জনসাধারণের প্রতি ওমর বিন আব্দুল আজিজ রহ.-এর মমতা

ইসলামের সোনালী যুগের শাসকদের একজন হজরত ওমর ইবনে আব্দুল আজিজ রহমাতুল্লাহি আলাইহি। তাঁর মাতা ছিলেন ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হজরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু’র পৌত্রী। তিনি প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওফাতের ৫০ বছর পর ৬১ হিজরিতে জন্ম গ্রহণ করেন। তাঁর রাজত্বের সময়কালে অসংখ্য সাহাবা ও তাবেঈ জীবিত ছিল।
শাসক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আগে তিনি বিত্তশালীদের ন্যায় শান-শওকত পূর্ণ জীবন-যাপন করতেন। কিন্তু ৩৭ বছর বয়সে শাসনভার গ্রহণের পর তার জীবনধারা পাল্টে যায়। বিন্দুমাত্র দ্বিধা না করেই তিনি সাদাসিধে জীবনযাপন বেছে নেন।
তার শাসনকালের একটি ঘটনা- হজরত রিয়াহ বিন উবাইদা আল-বাহিলি রাহিমাহুল্লাহু তায়ালা বলেন, আমি হজরত ওমর বিন আব্দুল আজীজ রাহিমাহুল্লাহু তায়ালার কাছে বসা ছিলাম। এমন সময় গ্রাম্য একলোক এসে বললো, হে আমিরুল মুমিনীন! আমার পরিবারে অভাব, অনেক প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। আমার কাছে যা ছিলো সব শেষ। আমার পরিবার এখন চলছে না। সুতরাং কেয়ামতের দিন আমি আপনার প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়াবো।

হজরত ওমর বিন আব্দুল আজীজ রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওই লোকের কথা শুনে বললেন, হায়! তুমি বলো কী?
আচ্ছা! তুমি যা বলেছো তা আবার বলো। একই কথা লোকটি আবার বললো। তখন তিনি মাথা নিচু করে ফেলেন। কান্না শুরু করেন। চোখের পানি মাটি ভিজিয়ে ফেললো। তারপর তিনি মাথা উঠিয়ে বললেন, আচ্ছা বলো তোমার পরিবারের লোক সংখ্যা কতো? উত্তরে লোকটি বললো, আমি এবং আমার তিন মেয়ে।

তখন হজরত উমর বিন আব্দুল আজীজ রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিন মেয়ের জন্য তিন শত দেরহাম এবং তার জন্য তিন শত দেরহাম বায়তুল মাল থেকে বরাদ্দ করে দেন। এবং তাকে একশত দেরহাম নগদ প্রদান করে বলেন, এই একশত দেরহাম আমার নিজের সম্পদ থেকে তোমাকে দিয়েছি। মুসলমানদের সম্পদ থেকে দিইনি। তুমি এগুলো খরচ করো। যখন অন্যান্য মুসলমানদের বরাদ্দ আসবে তখন তুমি তোমার বরাদ্দ গ্রহণ করার জন্য এসো।
সূত্র: আর-রিক্কাতু ওয়াল বুকা