যান্ত্রিক জীবনে করোনার প্রভাব

জীবন চলমান তাই এর গতি অন্তিম সময় পর্যন্ত চলবে সুখে কিংবা দুঃখে। থামবে না শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত। উহান থেকে গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসে করোনা (কোভিড-১৯) এসে বিশ্ব যান্ত্রিক জীবনকে পুরোদমে থামিয়ে দিল। মানুষের সচল জীবন এখন অচলের পথে। দুর্ভিক্ষের দ্বার প্রান্তে বিশ্বময় মানবগোষ্ঠী।
শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীনের কথা সবার মনে আছে। ১৯৩৯ সালে দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের পরবর্তী সময়ে খাদ্য অভাব দেখা দেয়। তবে সেটা ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন একটা প্রেক্ষাপট। কিন্তু মানুষের অভাব-অনটনের ক্রান্তিকাল একই সুতোয় গাঁথা। ইতিহাস বলে, ১৩৫০ সালে পুরোপুরি খাদ্যের অভাব জনজীবনে এসে পড়ে, যা ইতিহাস হিসেবে মনে রেখেছে বাংলাদেশ।
২০১৯ সাল থেকে ধীরে ধীরে করোনার থাবা এমনভাবে পড়ছে, বিশ্বের অনেক মানুষ এখন খাদ্যাভাবে। এর অন্যতম কারণ, মানুষের কর্মস্থল দিন দিন বন্ধ হতে চলেছে। বেকারের সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে। বিভিন্ন দেশের সরকারপ্রধানরা নাগরিকদের সহায়তা দিতে হিমশিম খাচ্ছে। ইতালিতেও করোনার প্রাদুর্ভাব এমনভাবে পড়ছে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী জুসেপ্পে কোন্তি স্ব-ইচ্ছায় ক্ষমতা ছেড়ে দিতে বাধ্য হন।
করোনায় ঘরে ঘরে বেকারত্ব জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে। করোনায় ঘরে বসিয়ে সরকারের পক্ষে অভিবাসীসহ প্রায় আট কোটি মানুষকে খাদ্যসহায়তা দেওয়া অসম্ভব। তাই রাষ্ট্র পরিচালনা অনেক কঠিন হয়ে পড়েছে। তবু থেমে নেই ইতালির পথচলা।
এবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে রাষ্ট্রের হাল ধরেছেন মারিও দ্রাঘি। পেশায় একজন সফল ব্যাংকার। ২০১১ থেকে ২০১৯ সালে ইউরোপের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সভাপতি ও ব্যাংক ইতালির গভর্নর হিসেবে ২০০৬ থেকে ২০১১ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন তিনি। করোনার এই মহামারীতে তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করছেন। দেখার বিষয় বর্তমান সরকার জনগণের প্রত্যাশা পূরণে কতটুকু কাজ করবে। করোনায় জনগণের পাশে থেকে দেশকে এগিয়ে নিতে কী ভাবছে সরকার? এমন প্রশ্ন হয়তো সবার মনে ঘুরপাক খাচ্ছে। নিশ্চয় করোনা কাটিয়ে বিশ্ব আবার জেগে উঠবে। সেই সাথে ইতালি হাসবে, জেগে উঠবে নতুন করে।
এইচকে