখ্যাত সংগীতশিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছায়ানটের ছাত্রী রীতা ক্লাসিক্যাল মিউজিক ও রবীন্দ্রসংগীতের স্বেচ্ছাসেবী প্রশিক্ষক হিসেবে ক্যালগেরির উৎসাহী সঙ্গীত শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ দেন।
তবে সেখানেই তিনি থেমে থাকেননি। নতুন নতুন শিল্প ও সমাজ ভাবনার নিরিখে কাজের ক্ষেত্রকে তিনি প্রসারিত করেন। বাংলাদেশ কানাডা অ্যাসোসিয়েশন অব ক্যালগেরির বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালনকালে তিনি তরুণ প্রজন্মের অভিবাসী কানাডিয়ানদের জন্য বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডের সূচনা করেন।
তাদের সঙ্গীত, শিল্পকলা ও লেখালেখির প্রতিভার চর্চা ও বিকাশের জন্য তিনি কমিউনিটিতে ব্যাপক প্রশংসিত হন। এছাড়াও তার গ্রীন কানাডা প্রজেক্টটিও উল্লেখযোগ্য।
একইসাথে সামাজিক কার্যক্রমে বর্ষীয়ানদের অবদানের স্বীকৃতি প্রদান ও তাদের চিন্তা ও অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে ট্রেজার শো আয়োজন করেও তিনি প্রশংসিত হয়েছেন। বাঙালি অভিবাসীদের মধ্যে তাদের নিজস্ব সঙ্গীত ও সংস্কৃতির চর্চা ও বিকাশের লক্ষ্যে ‘শতকণ্ঠে বাংলাদেশ’ সহ একাধিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা ও তার সফল বাস্তবায়নও কমিউনিটিতে ব্যাপক সাড়া জাগায়।
মিডিয়ার সাথে আলাপকালে রীতা কর্মকার জানান, শিশু ও তরুণরাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। তাদের মধ্যে পরিবেশ, সমাজ ও শিল্পকলার প্রতি অনুরাগ জন্মানোর মাধ্যমেই ভবিষ্যতে কানাডাকে আরও সুন্দর দেশে পরিণত করা সম্ভব। তিনি জানান,শিশু ও তরুণদের নিয়ে করা যে কোনো উদ্যোগ বাস্তবায়ন করতে তার অন্যরকম ভালো লাগা কাজ করে।
তিনি আরও বলেন, মানুষ তার নিজস্ব সংস্কৃতির চর্চা ও বিকাশের মধ্য দিয়েই কানাডার বহুজাতিভিত্তিক সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করবে। এতে সবার মধ্যে সাংস্কৃতিক ভাববিনিময় বাড়বে এবং একে অন্যকে জানার আগ্রহ বোধ করবে। এভাবেই বিকশিত হবে কানাডার নাগরিক হিসেবে আমাদের একত্ববোধ।
রীতা কর্মকার দুই সন্তানের জননী। বর্তমানে তিনি কানাডার ক্যালগেরির মাউন্ট রয়েল ইউনিভার্সিটিতে উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত প্রশিক্ষক হিসেবে কর্মরত। একইসাথে তিনি অর্গানাইজেশনাল লিডারশিপ প্রোগ্রামে পিএইচডি করছেন। তিনি মনে করেন, মনের ভিতরের শক্তিকে কাজে লাগাতে হবে, জীবনের লক্ষ্য অর্জনে নিজেকে এগিয়ে যেতে হবে, মা শিক্ষিত হলে একটি পরিবার শিক্ষিত হবে, একটি সমাজ শিক্ষিত হবে, একটি জাতি শিক্ষিত হবে। এভাবেই পূথিবী আলোকিত হয়ে আরও মানবিক হয়ে উঠবে।
রীতা কর্মকার তার কাজের অনুপ্রেরণার জন্য পরিবারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং সেইসাথে কানাডার আলবার্টার সরকারের প্রতিও তিনি কৃতজ্ঞতা জানান।
এনএফ