এশিয়া কাপের মাঠে বাঘের বেশে মারুফ

ক্রিকেট ভক্ত কুয়েত প্রবাসী খাইরুল ইসলাম মারুফ। ঢাকা-চট্টগ্রামের ক্রিকেটপাড়ায় পরিচিত ‘টাইগার মারুফ’ নামে। গত ২৬ আগস্ট (শুক্রবার) ছুটে যান দুবাইতে। এশিয়া কাপে মাঠের গ্যালারিতে বাঘের বেশে দর্শকদের সাহস ও উৎসাহ দিয়েছেন তিনি।
২০১৬ সালের শেষের দিকে জীবিকার তাগিদে পাড়ি জমান মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কুয়েতে। প্রবাসে এসেও ভুলতে পারেন নি নিজ মাতৃভূমির প্রিয় ক্রীড়াঙ্গণ ক্রিকেটকে। কুয়েত আসার আগে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে সাপোর্ট দিতে বাঘ সেজে গ্যালারিতে বসে মাঠ কাঁপাতেন তিনি। চট্টগ্রামে খেলা হলে বাড়তি উত্তেজনা থাকতো তার।
এর আগে গত ২০১৬ সালে ইন্ডিয়ায় অনুষ্ঠিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দলের সঙ্গে যেতে না পারলেও নিজ খরচে ইন্ডিয়ার গ্যালারিতে বসে ক্রিকেটারদের মনোবল বাড়াতে দিয়েছেন বাঘের হুংকার। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলেও দলকে জেতাতে না পারায় কেঁদেছিলেন এই ক্রিকেটপ্রেমী। সেদিনের কান্নার দৃশ্য দেশের সব পত্রিকা, টিভি চ্যানেলে শিরোনাম হয়েছিল। এখনও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভেসে বেড়ায়। আইসিসির ভেরিফাইড পেজেও পোস্ট হয়েছিল টাইগার মারুফের অশ্রুসিক্ত সেই ছবি।
সর্বোশেষ ছুটিতে দেশে শ্রীলঙ্কা ও জিম্বাবুয়ের সাথে অনুষ্ঠিত দুটি সিরিজে দর্শকদের সাথে মাঠ কাঁপাতে গ্যালারিতে হাজির হয়েছিলেন তিনি। বাঘ সেজে লাল সবুজের পতাকা নিয়ে গ্যালারির হাজারো দর্শকের সঙ্গে ‘বাংলাদেশ’ স্লোগানে গ্যালারির একপ্রান্ত থেকে অপর প্রান্ত মাতিয়ে তোলেন তিনি।
টাইগার মারুফ বলেন, ঢাকা, চট্টগ্রামসহ সব কয়টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ দেখতে মাঠে ছুটে যেতাম। স্কুল কলেজ ফাঁকি দিয়ে মিরপুর, জহুর আহমদ ও এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে ছুটে যেতাম। কিন্তু নিজ খরচে তা আর সেরে উঠতে পারছিলাম না। বহু ঘুরেছি একটি স্পন্সরের জন্য। না পেয়ে হতাশ হয়ে একবুক কষ্ট নিয়ে চলে আসি মরুর দেশ কুয়েত।
মারুফ আরও বলেন, একটি স্পন্সর যদি তখন পেতাম দেশে ছোটখাটো একটি চাকরি করেই থেকে যেতাম। ওই স্পন্সরের আক্ষেপটা আমি ভুলতে পারব না। কোনো দিকে কোনো রকম ব্যবস্থা করতে না পেরে পরিবার ও নিজের পেটের তাগিদে প্রবাসে পাড়ি জমাইতে বাধ্য হই।
উল্লেখ্য, খাইরুল ইসলাম মারুফ চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার মায়ানী ইউনিয়নের পশ্চিম মায়ানী খোনারপাড়া এলাকার একটি মুসলিম সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান। তিনি ওই এলাকার মৃত হাজি তাহের আহম্মেদ ভূঁইয়ার ছোট।
এমএ