কোরিয়া ভিসা নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ায় খুশি বাংলাদেশি প্রবাসীরা

বাংলাদেশের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া। সোমবার (৮ ফেব্রুয়ারি) থেকে শিক্ষার্থীসহ বাংলাদেশিরা এমপ্লয়মেন্ট পারমিট সিস্টেমে (ইপিএস) ভিসার জন্য দেশটিতে আবেদন করতে পারবেন। এতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা ও দেশটিতে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত আবিদা ইসলামের প্রশংসা করেন কোরিয়া প্রবাসীরা।
ঢাকায় অবস্থিত দক্ষিণ কোরিয়া দূতাবাস সোমবার এক কূটনৈতিক পত্রের মাধ্যমে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে এই বিষয়ে অবহিত করে। এর ফলে ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে পুনরায় প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে কোরিয়া গমনেচ্ছু বাংলাদেশি নাগরিকরা ঢাকার দক্ষিণ কোরিয়ার দূতাবাসের মাধ্যমে ভিসার আবেদন করতে পারবেন। এমনটি নিশ্চিত করেছে, বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ফেসবুক পেজে।
আরও জানানো হয়, ইতোপূর্বে বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারি ছড়িয়ে পড়ায় দক্ষিণ কোরিয়া সরকার বাংলাদেশসহ কতিপয় দেশের নাগরিকদের সেদেশে প্রবেশের ওপর সাময়িক নিষেধাজ্ঞা জারি করে। এতে করে কোরিয়া গমনেচ্ছু বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশি ছাত্রছাত্রী, কর্মীর শিক্ষা ও কর্মজীবন হুমকির মুখে পড়ে।
এমতাবস্থায়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও সিউলের বাংলাদেশ দূতাবাস শুরু থেকেই এই ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়ে দক্ষিণ কোরিয়া সরকারের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন ব্যক্তিগতভাবে দক্ষিণ কোরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে টেলিফোনে আলাপকালে বাংলাদেশি নাগরিকদের ওপর আরোপিত এ ভিসা নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার জন্য বিশেষ অনুরোধ জানান।
পররাষ্ট্র সচিব জনাব মাসুদ বিন মোমেন একাধিকবার ঢাকায় নিযুক্ত দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত লি জেন কিউন-এর সঙ্গে বৈঠক করে বিষয়টি সমাধানের তাগিদ দেন। পাশাপাশি, দক্ষিণ কোরিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আবিদা ইসলাম সে দেশের যথাযথ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ করে ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
সর্বোপরি, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পূর্ব এশিয়া ও প্রশান্ত অণুবিভাগ এই ভিসা নিষেধাজ্ঞা চলমান সময়ে একদিকে কোরিয়া গমনেচ্ছু বিপুল সংখ্যক উদ্বিগ্ন বাংলাদেশি ছাত্রছাত্রী ও কর্মীদের সঙ্গে এবং অন্যদিকে সিউলের বাংলাদেশ দূতাবাস ও ঢাকার দক্ষিণ কোরিয়া দূতাবাসের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগের মাধ্যমে ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের প্রক্রিয়াটি ত্বরান্বিত করতে প্রভাবকের ভূমিকা পালন করে।
এদিকে দক্ষিণ কোরিয়ার বসবাসরত কয়েকজন প্রবাসীরা এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে তাদের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। এ বিষয়ে বিএসকের সভাপতি শাহ আলম জানান, কোভিড ১৯ এর কারণে কোরিয়ার সরকার বাংলাদেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। এতে দেশে আটকে পড়েন প্রবাসীরা। আটকে পড়াদের ফেরাতে কোরিয়ার সরকারের প্রতিটি সংস্থা সম্মিলিতভাবে কাজ করেছে, পাশাপাশি দক্ষিণ কোরিয়া নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আবিদা ইসলাম নিরন্তর কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন।
বাংলাদেশ কমিউনিটির সাবেক সভাপতি হাবিল উদ্দীন বলেন, রাষ্ট্রদূত আবিদা ইসলাম কোরিয়ার সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে। কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে নিয়ামক ভূমিকা রেখেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাংলাদেশে আটকে পড়া এক প্রবাসী বাংলাদেশ সরকার ও রাষ্ট্রদূত আবিদা ইসলামের প্রচেষ্টার কথা উল্লেখ করেন। পরক্ষণে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আজকে যেন আটকে পড়াদের ঈদের দিন।
তিনি আরও জানান, যখনই রাষ্ট্রদূতকে ইমেইল করতেন। তখনই তিনি আশ্বস্ত করে মেইলের উত্তর দিতেন ও কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার কথা জানাতেন। কোরিয়া প্রবাসীদের জন্য যেন ঈদের সংবাদ।
এফআর