কুয়েতে রমজানেও নিয়ন্ত্রণে থাকে নিত্যপণ্যের দাম

কুয়েতে রমজান আসার আগে থেকেই নিত্যপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন পণ্যে মূল্য ছাড়ের হিড়িক পড়ে বড় বড় সুপারশপ, চেইনশপগুলোতে। কে কত ছাড় দিয়ে ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে পারেন তা নিয়ে বিভিন্ন মার্কেটে রীতিমতো চলে প্রতিযোগিতা।
এ প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে নেই সেখানকার বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরাও। বিশেষ মূল্য ছাড়ের লিফলেট বিতরণ, সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার-প্রচারণা, পণ্যের সঙ্গে ফ্রি দেওয়া থেকে শুরু করে কিছু কিছু পণ্যে ৫০ শতাংশ ছাড় দিয়ে বিক্রি করতে দেখা যায় বড় বড় সুপারমার্কেট ও বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের। রোজা সামনে রেখে বেচাবিক্রি বেশি হওয়ায় খুশি ব্যবসায়ীরাও।
সুপারশপ ও দোকান ঘুরে দেখা যায়, চাল, ডাল, তেল, চিনি ও ফলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় যেসব পণ্যের চাহিদা রমজান মাসে বেশি থাকে সেগুলোতে রয়েছে বিশেষ ছাড়। বিভিন্ন মার্কেটের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরাও বিশেষ ছাড় দিচ্ছেন।
প্রবাসী বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা জানান, তাদের দোকান থেকে বিভিন্ন দেশের পণ্যের পাশাপাশি বাংলাদেশি পণ্যও কিনে থাকেন বিদেশি ক্রেতারা।
এদিকে রমজানে কেউ যাতে কোনো পণ্যের দাম বাড়াতে না পারে সেজন্য পণ্যের দাম ও মেয়াদ থাকা বাধ্যতামূলক করেছে কুয়েতি কর্তৃপক্ষ। সেটা তা খতিয়ে দেখতেও ভোক্তা অধিকার ও সরকারের একাধিক সংস্থার লোক নিয়মিত বাজার মনিটরিং করে থাকে। সংশ্লিষ্টরা অতিরিক্ত মূল্য কিংবা মানহীন পণ্য বিক্রয় হচ্ছে কি না সে বিষয়ে সার্বক্ষণিক তদারকি করছেন।
আরও পড়ুন
অসংগতি ধরা পড়লে আইন অমান্যকারীকে মোটা অঙ্কের জরিমানা করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। কোনো কোনো ক্ষেত্রে আইন অমান্য করলে প্রতিষ্ঠানও বন্ধ করে দেওয়া হয়।
কুয়েতে রমজান ছাড়াও ঈদ অথবা নববর্ষ, বিশেষ দিবস ও উপলক্ষ্য সামনে রেখে প্রায় সব মার্কেট, সুপারশপ, খাদ্য ও নিত্যপণ্যের দোকানগুলোতে দেওয়া হয় বিশেষ মূল্য ছাড়।
তাছাড়া রমজান উপলক্ষ্যে ব্যবসায়ীরা দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখতে নানা উদ্যোগ নেন। এতে রোজাদারের অতিরিক্ত অর্থকষ্ট লাঘবে দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করেন দেশটির ব্যবসায়ীরা।
অন্যদিকে, রমজানে নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে থাকায় ও বিশেষ ছাড়ের ব্যবস্থা থাকায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন দেশটিতে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) রমজানের বাজার করতে আসা আবু রাহাত বলেন, কুয়েতসহ মধ্যপ্রাচ্যে বাজার স্থিতিশীল থাকে, মূল্য বৃদ্ধি হয় না। বাংলাদেশে রমজান এলে দাম বেড়ে যায়। আমাদের কিন্তু বেতন বাড়ে না। রমজান এলে ভোগান্তিতে পড়তে হয় পরিবারের খরচ চালাতে। এ বিষয়ে সরকারের তদারকি প্রয়োজন।
কুয়েত সিটির বিডিফুড বাকালার ব্যবসায়ী আবুল কাসেম বলেন, আমাদের এখানে বাংলাদেশি সব ধরনের মাছ সবজি বিক্রি করি। এখানে ভোক্তা অধিকার নিয়মিত পরিদর্শনে আসে। চাইলেও কারো মূল্য বৃদ্ধি করার বা ভেজাল মাল বিক্রি করার সুযোগ নেই। রমজান মাসে কম দামে বিক্রি করি, বেচাবিক্রি বেশি হয়।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি করে বিক্রি করে। নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে সিন্ডিকেট ভাঙতে পারলে দেশেও জিনিসপত্রের দাম কমে আসবে।
এসএসএইচ