বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন নিয়ে টরন্টোয় আলোচনা সভা

বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচনকে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন এবং সবার কাছে গ্রহণযোগ্য করে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করে কানাডার বিশিষ্ট ব্যক্তিরা বলেছেন, আরেকটি বিতর্কিত নির্বাচন দেশকে খাদের গভীরে ফেলে দেবে।
কানাডার স্থানীয় সময় শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক উদ্যোগ (পিডিআই)-কানাডার উদ্যোগে আয়োজিত ‘বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন : গণতন্ত্রের সংকট ও সম্ভাবনা’ বিষয়ক আলোচনায় তারা এ অভিমত প্রকাশ করেন।
বক্তারা বলেন, দেশের শিক্ষা ও রাজনীতির ক্ষেত্রে নীতি ও আদর্শহীনতা, প্রকৃত রাজনৈতিক শূন্যতা, গণতান্ত্রিক পরিবেশের অভাব এবং মূল্যবোধের অবক্ষয় ধারাবাহিকভাবে জনগণের অংশগ্রহণ শূন্য নির্বাচন, দুর্নীতিবাজ ও লুটপাটকারীদের সীমাহীন দৌরাত্ম্য দেশকে একটি গভীর খাদের কিনারে পৌঁছে দিয়েছে।
টরন্টোর ড্যানফোর্থে টরন্টো ফিল্ম ফোরামের মাল্টিকালচারাল ফিল্ম স্ক্রিনিং সেন্টারে শনিবার সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত এ আলোচনায় বক্তব্য দেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. জসীম উদ্দিন আহমদ, ডাকসুর সাবেক এজিএস নাসির উদ দুজা ও সাংবাদিক মো. আসিউজ্জামান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন মনির জামান রাজু।
আলোচনায় অংশ নিয়ে ড. জসীম উদ্দিন আহমদ বলেন, দেশের ও সমাজের সার্বিক নৈতিক অবক্ষয় এবং মূল্যবোধের পরিবর্তন হয়েছে। এ পরিস্থিতি থেকে বের হতে অনতিবিলম্বে শিক্ষাব্যবস্থায় ব্যাপক পরিবর্তন প্রয়োজন।
তিনি নির্বাচন কমিশনের সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, কমিশন তার কর্মকাণ্ডের মাধ্যমেই নাগরিকদের তাদের প্রতি আস্থাহীন করে তুলছে। তাদের আচরণ এবং কথাবার্তায় মনে হয়, কমিশন স্বাধীনভাবে নয়, বরং ক্ষমতাসীন সরকারের নির্দেশনা অনুসারে কাজ করে। ফলে তাদের পক্ষে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব কি না তা নিয়ে সংশয় থেকে যায়।
সাবেক ছাত্রনেতা নাসির উদ দুজা বলেন, ‘খেলা হবে’ মার্কা আরেকটি নির্বাচন দেশকে চূড়ান্তভাবে খাদের গভীরে ফেলে দেবে। এতে যে জাতীয় সংকট তৈরি হবে সেই সংকট থেকে ভবিষ্যতে দেশকে উদ্ধার করে নিয়ে আসা দুরূহ হয়ে পড়বে। মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে রচিত বাহাত্তরের সংবিধানে দলীয় ও ব্যক্তিস্বার্থে তৈরি ১৭টি সংশোধনী সংবিধানে ব্যাপক অসামাঞ্জস্যতা তৈরি করেছে এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকে দূরে নিয়ে গেছে। পঞ্চদশ সংশোধনী পূর্ববর্তী অবস্থানে সংবিধান ফিরিয়ে নিয়ে এ জাতীয় সংকট থেকে দেশকে মুক্ত করা যেতে পারে।
সাংবাদিক মো. আসিউজ্জামান বলেন, বিদেশি শক্তির প্রভাব বেড়েছে, দেশ থেকে কোটি কোটি টাকা পাচার হচ্ছে এবং আমলানির্ভরতা বৃদ্ধির কারণে সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক নির্বাচন করা খুব কঠিন হয়ে পড়েছে।
উপস্থিত শ্রোতা ও দর্শকদের একটি বৃহৎ অংশ সংলাপের প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশগ্রহণ করেন এবং দেশের রাজনীতির ভবিষ্যৎ নিয়ে তাদের মতামত তুলে ধরেন।
/এসএসএইচ/