সহকর্মীর সঙ্গে যেমন আচরণ করতে বলে ইসলাম

যেসব মানুষের সঙ্গে আমাদের একসঙ্গে দীর্ঘ সময় কাটাতে হয় তাদের অন্যতম হলেন আমাদের অফিস কলিগ বা সহকর্মী। দীর্ঘ সময় অফিস সহকর্মীদের সঙ্গে কাটাতে গিয়ে সম্পর্কে কোনও ধরনের তিক্ততা যেন না আসে এদিকে খেয়াল রাখা উচিত সবারই। এবং এক্ষেত্রে ধর্মীয় দিক-নির্দেশনার প্রতি বিশেষভাবে দৃষ্টিপাত করা যেতে পারে।
সবাই সমান
ইসলাম সহকর্মী হিসেবে মুসলিম, অমুসলিম, পরিচিত, অপরিচিত, আত্মীয়, অনাত্মীয় সবার সঙ্গে সদ্ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছে এবং সবাইকে সমানভাবে দেখার নির্দেশ দিয়েছে। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে বলেছেন, ‘আল্লাহ সবার সঙ্গে ন্যায় ও সদ্ব্যবহারের নির্দেশ দিচ্ছেন এবং নির্দেশ দিচ্ছেন আত্মীয়-স্বজনের হক আদায়ের জন্য।’ (সুরা নাহল : ৯০)।
হাসিমুখে কথা বলা
ইসলাম শুরু থেকেই মানুষের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার নির্দেশ দিয়েছে। এজন্য ইসলাম পারস্পরিক সাক্ষাতে হাসিমুখে কথা বলার নির্দেশ দিয়েছে। আবু জর (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘হাস্যোজ্জ্বল মুখ নিয়ে তোমার ভাইয়ের সামনে উপস্থিত হওয়া তোমার জন্য সদকাস্বরূপ।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ১৯৫৬)
দূরত্ব নয়
ব্যক্তিগত পছন্দ ও অপছন্দের ভিত্তিতে নৈকট্য ও দূরত্ব কখনো কখনো মানুষের জন্য বিপদের কারণ হয়। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, ‘নিজের বন্ধুর সঙ্গে ভালোবাসার আধিক্য প্রদর্শন করবে না। হয়ত সে একদিন তোমার শত্রু হয়ে যাবে। তোমার শত্রুর সাথেও শত্রুতার চরম সীমা প্রদর্শন করবে না। হয়ত সে একদিন তোমার বন্ধু হয়ে যাবে।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ১৯৯৭)
এজন্য কর্মক্ষেত্রে কোনো সহকর্মীকে যৌক্তিক কারণ ছাড়া অগ্রাধিকার না দেওয়াই উত্তম। এবং কারও সঙ্গে অপ্রয়োজনে দুঃসম্পর্ক বা শত্রুতায় জরানোও উচিত হবে না।
কাজে-আচরণে কষ্ট না দেওয়া
এছাড়াও অফিসে একসঙ্গে কাজ করার সময় অবশ্যই মনে রাখতে হবে যেন আপনার কথা বা কাজে কেউ কোনও ধরনের কষ্ট না পায়। এবং কথার ফাঁকে এমন কিছু বলা যাবে না, যাতে করে কেউ মর্মাহত হয়। এমন কোনও আচরণও করা যাবে না, যাতে অন্যদের কষ্ট হয়।
যেমন সিগারেট খেয়ে কারও দিকে ধোঁয়া ছাড়া বা পান খেয়ে অন্যের দিকে পিক ফেলা। অথবা এমনভাবে জায়গা নিয়ে বসা যাবে না, যাতে করে অন্যের বসার জায়গা পেতে সমস্যা হয় বা তার বসার জায়গা সংকুচিত হয়ে যায়। (তাফসিরে মাআরিফুল কোরআন, ২য় খণ্ড, ৩৭৩)
এনটি