হতাশ না হতে বলা হয়েছে কোরআনের যেসব আয়াতে
জীবনের কঠিন সমীকরণ, পাপের বোঝা, গুনাহ থেকে তওবার অনুভূতি- বিভিন্ন কারণে মানুষ হতাশ হয়ে পড়ে। হতাশা অনেক সময় অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি তৈরি করে। কোরআন ও হাদিসে যেকোনো মুহুর্তে ও যেকোনো পরিস্থিতিতে হতাশ না হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এক হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, মক্কার কিছু মানুষ প্রচুর হত্যা ও ব্যভিচারে লিপ্ত থাকতো। তারা নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে উপস্থিত হয়ে বলল যে, আপনার দাওয়াত তো সঠিক, কিন্তু আমরা অনেক পাপের পাপী। যদি আমরা ঈমান আনি, তবে এই সমস্ত গুনাহ মাফ হয়ে যাবে কি?
তাদের এই প্রশ্নের ভিত্তিতে কোরআনে একটি আয়াত নাজিল করে আল্লাহ তায়ালা বলেন,
قُلۡ یٰعِبَادِیَ الَّذِیۡنَ اَسۡرَفُوۡا عَلٰۤی اَنۡفُسِهِمۡ لَا تَقۡنَطُوۡا مِنۡ رَّحۡمَۃِ اللّٰهِ ؕ اِنَّ اللّٰهَ یَغۡفِرُ الذُّنُوۡبَ جَمِیۡعًا ؕ اِنَّهٗ هُوَ الۡغَفُوۡرُ الرَّحِیۡمُ
বলুন, হে আমার বান্দাগণ! তোমরা যারা নিজেদের প্রতি অবিচার করেছ; আল্লাহ্র অনুগ্রহ থেকে হতাশ হয়ো না, নিশ্চয় আল্লাহ সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করে দেবেন। নিশ্চয় তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (সূরা যুমার, (৩৯), আয়াত, ৫৩)
আরও পড়ুন
এছাড়াও কোরআনের বিভিন্ন আয়াতে হতাশ না হওয়ার কথা বলা হয়েছে। এখানে এমন কিছু আয়াত তুলে ধরা হলো যেখানে হতাশ না হয়ে আল্লাহর রহমতের আশা করতে বলা হয়েছে।
আল্লাহ তায়ালা বলেছেন,
وَ لَا تَایۡـَٔسُوۡا مِنۡ رَّوۡحِ اللّٰهِ ؕ اِنَّهٗ لَا یَایۡـَٔسُ مِنۡ رَّوۡحِ اللّٰهِ اِلَّا الۡقَوۡمُ الۡکٰفِرُوۡنَ ﴿۸۷
আর তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না, কেননা কাফির কওম ছাড়া কেউই আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয় না’। (সূরা ইউসুফ, (১২), আয়াত,৮৭)
আরও বর্ণিত হয়েছে,
قَالَ وَ مَنۡ یَّقۡنَطُ مِنۡ رَّحۡمَۃِ رَبِّهٖۤ اِلَّا الضَّآلُّوۡنَ
সে বলল, ‘পথভ্রষ্টরা ছাড়া, কে তার রবের রহমত থেকে নিরাশ হয়’ ? (সূরা হিজর, (১৫), আয়াত, ৫৬)
আল্লাহ তায়ালা আরও বলেন,
اِنَّ رَحۡمَتَ اللّٰهِ قَرِیۡبٌ مِّنَ الۡمُحۡسِنِیۡنَ
অবশ্যই আল্লাহর রহমত সংকর্মশীলদের নিকটবর্তী। (সূরা আল আরাফ, (৭), আয়াত, ৫৬)
অপর আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন,
اَللّٰهُ لَطِیۡفٌۢ بِعِبَادِهٖ یَرۡزُقُ مَنۡ یَّشَآءُ ۚ وَ هُوَ الۡقَوِیُّ الۡعَزِیۡزُ
আল্লাহ্ তার বান্দাদের প্রতি অত্যন্ত কোমল; তিনি যাকে ইচ্ছে রিযিক দান করেন।আর তিনি সর্বশক্তিমান, প্ৰবল পরাক্রমশালী। (সূরা আশ শূরা, (৪২), আয়াত, ১৯)
আরও বর্ণিত হয়েছে,
قَالَ عَذَابِیۡۤ اُصِیۡبُ بِهٖ مَنۡ اَشَآءُ ۚ وَ رَحۡمَتِیۡ وَسِعَتۡ کُلَّ شَیۡءٍ ؕ فَسَاَکۡتُبُهَا لِلَّذِیۡنَ یَتَّقُوۡنَ وَ یُؤۡتُوۡنَ الزَّکٰوۃَ وَ الَّذِیۡنَ هُمۡ بِاٰیٰتِنَا یُؤۡمِنُوۡنَ
তিনি বললেন, ‘আমি যাকে চাই তাকে আমার আজাব দেই। আর আমার রহমত সব বস্তুকে পরিব্যাপ্ত করেছে। সুতরাং আমি তা লিখে দেব তাদের জন্য যারা তাকওয়া অবলম্বন করে এবং জাকাত প্রদান করে। আর যারা আমার আয়াতসমূহের প্রতি ঈমান আনে। (সূরা আল আ'রাফ, (৭), আয়াত, ১৫৬)
এনটি