ইন্টারন্যাশনাল ভ্যাকসিন ইনস্টিটিউটের সদস্যপদ পেল বাংলাদেশ

আনুষ্ঠানিকভাবে ইন্টারন্যাশনাল ভ্যাকসিন ইনস্টিটিউটের (আইভিআই) সদস্যপদ পেয়েছে বাংলাদেশ। গত বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই) দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলে আইভিআইয়ের সদর দফতরে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ১৯তম দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে স্বাগত জানায় সংস্থাটি।
এছাড়া আইভিআইয়ের কলেরা ভ্যাকসিনের আভ্যন্তরীণ বিকাশ ও বিতরণসহ ২০ বছরের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশে অংশীদারদের সঙ্গে ভ্যাকসিন গবেষণা এবং সক্ষমতা বৃদ্ধির উদ্যোগ, বিশ্ব জনস্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জনকেও এই অনুষ্ঠানে স্মরণ করা হয়।
জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) উদ্যোগে ১৯৯৭ সালে অলাভজনক আন্তঃসরকারি সংস্থা আইভিআই প্রতিষ্ঠিত হয়। এতে ৩৬টি দেশ রয়েছে, এর মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়া, সুইডেন, ভারত ও ফিনল্যান্ড রাষ্ট্রীয় অর্থদাতা এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) মধ্যস্থতাকারী।
বাংলাদেশ ১৯৯৬ সালের ২৮ অক্টোবর আন্তর্জাতিক ভ্যাকসিন ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা চুক্তি স্বাক্ষর করে। চলতি বছরের ২১ মার্চ চুক্তিটি অনুসমর্থন করে এবং গত ৫ এপ্রিল জাতিসংঘ চুক্তির অনুসমর্থন প্রাপ্তির প্রজ্ঞাপন জারি করে। বাংলাদেশের পক্ষে চুক্তিটি গত ১ মে থেকে কার্যকর হয়।
অনুষ্ঠানের শুরুতে আইভিআইয়ের সদর দফতরে সদস্যপদের নিদর্শন হিসেবে বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আবিদা ইসলাম। এ সময় বাংলাদেশ ও দক্ষিণ কোরিয়ার জাতীয় সংগীত বাজানো হয়।
অনুষ্ঠানে ভিডিও বার্তায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক, বাংলাদেশ ও আইভিআইয়ের মধ্যকার সহযোগিতামূলক কর্মকাণ্ড বিশেষত কলেরা, সিগেলা, অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল জাতীয় রোগ প্রতিরোধের ক্ষেত্রে সক্ষমতা বৃদ্ধি ও সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, এ সহযোগিতার মাধ্যমে বাংলাদেশ ভাইরাসজনিত সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ করতে এবং বৈশ্বিক বাজারের জন্য স্থানীয়ভাবে বাংলাদেশেই ভ্যাকসিন তৈরি করতে সক্ষম হবে।
ভিডিও বার্তায় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম সদস্য দেশ হিসেবে নতুন ভূমিকা আগামীতে বাংলাদেশ ও আইভিআইয়ের মধ্যে সহযোগিতার সম্পর্ককে আরও বিস্তৃত ও সুদৃঢ় করবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন আইভিআইয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান জর্জ বাইকারস্টাফ। আইভিআইয়ের মহাপরিচালক ডক্টর জেরোম কিম বিশ্ব জনস্বাস্থ্যের জন্য নিরাপদ, কার্যকর ও সাশ্রয়ী মূল্যের ভ্যাকসিন আবিষ্কার, বিকাশ ও বিতরণে আইভিআইয়ের কার্যক্রম, চলমান প্রকল্প এবং বাংলাদেশের সঙ্গে আইভিআইয়ের সম্পর্ক তুলে ধরে একটি তথ্যমূলক উপস্থাপনা প্রদান করেন।
দক্ষিণ কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আন্তর্জাতিক সংস্থার মহাপরিচালক চাংগ উক জিন তার বক্তব্যে সংক্রামক ব্যাধিমুক্ত বিশ্ব গঠন-বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সদস্য দেশ হিসেবে যোগদানের জন্য বাংলাদেশকে স্বাগত জানান।
আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশের (আইসিডিডিআর'বি) নির্বাহী পরিচালক ড. তাহমিদ আহমেদ কলেরা ভ্যাকসিনসহ নানা ধরনের ভ্যাকসিন তৈরির ক্ষেত্রে আইভিআই, আইসিডিডিআর’বি বাংলাদেশের ওষুধ উৎপাদকদের মধ্যে সহযোগিতামূলক কর্মসূচির কথা তুলে ধরেন।
তিনি আশা করেন, এমন সহযোগিতার সম্পর্ক ভবিষ্যতে করোনার ভ্যাকসিনসহ অন্যান্য রোগের ভ্যাকসিন তৈরিতে এবং ভাইরাসজনিত মহামারি প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
রাষ্ট্রদূত আবিদা ইসলাম বলেন, আইডিআইয়ের সদস্য হিসেবে রোগমুক্ত বিশ্ব নিশ্চিতকরণে আইভিআইয়ের কর্মসূচিকে পূর্ণ সমর্থন দিতে বাংলাদেশ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
ইনসেপ্টা ভ্যাকসিন লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল মুক্তাদির বলেন, আইভিআই ও আইসিডিডিআরবি'র সার্বিক সহযোগিতায় বাংলাদেশে কলেরাসহ অন্যান্য রোগের ভ্যাকসিন তৈরিতে ইনসেপ্টার সক্ষমতা বৃদ্ধি ও স্বাস্থ্যকর্মীদের পেশাগত দক্ষতা উন্নয়ন হয়েছে।
এসকেডি