লন্ডন মেয়র নির্বাচনে আগাম জরিপে এগিয়ে সাদিক খান

বৈচিত্র্য আর বিভিন্নতার শহর হিসেবে ইউরোপে অনন্য যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডন, ধর্ম-বর্ণ-সংস্কৃতি যেখানে মিলেমিশে একাকার। লন্ডনে যারা থাকেন, লন্ডন তাদের। কখনও এমন প্রশ্ন আসবে না আপনি কোথা থেকে এসেছেন। সেজন্যই মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে অনেকেই জন্মগত ব্রিটিশ না হলেও লন্ডনের মেয়র হওয়ার দৌড়ে নাম লিখিয়েছেন।
এক বছর পিছিয়ে দেওয়ার পর দেখতে দেখতে লন্ডনের মেয়র নির্বাচনের দিন ঘনিয়ে আসছে। নির্বাচনের আর মাত্র এক সপ্তাহ বাকি। আগামী ৬ মে অনুষ্ঠিত হবে মেয়র নির্বাচন।
লেবারের বর্তমান মেয়র সাদিক খানের পদ ধরে রাখার চ্যালেঞ্জ। ২০১৬ সালের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির অনেক কিছু রক্ষা করতে পারেননি বলে সামাজিক মাধ্যমে অনেক ভোটার তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। এর মধ্যে প্রতিশ্রুতি দেওয়া কাউন্সিল ঘর বৃদ্ধি করতে না পারা, লন্ডন শহরের ট্যাক্সি/ড্রাইভিং আলাদা কনজেশন খরচ বৃদ্ধি. সঙ্গে লন্ডনে প্রচুর পরিমাণে নাইফ ক্রাইম বৃদ্ধি পাওয়াসহ নানা ক্ষোভ, অভিযোগ তার বিরুদ্ধে রয়েছে। যদিও নির্বাচনী আগাম জরিপ দিচ্ছে ভিন্ন বার্তা।
এবারের লন্ডন মেয়র নির্বাচনে প্রার্থীদের বড় চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে রয়েছে লন্ডনে বৃদ্ধি পাওয়া নাইফ ক্রাইম রোধ, হাউজিং, পরিবেশ, এবং করোনাভাইরাস পরবর্তী সময়ে চাকরি/কর্মসংস্থান বৃদ্ধি উল্লেখযোগ্য। তবে করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে অর্থনৈতিক চাপ মোকাবিলা এবং নতুন চাকরি সৃষ্টিই বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দেবে বলে অনেকের ধারণা। প্রার্থীরা তাই মানুষের চাহিদা আর দাবিগুলোকে সামনে রেখে তাদের নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছেন।
এবারের নির্বাচনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বী প্রধান চার দলের লেবারের বর্তমান মেয়র সাদিক খান, কনজারভেটিভ পার্টির শাউন বেইলি, লিবারেল ডেমোক্রেটের লুইসা পোরিট, গ্রিন পার্টির সেইন বেরী উল্লেখযোগ্য।

নির্বাচন পূর্ব জরিপে এগিয়ে আছেন বর্তমান মেয়র সাদিক খান। লন্ডনে লেবার পার্টি বরাবর শক্তিশালী হওয়ায় এবং অভিবাসী ভোটারদের সমর্থন সাদিক খান বেশি পাবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ভোট নিয়ে সাম্প্রতিক জনমত জরিপগুলোয় দেখা যাচ্ছে, ব্রিটিশ লেবার পার্টির প্রার্থী বর্তমান মেয়র সাদিক খান বিশাল ব্যবধানে এগিয়ে আছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ব্রিটিশ ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির শাউন বেইলি বড় ব্যবধানে পিছিয়ে আছেন। ভোট নিয়ে এই জরিপগুলো সাধারণত ভোটের দিনের ফলাফলের সঙ্গে মিলে যায়। জরিপে সাদিক খান ৫১ শতাংশ আর কনজারভেটিভ পার্টির শাউন বেইলি ২৫ শতাংশ, লিবারেল ডেমোক্রেটের লুইসা পোরিট ৮ শতাংশ ও গ্রিন পার্টির সেইন বেরী ৬ শতাংশ ভোট পেতে পারেন বলে উঠে এসেছে।
এক বছর আগে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে পিছিয়ে ২০২১ সালের ৬ মে নির্ধারণ করা হয়।
২০১৬ মেয়র নির্বাচনে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির প্রার্থী জ্যাক গোল্ডস্মিথকে ৯ শতাংশ ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে প্রথম মুসলিম হিসেবে লন্ডনের মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন বর্তমান বিরোধী দল লেবার পার্টির প্রার্থী সাদিক খান। পাকিস্তানি বংশদ্ভুত সাদিক কি এবারও পারবেন বৈচিত্র্যের শহর লন্ডনে ভিন্নতার মেয়র হয়ে ফিরতে?
এসএসএইচ