মেলবোর্নে বৈশাখের বর্ণাঢ্য আয়োজন

অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে বাংলা সংস্কৃতির সৌন্দর্য তুলে ধরতে বৈশাখের আয়োজন করেছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। মূলত বহু-সংস্কৃতির সংযোজন রেখে বৈশাখের আনন্দ ভাগাভাগি করতে বর্ণাঢ্য এ আয়োজন করা হয়। এর নেপথ্যে কাজ করেছেন অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নের ভিক্টোরিয়া বাংলাদেশি কমিউনিটি ফাউন্ডেশন (ভিবিসিএফ)।
সম্প্রতি অঙ্কর ইভেন্ট সেন্টারে দিনব্যাপী আয়োজিত এ অনুষ্ঠান মুগ্ধ করে বাংলাদেশিসহ অন্যান্য কমিউনিটির সদস্যদের। কোভিড-১৯ বিধি-নিষেধ মেনে রেকর্ড সংখ্যক দর্শনার্থীর উপস্থিতি নিশ্চিত করে আয়োজকরা।
ভিবিসিএফ-এর উদ্যোগে এটিই প্রথমবারের মতো মাল্টিকালচারাল নিউ ইয়ার মিলনমেলা। এতে বিভিন্ন ধাপে অংশ নেন সাড়ে চার হাজারেরও বেশি দর্শনার্থী। আয়োজক কমিটি জানায়, সকাল ১১টার আগে থেকেই আগত বাংলাদেশিরা লাইনে দাঁড়িয়ে প্রবেশ করতে থাকেন অনুষ্ঠানস্থলে।

কোভিডের ধাক্কা সামলিয়ে ওঠা মেলবোর্নে বসবাসরত বাংলাদেশিরা যেন মাহেন্দ্রক্ষণ খুঁজে পেয়েছিলেন দিনটিতে। দীর্ঘদিন পর বড় কোনো আসরের সাক্ষী হলেন সবাই। উৎসব-উল্লাসে আয়োজন স্থলটি যেন হয়ে ওঠে এক টুকরো বাংলাদেশ।
গত তিন মাস ধরে পরিকল্পনার সফল প্রয়োগ দেখা যায় বর্ণাঢ্য এ আয়োজনে। তিনটি অংশে ভাগ করা হয় সাংস্কৃতিক পর্বকে।
সংগঠনটির প্রেসিডেন্ট ইউসুফ আলী বলেন, আমরা সাংস্কৃতিক পর্বে আমাদের সংগঠনের জন্য একটি পর্ব, দক্ষিণ এশিয়ার জন্য একটি পর্ব ও অন্যান্য দেশের জন্য একটি পর্ব- এভাবে ভাগ করেছিলাম। খুব সুন্দর আয়োজন ছিল। সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভিবিসিএফের সঙ্গে থাকার জন্য।

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে মেলবোর্নের বাংলাদেশি সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী ছাড়াও সৃজনশীল পরিবেশনা নিয়ে হাজির হন কলকাতা, তেলেঙ্গানা, চায়না ও অন্যান্য কমিউনিটির শিল্পীরা। এছাড়া প্রবাস ধ্বনি ও ওয়েস্টার্ন রিজিওন বাংলা স্কুলের পরিবেশনাও ছিল প্রশংসনীয়।
ভিবিসিএফের সহ-সভাপতি মোশাররফ হোসেন রেহান বলেন, আমরা অভূতপূর্ব সাড়া পেয়েছি। সব শঙ্কা কাটিয়ে আমরা দলমত নির্বিশেষে সবাইকে এক ছাদের নিচে আনতে পেরেছি। এ পর্যন্ত এটিই আমাদের সবচেয়ে বড় আয়োজন। আমাদের ইভেন্টে অনেক ধরনের স্টল বসেছে প্রত্যেকেই কিন্তু মুনাফা নিয়ে ফিরেছে। আমরা চাই, অস্ট্রেলিয়ায় বাংলা সংস্কৃতির দাপট আরও বাড়ুক, সেই প্রত্যাশায় আগামীতে আরও বড় পরিসরে আয়োজনের প্রয়াস রাখতে চাই।
আয়োজনে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাফল্য ও অবদানের জন্য ভিক্টোরিয়ার বাংলাদেশি কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সম্মাননা প্রদান করা হয়। সম্মাননা পান, কামরুল চৌধুরী (সমাজ সেবা), সহযোগী অধ্যাপক আখতার হোসাইন (শিক্ষা ও গবেষণা), ড. আহমেদ শরীফ শুভ, ড. আজিজ রহমান (চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য), শুভ্রা দাস (মরণোত্তর) (সংস্কৃতি) ও মাহাদী ইসলাম (ক্রীড়া)।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- অস্ট্রেলিয়ার ফেডারেল এমপি জোয়ান রায়ান, ভিক্টোরিয়ার সিনেটর কুশেইলা ভ্যাগেলা, উইন্ডহ্যাম সিটির কাউন্সিলর হেথার মার্কাস, জেসমিন হিল ও সাহানা রামেশ। কাউন্সিলররা এই আয়োজনে সংহতি প্রকাশ করে আগামীতেও পাশে থাকার আশ্বস্ত করেন বলে জানান আয়োজক কমিটি।
এফআর